জ়িনাত আমন। ছবি—সংগৃহীত
নাম-যশের পিছনে ছুটতে হয়নি তাঁকে, সে সব এমনিই এসে ধরা দিয়েছে। অনন্যসাধারণ সৌন্দর্যের জন্য অল্প সময়েই বিখ্যাত হয়ে উঠেছিলেন অভিনেত্রী জ়িনাত আমন। কিন্তু সেই খ্যাতিই কি তিনি চেয়েছিলেন? স্মৃতির সরণি বেয়ে পিছিয়ে গিয়ে আক্ষেপের ধরা পড়ল ৭১ বছরের অভিনেত্রীর কন্ঠে। জ়িনাতের দাবি, অন্য ভাবে ব্যবহৃত হতে চেয়েছিলেন তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে। তাঁর প্রতিভা এবং বুদ্ধিমত্তার চেয়ে শরীরই বেশি বিখ্যাত হয়েছিল। দর্শক শুধু তাঁর অতীতের কলঙ্কময় অধ্যায় নিয়েই চর্চা করেন, যেগুলি আদৌ তাঁর ব্যক্তিত্বকে সংজ্ঞায়িত করে না।
১৯৭১ সালে ‘হরে রাম হরে কৃষ্ণ’ ছবি দিয়ে পথ চলা শুরু হয়েছিল জ়িনাতের। এর পর ‘ইয়াদো কি বারাত’ (১৯৭৩), ‘রোটি কাপড়া অউর মকান’ (১৯৭৫), ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’(১৯৭৮)-এর মতো ছবিতে ঝড় তুলেছিলেন জ়িনাত। তাঁর শরীরী আবেদনে মুগ্ধ হয়েছিলেন সে কালের দর্শক। এতে উপেক্ষিত হয়েছিল তাঁর অভিনয় প্রতিভা, এমনটাই দাবি অভিনেত্রীর।সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জ়িনাত বললেন, “আমি আগে বুঝতে পেরেছিলাম, চলচ্চিত্রজগৎ শুধু যৌবন আর সৌন্দর্যের কদর করে। তাই মহিলা হিসাবে চেহারা এবং রূপ নিয়ে আমিও বিশেষ যত্নবান হয়েছিলাম, কিন্তু তার চেয়েও বেশি চেয়েছিলাম নিজেকে প্রমাণ করতে। অভিনয়ে ছক ভাঙার চেষ্টা করেছি। তার পর দেখলাম, লোকে আমার মুখ আর শরীর নিয়েই কথা বলে। আমার বুদ্ধিমত্তা উপেক্ষিত।”
সেই সময় এখন অতীত। জ়িনাত জানান, যত বয়স বাড়ছে তত নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছেন। যৌবন না গেলে তাঁর যেন নিজেকে প্রমাণ করাই হত না। বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর কথায়, “বুড়ো হওয়া উপভোগ করছি। এত দিনে ভারসাম্য এল আমার কেরিয়ারে। আগে যা করা হয়নি সেই ধরনের চরিত্র এখন করব।”
বরাবর চেনা ছকের বাইরে পা দিয়েছেন জ়িনাত। নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে গিয়েছেন। এখনও মননের দিক থেকে নিজেকে আবিষ্কার করে চলেছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে এসেছেন সদ্য। সেখানেও ভাগ করে নেন নিজস্ব উপলব্ধির কথা। যা শুনতে ভালবাসেন সবাই, তাই অনুরাগীর সংখ্যা এ দিকেও ক্রমবর্ধমান। এমনটাই চেয়েছিলেন জ়িনাত, অন্য ভাবে আবিষ্কৃত হতে।