শুটিংয়ে ইন্দ্রনীল এবং অরুণিমা।
জঙ্গলের মধ্যে একটি পোড়ো বাড়ির ছাদে মুখোমুখি দু’জন। গির্জার ফাদারের পোশাকে কালো ভ্রমরকে পিছন থেকে দেখেও চিনতে ভুল হয়নি কিরীটীর। নাইন এমএম উঁচিয়ে গুড়ি মেরে এগিয়ে ভিলেনের ঘাড়ের কাছে আগুয়ান হিরো। কালো ভ্রমরের সিগনেচার স্টাইলে পর পর খুনের খবর পেয়ে গন্ধে গন্ধে হাজির কিরীটী। চিরশত্রুর উপস্থিতি টের পেয়ে মুহূর্তের জন্য থমকালেন কালো ভ্রমর। তার পরে ঘুরলেন চকিতে। তাঁর মুখে তখন ঈষৎ ধূর্ত কিন্তু তারিফ-করা হাসি। ‘এই জন্য তোমায় এত ভাল লাগে কিরীটী! ঠিক বুঝতে পেরে চলে এসেছ!’— ঠিক এ ভাবেই চলতি বছরের গোড়ার দিকে অনিন্দ্যবিকাশ দত্তর পরিচালনায় ইলামবাজারের জঙ্গলে শুরু হয়েছিল কিরীটীর দৌড়। এ বার অপেক্ষা মুক্তির। তার আগে ট্রেলরেই চমকে দিয়েছে ‘কিরীটী ও কালো ভ্রমর’।
নীহাররঞ্জন গুপ্ত সৃষ্ট এই গোয়েন্দা কিরীটী রায় অবশ্য অন্য বাঙালি গোয়েন্দাদের মতো নন। ইনি একটু সাহেবি ধাঁচের। নীহাররঞ্জনের বর্ণনা অনুযায়ী কিরীটী রায় প্রায় সাড়ে ছ’ফুট লম্বা, মেদহীন শরীর, গৌরবর্ণের অধিকারী, ব্যাক ব্রাশ করা চুল, চোখে কালো ফ্রেমের চশমা, মাথায় হ্যাট এবং গায়ে ওভারকোট। নীহাররঞ্জন গুপ্ত ইচ্ছে করেই একটু সাহেবি ধাঁচের করে তৈরি করেছিলেন তাঁর বাঙালি গোয়েন্দাকে। তাঁরই প্রথম রহস্য-উপন্যাস বা গোয়েন্দা কিরীটীর প্রথম আবির্ভাব এই ‘কালো ভ্রমর’ উপন্যাসে। চার খণ্ডে কলকাতা থেকে বর্মা মুলুক হয়ে ফের আবার কলকাতায় বিস্তৃত এই কালো ভ্রমর আর কিরীটী রায়ের যুদ্ধ। আর পর্দার কিরীটী হলেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত।
অনিন্দ্যবিকাশ দত্তর আগের ছবি ‘বঙ্কুবাবু’। কমেডি ছবির পর এ বার বাংলা থ্রিলার পরিচালনায় তিনি। কলকাতাকে কেন্দ্র করেই সাজিয়েছেন চিত্রনাট্য। তাই মূলত ‘কালো ভ্রমর’-এর তৃতীয় ও চতুর্থ খণ্ডকে পর্দায় দেখবেন দর্শক। যদিও গল্পে এই উপন্যাসে বর্ণিত সময়কাল চারের দশক, তবে এই ছবিতে সেই গল্পকে ফেলা হয়েছে ২০১০-১২ সালে। তার জন্যই গল্পে কিছুটা পরিবর্তনও এসেছে। এই ছবিতেই কিরীটীর সঙ্গে আলাপ হচ্ছে কৃষ্ণার, যে পরবর্তী কালে হয়ে উঠবে কিরীটীর স্ত্রী। কৃষ্ণার ভূমিকায় আছেন অরুণিমা ঘোষ। আর ‘কালো ভ্রমর’-এর ভূমিকায় কৌশিক সেন। কিরীটীর সহকারী ও বন্ধু সুব্রতর ভূমিকায় আছেন সমদর্শী দত্ত। পরিবর্তনের দ্বিতীয় ধাপে প্রিয় কালো অ্যাম্বাসাডরের পরিবর্তে এই ছবিতে কিরীটীর বাহন কালো স্করপিও। ওভারকোটের বদলে এসেছে আধুনিক জ্যাকেট আর পাইপের বদলে সিগারেট। ইতিমধ্যেই দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে এ ছবির ট্রেলর। আপাতত মুক্তির অপেক্ষা।