বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেও সুনামের ভাগীদার হয়েছিলেন প্রাক্তন এই মিস ওয়ার্ল্ড। কিন্তু মসৃণ ছিল না তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনেছিলেন যুক্তা মুখী।
বেঙ্গালুরুর এক সিন্ধি পরিবারে যুক্তার জন্ম ১৯৭৭ সালের ৭ অক্টোবর। সাত বছর বয়স পর্যন্ত তাঁর শৈশব কেটেছিল দুবাইয়ে। তার পর যুক্তার পরিবার চলে এসেছিল মুম্বইয়ে।
যুক্তার মা অরুণা একটি সালোঁ পরিচালনা করতেন। বাবা ছিলেন একটি সংস্থার উচ্চপদস্থ কর্মী। ছোট থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি যুক্তার আগ্রহ ছিল ধ্রুপদী সঙ্গীতে। প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন।
স্কুলের পরে যুক্তা কলেজে ভর্তি হন প্রাণিবিজ্ঞান নিয়ে। ডিপ্লোমা ছিল কম্পিউটারেও।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মডেলিংয়ের টানে চাপা পড়ে যায় বাকি সব আগ্রহ। মডেলিংয়ের বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ১৯৯৯ সালে মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং বিজয়িনী হন।
সে বছর প্রতিযোগিতার আসর বসেছিল লন্ডনে। ৯৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা বসেছিল যুক্তার মাথায়। চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে তিনি এই খেতাব জয় করেন।
যুক্তার আগে ১৯৬৬-তে রীতা ফারিয়া, ঐশ্বর্যা রাই ১৯৯৪ সালে এবং ডায়ানা হেডেন ১৯৯৭-এ মিস ওয়ার্ল্ড হন।
মডেলিং থেকে ছবির জগতে যুক্তার আত্মপ্রকাশ ২০০১ সালে। তামিল ছবি ‘পুভেল্লাম উস ভাসম’-এ তাঁকে দেখা যায় ‘যুক্তা মুখী’-র ভূমিকাতেই।
২০০২ সালে আফতাব শিবদাসানির বিপরীতে যুক্তা অভিনয় করেছিলেন ‘প্যায়াসা’ ছবিতে। বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে যুক্তার প্রথম হিন্দি ছবি।
এর পর বলিউডে আরও কিছু ছবিতে অভিনয় করেছিলেন যুক্তা। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘লভ ইন জাপান’, ‘মেমসাব’ এবং ‘গুড নিউজ’।
২০০৩-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মার্কেট’ ছবিতেও যুক্তার অভিনয় করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ অবধি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার কারণে বাদ পড়েন। কোনও অজ্ঞাত কারণে পরের বছর তাঁকে বাদ দেওয়া হয় ‘ইনসাফ: দ্য জাস্টিস’ ছবি থেকেও।
বলিউডে প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীর কেরিয়ারের পালে কোনও দিনই সে ভাবে হাওয়া লাগেনি। কিছু বছর বিরতি নিয়ে ২০১৯-এ আবার ইন্ডাস্ট্রিতে ফিরে আসেন। অভিনয় করেন ‘গুড নিউজ’ ছবিতে। কিন্তু অভিনেত্রী হিসেবে জনপ্রিয়তা অধরাই থেকে যায়।
২০০৮ সালে যুক্তার এনগেজমেন্ট হয় নিউ ইয়র্কের শিল্পপতি প্রিন্স টালির সঙ্গে। সে বছরই প্রথমে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও তার পরে জমকালো অনুষ্ঠানে বিবাহবন্ধনে বাঁধা পড়েন তাঁরা।
কিন্তু নায়িকার কেরিয়ারের মতো দাম্পত্যও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি যুক্তার। বিয়ের পাঁচ বছর পরে তিনি স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে হেনস্থা ও গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনেন।
২০১৪ সালে ভেঙে যায় যুক্তার বিয়ে। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে স্বামীকে ছেড়ে আলাদা হয়ে যান প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী। সে ভাবে আর অভিনয় করেন না, এখন তাঁর সময় কাটে মূলত সমাজসেবামূলক কাজে।