জ়িনাতকে হোটেলের বন্ধ ঘরে কী এমন করেন সঞ্জয় খান? ছবি: সংগৃহীত।
৬০ থেকে ৭০ এর দশকে বলিউডের অন্যতম শীর্ষ নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম জ়িনাত আমন। কেরিয়ারে যেমন চূড়ান্ত সাফল্যের মুখ দেখেছেন, ব্যক্তিগত জীবন ছিল সমস্যায় জর্জরিত। বলিউডে নায়িকাদের পরিচিত ভাবমূর্তি ভেঙে দিয়েছিলেন জ়িনাত। তিনি দেখিয়েছিলেন, পশ্চিমী পোশাকেও নায়িকা হওয়া যায়। নায়িকা মানেই শাড়িতে সুন্দর, এই মিথ ভেঙে গিয়েছিলে তাঁর দৌলতে। কিন্তু যাঁর আবেদনে পাগল হয়ে গিয়েছিল কয়েক প্রজন্মের দর্শক, তিনি নিজে কিন্তু দাম্পত্যে ছিলেন চরম অসুখী।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন জ়িনাত। তাঁর মা এরপর এক জার্মান নাগরিককে বিয়ে করে সে দেশের নাগরিকত্ব পান। জ়িনাতও পড়াশোনা করেন বিদেশেই। তার পর মুম্বই ফিরে এসে সাংবাদিকতায় যোগ দেন। সেখান থেকে অভিনয় জগতে তাঁর পদার্পণ।
শোনা যায়, কেরিয়ারের শীর্ষে থাকতেই ১৯৭৮ সালে জ়িনাত বিয়ে করেছিলেন সঞ্জয় খানকে। তখন সঞ্জয়ের প্রথম বিয়ের বয়স-ই পেরিয়েছে ১২ বছর। কিন্তু সঞ্জয়ের প্রেমে পাগল ছিলেন জ়িনাত। সব জেনেশুনেই বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর মোহ ভাঙল কয়েক মাসের মধ্যে। মাত্র এক বছরেই শেষ হয়ে যায় জ়িনাতের প্রথম দাম্পত্য। অভিযোগ জ়িনাতকে সন্দেহ করতেন সঞ্জয়। দমবন্ধ করা সেই সম্পর্কে মানসিক নির্যাতন আর সহ্য করতে পারছিলেন না অভিনেত্রী। তবে, সরে এলেও সঞ্জয়কে তিনি মন থেকে মুছে ফেলতে পারেননি। দিনের পর দিন শারীরিক নিযার্তন সহ্য করতে হয় তাঁকে। ১৯৮০ সালে জ়িনাতকে মুম্বইয়ের এক হোটেলে ডেকে পাঠান সঞ্জয়। কথা ছিল, আলোচনা করবেন ছবি নিয়ে। কিন্তু অভিযোগ, হোটেলের বন্ধ ঘরে জ়িনাতকে এলপাথাড়ি মারধর করেন সঞ্জয়। চুলের মুঠি ধরে মাটিতে আছড়ে ফেলেন। অভিযোগ, সঞ্জয়ের প্রথম স্ত্রী জ়ারিন এবং আরও কয়েক জনের সামনেই চলেছিল শারীরিক নির্যাতন। সঞ্জয়ের প্রথম স্ত্রী জ়িনাতকে মারধর করায় উৎসাহ দেন সেই রাতে, এমনই দাবি।
শেষে জ়িনাতের চিৎকার শুনে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করেন হোটেলকর্মীরা। আহত অভিনেত্রী মুখ তত ক্ষণে ক্ষতবিক্ষত। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাঁর ডান চোখ। বরাবরের জন্য ‘লেজ়ি আই’ হয়ে যায় সেটি। তার পর ১৯৮৫ সালে মাজহার খানকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী। প্রায় ১২ বছর সংসার করেন সেখানেও যে সুখ পেয়েছেন তেমনটা নয়। পরে দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন সেই সম্পর্ক থেকে। আর কখনও বিয়ে করেননি অভিনেত্রী।