জ়িনাতের মতে, সন্তানের অভিভাবকত্ব খুবই উত্তেজক এবং আনন্দদায়ক। — ফাইল চিত্র।
সন্তানের উপর নিজের চাহিদার বোঝা চাপানো অন্যায় বলেই মনে করেন জ়িনাত আমন। তাঁর মতে, সন্তানের অভিভাবকত্ব খুবই উত্তেজক এবং আনন্দদায়ক। ভাল অভিভাবক হওয়া চ্যালেঞ্জ বলে মনে হয় তাঁর। একা মা হয়ে দুই পুত্রকে বড় করতে গিয়েও নানা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন অভিনেত্রী। এখনও বিভিন্ন প্রসঙ্গে লিখে রাখেন পুত্রদের কথা। এ বার পরামর্শ দিলেন অন্যান্য অভিভাবকদেরও। জিনাতের মতে, সন্তানকে তার লিঙ্গপরিচয় বা যৌনতার ক্ষেত্রেও পছন্দ-অপছন্দ সমেত গ্রহণ করা উচিত বাবা-মায়ের। সেই পুত্র বা কন্যার যৌনতার ধারণা আলাদা হলে তাকে ত্যাগ করা একেবারেই উচিত কাজ নয়। যা ইদানীং অনেক অভিভাবককেই করতে দেখা যায়।
বর্ষীয়ান অভিনেত্রী জ়িনাত কিছু দিন আগে ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, তা-ও নিজের ছেলেদেরই সাহায্যে। ইতিমধ্যেই প্রচুর অনুরাগী তাঁর। পুরনো স্মৃতি যেমন ভাগ করে নেন, তেমনই নানা বিষয়ে মত দেন, নিজের ভাবনার কথা জানান ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’-এর নায়িকা।
সম্প্রতি একটি পুরনো ছবি ভাগ নিলেন জ়িনাত। তাঁর যৌবনের রঙিন ছবি, দুই পুত্র জাহান এবং আজানের সঙ্গে। জ়িনাত জানান, ছবিটি তোলা বান্দ্রার অধুনালুপ্ত সিরক হোটেলে। তবে দীর্ঘ ক্যাপশন লেখা জ়িনাতের বৈশিষ্ট্য।
লিখেছেন, “যখন আমার সন্তানরা জন্মাল, তারাই হল আমার হল আমার অগ্রাধিকারের জায়গা। ‘সিঙ্গল মাদার’ হিসাবে দু’টি ছেলেকে মানুষ করা আমার কাছে দ্বিগুণ দায়িত্বপূর্ণ বিষয় ছিল। আমি এমন ভাবে ওদের মানুষ করতে চেয়েছিলাম, যাতে বড় হয়ে ওরা উদার, প্রেমময় দুই পুরুষ হতে পারে।”
জ়িনাত জানান, তাঁর ভালবাসা শর্তহীন, যে কোনও পরিস্থিতিতে সন্তানদের জন্য থাকবে। তবে কিছু বিষয় নিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, “যখন আমি শুনি যৌনতার ক্ষেত্রে পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে, পছন্দমতো সঙ্গী নির্বাচন নিয়ে বা নিজের পেশা বেছে নেওয়া নিয়ে অভিভাবকরা সন্তানদের ভাবনাকে প্রত্যাখ্যান করেন, তখন আমার দুঃখ হয়, রাগও হয়। সন্তানদের ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্যের জায়গাটা আমাদের স্বীকার করা উচিত। যে জীবন তারা বেছে নিতে চায়, সেই জীবনের মুখোমুখি হতে তাদের সমর্থন করা উচিত।”
প্রথম বার অভিভাবক হচ্ছেন যাঁরা, তাঁদের জন্য কিছু উপদেশ দিয়েছেন জিনাত। লিখেছেন, “সন্তানদের সঙ্গে যতটা পারো সময় কাটাও, সময়টা উপভোগ করো। ছোট ছোট বিষয় নিয়ে নিজেকে কষ্ট দিয়ো না।”
সন্তানকে নিঁখুত করে গড়ে তোলার জন্য উদ্বিগ্ন হওয়া নয়, তাদের ভালবাসা, সমর্থন আর পথনির্দেশ দেওয়া উচিত বলেই মনে করেন জ়িনাত।