অবসর সময়ে মাটন রাঁধতে ভালবাসি

অনূর্ধ্ব ৩০-এর হট বলিউড নায়কদের তালিকায় তিনি প্রথম সারিতে। আবার কর্ণ জোহরের চোখের মণি হিসেবেও পরিচিত সিদ্ধার্থ মলহোত্র। তাঁর মুখোমুখি প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।শাহরুখ, হৃতিক, রণবীর পরবর্তী ব্যাচের যে নায়কদের নিয়ে বলিউডে সব থেকে বেশি চর্চা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় নাম সিদ্ধার্থ মলহোত্র। বয়স ২৯। কেরিয়ার শুরু ‘মাই নেম ইজ খান’য়ে কর্ণ জোহরের সহকারী হিসেবে। নায়কের ভূমিকায় অভিষেক হয়েছিল কর্ণ জোহর পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’এ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৪ ০০:০০
Share:

শাহরুখ, হৃতিক, রণবীর পরবর্তী ব্যাচের যে নায়কদের নিয়ে বলিউডে সব থেকে বেশি চর্চা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় নাম সিদ্ধার্থ মলহোত্র। বয়স ২৯। কেরিয়ার শুরু ‘মাই নেম ইজ খান’য়ে কর্ণ জোহরের সহকারী হিসেবে। নায়কের ভূমিকায় অভিষেক হয়েছিল কর্ণ জোহর পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার’এ। পরের ছবি পরিণীতি চোপড়ার সঙ্গে ‘হসি তো ফসি’। আপাতত তিনটে প্রজেক্ট হাতে। ‘আশিকি ২’-এর পরিচালক মোহিত সুরির ‘এক ভিলেন’ মুক্তি পাচ্ছে এই শুক্রবার। জুলাই মাসে সিদ্ধার্থ শ্যুটিং শুরু করবেন আমেরিকান স্পোর্টস ড্রামা ‘ওয়ারিয়র’-এর হিন্দি রিমেকের। মিক্সড মার্শাল আর্টস নিয়ে ছবি, যেখানে সিদ্ধার্থ থাকছেন এক বক্সারের চরিত্রে। ছবিতে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করবেন অক্ষয়কুমারও। এর পর করবেন ‘লুটেরা’ খ্যাত বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের ‘ভবেশ জোশী’। যেখানে সিদ্ধার্থকে দেখা যাবে সুপারহিরোর ভূমিকায়।

Advertisement

সিদ্ধার্থর পেশাদার জীবন নিয়ে যত আলোচনা হয়, তার থেকে হয়তো কিঞ্চিৎ কম আলোচিত হয় তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। ইতিমধ্যে তিনটে লিঙ্ক-আপের খবর ছড়িয়েছে। শেষ লিঙ্ক-আপটা ছিল ব্রাজিলিয়ান মডেল ইজাবেলা লিটে (এক সময় যাঁর সঙ্গে বিরাট কোহলির নাম জড়িয়েও অনেক গুজব ছড়িয়েছিল)। তবে হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটে বসে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি হেসে বলেন, “আমাদের মধ্যে হেলদি বন্ধুত্ব রয়েছে। আমার স্যানিটির জন্য ওটা খুব প্রয়োজনীয়”!

Advertisement

আপনার সিনেমার কথা অনেকের জানা। আপনার সম্পর্কে তিনটে জিনিস বলুন যা কেউ জানে না...

আমি আসলে হেল্থ ফ্রিক। খেতে ভাল হেলদি খাবার আমার পছন্দ। কুকারি ক্লাসেস করেছি। আমার এক বন্ধু শেফ। ও আমার বাড়িতে আসত, আর আমাকে মাংস রান্না শেখাত। গ্রিলিং ক্লাস নিতাম। ভাল রেড মিট রাঁধতে শেখার চেষ্টাও করেছি। মাটন রান্না করতে ভালবাসি। স্টেক বানাতেও।

এখনও দু’টো বাকি...

আমার বাড়িতে একটা ফিশ বোল আছে। সেখানে আমি কয়েন কালেক্ট করে রাখি। যে দেশে যাই, সেখানকার কয়েন কালেক্ট করে আনি। ও-ই পকেটে যে ক’টা চেঞ্জ পড়ে থাকে, সেগুলো কালেক্ট করি। বাড়ি ফিরে ওই চেঞ্জগুলো ফিশবোলে রেখে দিই। আপাতত এক চতুর্থাংশ ভর্তি হয়েছে।

আমার আর একটা শখ ব্রডওয়ে শো দেখা। বিদেশে বেড়াতে গিয়ে এ বার অনেক ব্রডওয়ে শো দেখেছি। ওখানে অভিনেতারা তিনটে বিষয় করেন একসঙ্গে। দে সিং, ডান্স অ্যান্ড পারফর্ম। এবং কোনওটাই লাউড নয়। তিনটে শো দেখেছি। একটা হল ‘দ্য বুক অব মরমন’। অন্যটা ‘কিঙ্কি বুটস’। আর একটা উডি অ্যালেনের লেখা ‘বুলেটস ওভার ব্রডওয়ে’।

এ না-হয় গেল নিজের জীবনের তিনটে সিক্রেট। ‘হসি তো ফসি’র যে চরিত্রটা করেছিলেন, কোনও দিন কি তার মতো শ্বশুরের কাছ থেকে ও ভাবে টাকা ধার চাইতে পারবেন?

না। তার থেকে ভাল নিজে কিছু করার চেষ্টা করব। মুম্বইতে আসার পর আমি কোনও দিন আমার বাবার থেকেও টাকা ধার চাইনি। পার্টটাইম মডেলিং করতাম। তখন একটা ফোটোশ্যুট করলে তো প্রায় দু’মাস চলে যেত। এই সব করেই টাকা রোজগার করেছি। তবে এটাও ঠিক যে ‘হসি তো ফসি’র চরিত্রটা বেশ প্র্যাক্টিকাল। এ রকম অনেক ছেলেকে আমি দেখেছি।

অনেকেই যেটা লক্ষ করেছেন যে ও রকম একটা মেরুদণ্ডহীন চরিত্রে আপনি এমন ভাবে অভিনয় করেছেন, যে কেউ তাকে ঘেন্না করেনি...

করাটা বেশ টাফ ছিল। যেটা আমার সব থেকে ভাল লেগেছিল তা হল আমার হবু শ্বশুরের সঙ্গে দৃশ্যগুলো। ওই যেখানে মাঝরাতে শ্বশুরকে জাগিয়ে তোলা যাতে নীচে দাঁড়িয়ে থাকা পরিণীতি চোপড়া (ছবিতে ও বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল) ওকে চোখের দেখা দেখতে পায়। ওই দৃশ্যগুলো করে দারুণ ভাল লেগেছিল। আসলে আমার এই ধরনের কমেডি পছন্দ। যেটা স্ল্যাপস্টিক নয়। পারফর্মার হলে ওই ধরনের কমেডিতে নিজেকে প্রমাণ করার অনেক জায়গা থাকে। থিয়েটার করার মতো অভিজ্ঞতা ওটা।

‘এক ভিলেন’ তো ওটার থেকে আলাদা...

সব কিছুই আলাদা। নিজেকে রিপিট করার কোনও জায়গা ছিল না।

সেটা নার্ভরেকিং। এক্সাইটিংও। নিজের সামনে এমন কোনও মানুষ দেখিনি যে আমার চরিত্রটির মতো।

এখনও অনেকের প্রশ্ন আপনার চরিত্রটা নেগেটিভ কি না...

ছবিতে আমি হলাম এমন এক নায়ক, যার নেগেটিভ শেডস আছে। ছবিতে কিছু জিনিস আমি করি, যাতে আমাকে খারাপ মনে হয়। পরিচালক মোহিত সুরি আমাকে বলেছিল ও একটা খারাপ লোকের লভ স্টোরি করতে চায়।

কিন্তু সেটা তো সাঙ্ঘাতিক নতুন কোনও আইডিয়া নয়...

কারেক্ট। লভ, রোম্যান্স, থ্রিল, সাসপেন্স— সব আছে এই ছবিতে। অ্যাকশন সিকোয়েন্সেস করেছে মোহিত। অ্যাকশন বলতে হিরোর সঙ্গে পঞ্চাশ জনের ফাইট বলছি না আমি। অনুভূতির ব্যান্ডউইথটা বেশ অন্য ধরনের। এই ধরনের অ্যাকশন ইদানীংকার হিন্দি ছবিতে দেখা যায়নি। আর ছবিতে একটা ভাল মেসেজ আছে। মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের একটা উক্তি রয়েছে: ‘ডার্কনেস কান্ট ড্রাইভ আউট ডার্কনেস; ওনলি লাইট ক্যান ডু দ্যাট। হেট কান্ট ড্রাইভ আউট হেট; ওনলি লভ ক্যান ডু দ্যাট।’

এই লাইনগুলো ছবিতে শ্রদ্ধা বলছে। ওর কথায় আছে ‘নফরত কো নফরত নহি সির্ফ পেয়ার মিটা সকতি হ্যায়’। আমার চরিত্রটা নানা ধরনের সিচুয়েশনের মধ্যে দিয়ে যায়। ওর জন্য শ্রদ্ধার এই লাইনটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট। প্রথম থেকে নেগেটিভ নোটে শুরু হয়। কিছু ঘটনা হয় যখন ওর মধ্যে কনফ্লিক্ট তৈরি হয়। আর তখন ও ভাবতে থাকে এতটা খারাপ হওয়াটা কি জরুরি?

কেরিয়ারের এত প্রথম দিকে এই রকম একটা চরিত্র করতে ভয় লাগেনি? এটা মনে হয়নি যে হয়তো একটু বেশি রিস্ক হয়ে গেল?

‘এক ভিলেন’ আমার পক্ষে একটা বড় ডাইভার্সন। ‘হসি তো ফসি’ করার সময় মোহিত আর বালাজি মোশন পিকচার্সের সঙ্গে দেখা হয়। চিত্রনাট্য পড়ে বুঝলাম যে-রোলটা আমাকে দেওয়া হয়েছে, সেটা অনেকটাই আলাদা। কিন্তু এটাও মনে হল যে এটা করতে পারলে বেশ ভাল হবে। ক্যানভাসটা বড় হয়ে যাবে। আমি ভাবলাম কী গ্যারান্টি যে রোম্যান্টিক ছবি করলেই তা হিট হবে? এখানে অ্যাট লিস্ট লোকে বুঝবে যে আমি ভাল কনটেন্ট নিয়ে কাজ করতে চাই। কারেক্ট টাইম বলে কিছু হয় না। পাঁচ বছর পর আমি এটা করলে ভাল হত, তা আমি মনে করি না।

মানে ইমেজ ব্রেক করার একটা চেষ্টা?

দু’টো ফিল্মে কোনও ইমেজ হয় না।

তবে শাহরুখ খান-ও কেরিয়ারের আগেই নেগেটিভ চরিত্র করেছেন...

ঠিক। ইদানীংকার অভিনেতারা হয়তো করেননি। কিন্তু কেরিয়ারের প্রথমে শাহরুখ ‘বাজিগর’, ‘ডর’ তো করেছেন।

তা হলে কি তারকার বদলে অভিনেতা হিসেবে পরিচিত হতে চান?

একদম। কমার্শিয়াল, নন-কমার্শিয়াল বুঝি না। কনটেন্টের পিছনে ছুটি আমি। এই ফিল্মটা ওয়ার্ক করলে আমি কম্পিটিশনে এক ধাপ এগিয়ে যাব। এর সুফল হল আমি অবিশ্বাসীদের বিশ্বাসী করে তুলতে পারব।

আমার জীবনে

• ভিলেন: মুম্বইয়ের বাড়িওয়ালারা। এখন যে বাড়িওয়ালা, তাঁকে বাদ দিয়ে সবাই আমার কাছে বিভীষিকা।

অভিনেতাদের বাড়ি ভাড়া দিতে তাঁদের কী যে সমস্যা! হয়তো ভাববেন আমরা প্রত্যেক মাসে ঠিক সময় ভাড়া দিতে পারব না!

• যুক্তির কণ্ঠস্বর: মা, দাদা

• ইন্ডাস্ট্রিতে রাত তিনটের বন্ধুরা: অত রাতে ইন্ডাস্ট্রির কাউকে কি আমি ফোন করব?
মুম্বইতে
বরুণ ধবন আমার খুব ঘনিষ্ঠ। আর ‘টু স্টেটস’-এর পরিচালক অভিষেক বর্মন

• গাইড: কর্ণ জোহর আর আমার এজেন্ট রেশমা শেট্টি

• সমালোচক: কর্ণ জোহর। সহজে ওকে খুশি করা যায় না

• চিল-আউট করার বন্ধু: স্কুলের দুই বন্ধু আর কলেজের এক বন্ধু। ওদের মাঝেমধ্যেই টিকিট পাঠিয়ে দিয়ে

বলি মুম্বই চলে আসতে। তার পর হয়তো গোয়া চলে গিয়ে সবাই মিলে মস্তি করি

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement