শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রতিযোগী সায়ন্তনী দে (বাঁদিকে) , শব্দ জব্দের খেলার উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত পড়ুয়ারা (ডানদিকে)। নিজস্ব চিত্র।
উপন্যাস জগতের কিংবদন্তী শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি দেখা করার সুযোগটা ঠিক যেন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। যে স্বপ্ন বাস্তব হল আনন্দবাজার অনলাইন আয়োজিত ‘শব্দ জব্দ ২০২৩’-এ অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলাম বলে। শতাধিক স্কুলের মধ্যে সেরার সেরা হওয়ার লড়াইয়ে নিজের সবটুকু দিতে প্রস্তুত ছিলাম।
তবে এই খেলায় আমি একা ছিলাম না। আমার সঙ্গে আমার স্কুল কামরাবাদ গার্লস হাইস্কুলের প্রতিনিধি হিসাবে আরও দুই সহপাঠীও প্রতিযোগিতায় যোগদান করেছিল। প্রথম পর্যায়ের খেলায় ১৫০টি দল অংশগ্রহণ করেছিল। তাতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর আমাদের লক্ষ্য ছিল দ্বিতীয় পর্ব। তাই প্রথম পর্ব উতরাতে আমাদের বেশি বেগ পেতে হয়নি।
দ্বিতীয় পর্বের খেলায় প্রায় ১৫০টি দলের মধ্যে থেকে ৫০টি দল সুযোগ পেয়েছিল। এই পর্বের খেলাগুলি তুলনামুলক ভাবে কঠিন। তাই শেষ পর্যন্ত আমরা পৌঁছতে পারব কি না, সেটা নিয়ে সত্যি বলতে একটু হলেও চিন্তা হচ্ছিল। তার উপর আমাদের প্রতিদ্বন্দী দলের আত্মবিশ্বাস দেখে আমরা আরও হতাশ হয়ে পড়েছিলাম।
কিন্তু সেই হতাশার মেঘ কেটে গেল সঞ্চালকের ঘোষণায়। তিনি যখন অন্তিম পর্যায়ের প্রতিযোগী হিসাবে আমাদের স্কুল, কামরাবাদ গার্লস হাইস্কুলের নামটি বললেন, তখন আমরা রীতিমতো উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছিলাম। এতটাই চিৎকার করে ফেলেছিলাম যে সঞ্চালকও হেসে ফেলেছিলেন।
ছবি তোলার পর্ব মিটিয়ে হাসি-মজা শেষ হওয়ার পর অন্তিম পর্যায়ের খেলায় মনোযোগ দিতে শুরু করি। নিজেদের সবটুকু দিয়ে আমরা সবাই জেতার চেষ্টা করেছিলাম। তবে প্রথম হওয়ার সুযোগটা হাতছাড়া হলেও দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিতে পেরেছি। সঞ্চালক আমাদের নাম ঘোষণা করলেন। শোনার পর মনে হল, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১৫০টি স্কুলের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছি, এটা কম বড় প্রাপ্তি নয়।
পুরস্কার হাতে কামরাবাদ গার্লস হাইস্কুলের তিন প্রতিযোগী। নিজস্ব চিত্র।
এই প্রতিযোগিতার সূত্রেই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। তাঁর সাক্ষাৎ পাওয়া যেন সোনার চাঁদ হাতে পাওয়ার সমান। শুধু কথা বলাই নয়, তাঁর সই করা বই পুরস্কার হিসাবে হাতে পেয়েছি, এ আমার সৌভাগ্য।
'শব্দ জব্দ ২০২৩'-এর প্রতিটি খেলা আকর্ষণীয় তো ছিলই। তার উপর আমাদের শব্দের ভাণ্ডার বৃদ্ধি করতেও এই খেলা বিশেষ ভাবে সাহায্য করেছে। এমন বড় অনুষ্ঠানের অংশীদার হতে পেরে ভীষণ আনন্দ তো হয়েছেই, গর্বও বোধ করি। এ রকম অনুষ্ঠানে আবারও অংশগ্রহণ করতে চাই আমি। এ রকম ভাবে আরও এক বার খেলার ইচ্ছে রইল।