বলিউডে ইয়াসমিনের নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছিল। নাকচ করে দিয়েছেন তিন জন পরিচালক। চতুর্থ জন তো নামই পাল্টে ইয়াসমিন থেকে করে নিলেন ‘মাধুরী’। সই করালেন ‘মজলুম’ ছবিতে।
সে ছবির শুটিং শুরু হওয়ার আগেই রাজ কপূরের চোখে পড়ে গেলেন ইয়াসমিন। বাইশ বছরের এই তরুণীকেই তাঁর ছোট ছেলের প্রথম ছবির নায়িকা হিসেবে মনোনীত করলেন তিনি।
‘ইয়াসমিন’ থেকে পাল্টে নবাগতার নাম রাজ কপূর করে দিলেন ‘মন্দাকিনী’। ১৯৮৫ সালে মুক্তি পেল ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’। নায়ক রাজীব কপূর এবং নায়িকা মন্দাকিনী। বক্স অফিসে ঝড় উঠল সিনেমা এবং তার নায়িকা, দু’জনের ক্যারিশ্মাতেই।
মেরঠের অ্যাংলো ইন্ডিয়ান পরিবারে জন্ম ইয়াসমিনের। ১৯৬৩-র ৩০ জুলাই। তাঁর বাবা জোসেফ ছিলেন ব্রিটিশ এবং মা মুসলিম সম্প্রদায়ের।
রাজ কপূরের দেওয়া ‘মন্দাকিনী’ নামটিই রয়ে যায় বরাবরের জন্য। আরও বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে ‘ডান্স ডান্স’, আদিত্য পাঞ্চোলির বিপরীতে ‘কঁহা হ্যায় কানুন’, গোবিন্দার নায়িকা হিসেবে ‘প্যায়ার করকে দেখো’ জনপ্রিয় হয় দর্শকমহলে।
বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছেন মন্দাকিনী। ১৯৮৫ সালেই মুক্তি পেয়েছিল ‘অন্ধ বিচার’, নায়ক মিঠুন চক্রবর্তী এবং ‘অন্তরের ভালবাসা’, নায়ক তাপস পাল।
১৯৮৯ সালের পর থেকে মন্দাকিনী ধীরে ধীরে মিলিয়ে যান বলিউড থেকে। বন্ধ করে দেন ছবিতে সই করা। এর পর আরও বছর দু’য়েক মন্দাকিনীর কিছু ছবি মুক্তি পায়, যদিও। কিন্তু সে সবই আগে শুটিং করা।
ইন্ডাস্ট্রি থেকে মিলিয়ে গেলেও মন্দাকিনীকে এ বার দেখা যেতে লাগল দাউদ ইব্রাহিমের পাশে। ডনের পাশে মন্দাকিনীর ছবি এল প্রকাশ্যে। শোনা যায়, তাঁর ছবি বেনামে প্রযোজনা করতেন দাউদ। ডনের সঙ্গে থাকতে মন্দাকিনী দুবাইয়েও গিয়েছিলেন বলে শোনা যায়।
যদিও দাউদের সঙ্গে কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বরাবর অস্বীকার করেছেন মন্দাকিনী। তাঁর দাবি, দাউদকে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে চিনতেন না।
১৯৯০ সালে বিয়ে করেন মন্দাকিনী। প্রাক্তন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কাগয়ুর টি রিনপোচে ঠাকুরকে। সাত ও আটের দশকে মার্ফি রেডিয়োর বিজ্ঞাপনে যে শিশুর হাসিমুখ দেখা যেত, তা ছিল এই রিনপোচে ঠাকুরেরই।
১৯৯৬ সালে মুক্তি পায় মন্দাকিনীর শেষ ছবি, ‘জোরদার’। এর পর আর কোনও ছবিতে অভিনয় করেননি তিনি। দু’বার পপ মিউজিকের ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন। সাফল্যের মুখ দেখেনি সে চেষ্টাও।
দলাই লামার ভক্ত, দুই সন্তানের মা, অতীতের নায়িকা মন্দাকিনী এখন তিব্বতি যোগশিক্ষার ক্লাস পরিচালনা করেন। স্বামীর সঙ্গে মিলে চালান একটি তিব্বতি ওষুধের কেন্দ্রও।