Ambarish Bhattacharya

App Cab: ভাড়া বাড়িয়ে ক্যাবের দাদাগিরি! হলুদ ট্যাক্সি কি মুশকিল আসান? কী বললেন তারকারা?

আগামী দিনে তা হলে হলুদ ট্যাক্সিই ফিরুক? মানালির মতে, ক্রমশ সমস্যা বাড়লে যাঁদের নিজস্ব গাড়ি নেই তাঁদের সত্যিই ভাবতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২ ১৩:০৭
Share:

হলুদ ট্যাক্সি কি মুশকিল আসান? কী বললেন অম্বরীশ, মানালি, স্নেহা?

কখনও গাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধ। কখনও চালকদের অভব্য আচরণ। মাঝপথে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তো আছেই। অ্যাপ ক্যাব নিয়ে নিত্যযাত্রীদের নিত্য ক্ষোভ। নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে রাজি না হওয়াও আকছার ঘটছে। নতুন সমস্যা, আচমকাই যাত্রীদের থেকে দ্বিগুণ ভাড়া চাইছেন চালকেরা। নিয়ম ভেঙে ফোন করে যাত্রীর নির্দিষ্ট গন্তব্য জেনে প্রথমে নির্ধারিত ভাড়া জানাচ্ছেন। তার পরেই তাঁদের দাবি, দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হবে। যাঁরা রাজি হচ্ছেন, তাঁরা পরিষেবা পাচ্ছেন। যাঁরা রাজি নন তাঁরা বাতিল! বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। তালিকায় সামিল তারকারাও। অনেকেই বলছেন, এর চেয়ে বরং তা হলে হলুদ ট্যাক্সির যুগ ফিরুক।

Advertisement

এই ঘটনায় প্রথম মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী স্নেহা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বাড়িতে যেতে গিয়ে একই অভিজ্ঞতা তাঁর এক বোনের। স্নেহাও কি আগামী দিনে হলুদ ট্যাক্সিতেই ফিরে যাবেন? তিনিও কী ভুক্তভোগী? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। স্নেহার যুক্তি, ‘‘সমস্যাটি আদতে একমুখী নয়। একাধিক মুখী। প্রথমত, আমরা অ্যাপ ক্যাবে উঠি বাড়ির সামনে থেকে পরিষেবা পাব বলে। এ ছাড়া, রাত বিরেতে বিপদে অ্যাপ ক্যাব বা বাইকও ভরসা। ফলে, বিরক্ত হলেও আমরা অ্যাপ ক্যাবের সাহায্য নিতে বাধ্য।’’ একই সঙ্গে স্নেহার বক্তব্য— তার মানে এই নয়, চালকেরা যা খুশি বলবেন বা করবেন। জ্বালানির দাম বেড়েছে সকলেই জানেন। তা হলে সংস্থাও পরিষেবার ভাড়া বাড়াক। সেটা যাঁরা মেনে নিতে পারবেন, তাঁরা ক্যাবে চড়বেন। অভিনেত্রীর আরও দাবি, এত দিন চালকেরা যাত্রীদের পরিষেবা বাতিলের অনুরোধ জানাতেন। এখন নিজেরাই সেটি করছেন। অর্থাৎ, সংস্থার মালিক-চালকদের মধ্যে বিস্তর ফাঁক এবং অসন্তোষ। সেই সমস্যাই হয়তো পুঞ্জীভূত হয়ে চালকদের আচরণে প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু তার ফল যাত্রীরা ভুগবেন কেন?

এ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অম্বরীশ ভট্টাচার্য, মানালি দে-র সঙ্গেও। কী বলছেন তাঁরা? অ্যাপ ক্যাবের চালকদের অভব্যতার ভুক্তভোগী মানালি। এক বার প্রযোজনা সংস্থার গাড়ি খারাপ হওয়ায় নির্দিষ্ট কলটাইমে স্টুডিয়োয় পৌঁছতে অ্যাপ ক্যাবে উঠেছিলেন তিনি। ফলাফল মারাত্মক। তাঁর কাছে নতুন সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন রাখতেই মানালির বক্তব্য, ‘‘অ্যাপ ক্যাব নিয়ে শুধু আমার নয়, বিরক্তি বহু জনের। কখনও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধ করে দেওয়া। কখনও বলা, মেজাজ ভাল নেই। যাব না। কখনও মাঝ পথেই নামিয়ে দেওয়া। কখনও চড়া মেজাজ। এত দিন এ সব সহ্য করেছেন সবাই। এ বার নতুন ঝামেলা। আমরা তো ন্যায্য ভাড়া দিচ্ছিই। তার পরেও বাড়তি দিতে হবে!’’ কেন সহ্য করা হয়েছে? পর্দার ‘ফুলঝুরি’র যুক্তি, কারণ একটাই। হলুদ ট্যাক্সি রাস্তায় নেমে ডাকতে হয়। অ্যাপ ক্যাব বাড়ির দরজা থেকে যাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। আগামী দিনে তা হলে হলুদ ট্যাক্সিই ফিরুক? মানালির মতে, ক্রমশ সমস্যা বাড়লে যাঁদের নিজস্ব গাড়ি নেই, তাঁদের সত্যিই ভাবতে হবে।

Advertisement

‘পটকা’ অম্বরীশ বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ। তিনি অনেক দিন অ্যাপ ক্যাবে চড়েননি। প্রথম দিকে ক্যাবে চড়লে এসির পাশাপাশি সুগন্ধও থাকত। বাড়তি পাওনা চালকের মার্জিত আচরণ। এ সবের জন্যই বেশির ভাগ যাত্রী অ্যাপ ক্যাবের দিকে ঝুঁকেছিলেন। অভিনেতার দাবি, ‘‘ক্রমশ সেসব অবলুপ্তির পথে। ভাড়া গুণেও গরমে সেদ্ধ হতে হতে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। বেশি দূরত্ব শুনলে চালক রাজি হন না। তার পরেও তুললে মাঝপথেই অনেক সময়ে নামিয়ে দেন। এগুলো যাত্রীদের অভিপ্রেত নয়।’’ তবে চালকদের হয়েও বক্তব্য রয়েছে অভিনেতার। অম্বরীশের যুক্তি, ‘‘সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরেই চালকদের একাধিক নির্দেশাবলী মানতে হয়। প্রতি দিন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সফরসংখ্যা পূরণ করতে হয়। তবেই দিনের শেষে তাঁরা সংস্থা থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পান। ফলে, তাঁরাও লম্বা যাত্রার বদলে ছোট যাত্রা পছন্দ করেন। এবং লক্ষ্যপূরণের তাগিদে সারা ক্ষণ ভিতরে ভিতরে দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকেন। তাই না চাইতেই খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন।’’ এর পাশাপাশিই প্রায় প্রতিদিন দাম বাড়ছে তেলের। সেটাও মাথায় রাখতে হবে। সব মিলিয়েই হয়তো ঘটে যাচ্ছে চূড়ান্ত অনভিপ্রেত ঘটনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement