রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত
এমনিতে সোহিনী সেনগুপ্ত বিতর্ক এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করেন। কিন্তু আজ তিনি খুব ক্ষিপ্ত। সোহিনীর নাটকের নাম ‘বিপন্নতা’। আর এই নাট্যজগতের বিপন্নতা নিয়ে এই প্রথম বার মুখ খুলছেন তিনি। বলছেন, “অনেকেই কিন্তু বিপদে পড়লে রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত নামক সিনিয়রের কাছে দৌড়ে আসে। এবং যদি তিনি তাদের মত অনুযায়ী কথা না-বলেন, তা হলে তাঁকে গালাগালি দিতে এক মুহূর্তও ভাবে না। বাবাকে গালাগালি দেওয়াটা প্রচারের অস্ত্র। বাবা একটা পাঞ্চিং ব্যাগ হয়ে যাচ্ছেন। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।”
সোহিনী পরিচালিত নাটকের বিষয় হল সমাজের সন্ত্রাস কী ভাবে একজন মানুষকে বিপন্ন করে। একাডেমির সামনে রয়েছে সে নাটকের বিজ্ঞাপন। আর ঠিক পাশে রাখা বিতর্কিত ইস্তাহারের হোর্ডিং। কিন্তু তিনি না কি তাঁর বাবার সই করা ইস্তাহারটা দেখেননি! যার প্রতিবাদ করেছেন সুমন মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেন এবং বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়। “আমি দেখতে চাইনি বলেই দেখিনি। আমি সব্বার সঙ্গেই সম্পর্ক রাখব। তাতে কারও খারাপ লাগলে লাগবে,” বলছেন সোহিনী।
সোহিনী সেনগুপ্ত
তবে নাট্যজগতে যে আমরা-ওরা হয়ে গেল, তা নিয়ে বলছেন, “এখানে সব্বার ইগো বড়বড় করে কাজ করছে। দু’তরফের ইগোই কাজ করছে। এতে আসলে থিয়েটারেরই ক্ষতি হচ্ছে। ইয়াং জেনারেশন এখন বিভ্রান্ত। কাকে ভাল বললে কে রেগে যাবে তা ভেবে তারা চিন্তিত।”
নাটককে পেজ-থ্রি ইভেন্ট তৈরি করাতেও তাঁর আপত্তি রয়েছে। “মনে করি না সেটা করে থিয়েটারের মান বাড়ানো যায়। কিছু গুণী মানুষ নাটক দেখলে ভাল লাগে। যেমন শঙ্খ ঘোষ। কিন্তু অমুক আমার নাটক দেখলেন সে নিয়ে প্রচার করাতে আমার আপত্তি আছে। আমি নাটক পরিচালনা করছি। দেবতোষ দাসের লেখা। মা অভিনয় করছেন। আমিও একটা ছোট রোল করছি। ভাল কাজ হলে দর্শক এমনিতেই হবে। তার জন্য নাটক নিয়ে পেজ-থ্রি ইভেন্ট করতে হবে না।”
নিজের নাটকের নামের সঙ্গে কোথাও নাট্যজগতের একটা মিল খুঁজে পাচ্ছেন কি তিনি? “না। আমার নাটকের ব্যাপ্তি অনেক বেশি। তবে এটুকু বলব যে, আজ যে ভাষায় বাবার সম্পর্কে কথা বলা হচ্ছে, তা থেকে নতুন প্রজন্ম কী শিখছে? নিজের বাবা বলে বলছি না। এক বর্ষীয়ান থিয়েটার কর্মীর সম্বন্ধে এ ভাষায় কথা বলা হচ্ছে! কেন আমরা ভুলে যাচ্ছি যে আমাদের যখন বয়স হবে, তখন এই সব দেখে পরবর্তী প্রজন্ম আমাদেরও আরও খারাপ ভাষায় গালমন্দ করবে?”