প্রতীকী চিত্র
একজনের অঙ্গদানে বাঁচতে পারে একাধিক জীবন। সেই কারণেই দেশজুড়ে চলছে নানা প্রচার। প্রতি বছর ১৩ অগস্ট ঘটা করে ‘বিশ্ব অঙ্গদান দিবস’ পালিত হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের মধ্যে অঙ্গদান সম্পর্কে সচেতনতার বেশ অভাব রয়েছে এখনও। এর মূল কারণ হল, বহু মানুষের মধ্যে অঙ্গদান সম্পর্কে সব ধারণা পরিষ্কার নয়।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যাবে, প্রথম ১৯৫৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হয়েছিল। তবে, সে যুগে কিছু অঙ্গ প্রতিস্থাপন সফল হলেও বেশিটাই ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করা হয়। যদিও বর্তমান সময়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপন যে সম্পূর্ণ নিরাপদ তার প্রমাণ আমরা বহুবার পেয়েছি। তবে ইচ্ ছেমতো অঙ্গ দান করা সম্ভব নয়, তার জন্যেও নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে।
অঙ্গদানে পূর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ‘রেজিস্ট্রেশন’ করা। ‘ডোনার রেজিস্ট্রি’ হচ্ছে এমন একটি তথ্যভাণ্ডার যেখানে অঙ্গদানে উত্সাহী ব্যক্তিদের নাম নথিভুক্ত থাকে। কোনও হাসপাতালে ‘ব্রেন ডেড’ ব্যক্তি থাকলে, সেই রেজিস্ট্রি দেখে চিকিত্সকরা সহজেই স্থির করতে পারেন, ওই ব্যক্তি অঙ্গদান করতে ইচ্ছুক ছিলেন কি না! রেজিস্ট্রিতে রোগীর নাম নথিভুক্ত থাকলে হাসপাতাল তত্ক্ষণাত্ পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন। আমেরিকা এবং কানাডার মতো উন্নত দেশে এই ধরনের ‘ডোনার রেজিস্ট্রি’ অনেক বছর ধরে রয়েছে।
আমাদের দেশেও এমন দু’টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কোনও যদি মরণোত্তর অঙ্গদান করতে চান, তা হলে তাঁকে নোটো (NOTTO) নামে এক জাতীয় প্রতিষ্ঠানে নিজের নাম নথিভূক্ত করাতে হবে। শুধু তাই নয়, আমাদের রাজ্যেও এমন একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার নাম রটো (ROTTO)। এই প্রতিষ্ঠানের আবেদনের ভিত্তিতেই ঠিক হয় অঙ্গ প্রতিস্থাপনের তালিকায় কে আগে থাকবেন। যিনি প্রথমে আবেদন করবেন, সর্বোপরি তিনিই এই সুবিধা সবার আগে পাবেন।
অঙ্গদানের প্রক্রিয়া-
প্রথমে একজন অঙ্গদাতা স্বেচ্ছায় তাঁর অঙ্গদান করার অঙ্গীকার করতে পারেন। মৃত্যুর পরেই তাঁর অঙ্গীকার করা অঙ্গটি সংগ্রহ করে তা অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
একজন মানুষের অঙ্গদান থেকে সাত থেকে আটজনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। স্ট্রোকের কারণে যে রোগীর মৃত্যু হয় তাঁর দু’টি কিডনি, একটি লিভার, হৃদ্পিণ্ড, দু’টি কর্নিয়া এবং ত্বক— এতগুলো অঙ্গ পাওয়া যেতে পারে। লিভার, কিডনি, হার্ট, কর্নিয়া ইত্যাদি প্রতিস্থাপন করলে একাধিক মানুষ নতুন করে জীবন ফিরে পান। জীবিত মানুষ নিজের দু’টি কিডনির একটি এবং লিভারের কিছুটা অংশ দান করতে পারেন। যদিও এই ক্ষেত্রে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। অন্য দিকে, মৃত মানুষের শরীর থেকে সব ক’টি অঙ্গই প্রতিস্থাপনের জন্য সংগ্রহ করা যায়। সুস্থ, সবল থাকলে যে কোনও ব্যক্তি যে কোনও বয়সেই অঙ্গদান করতে পারেন।
অন্যকে নতুন জীবন দিন। এগিয়ে আসুন এবং অঙ্গীকার করুন অঙ্গদানের। ক্লিক করুন পাশের লিঙ্কে — bit.ly/47a6kLV