প্র:ফেসবুক থেকে টুইটার ‘রেঙ্গুন’ নিয়ে তোলপাড়!
উ: আমি অভ্যস্ত। আমার সব ছবির বেলাতেই দেখি, নিন্দে-প্রশংসা ফিফটি-ফিফটি। আমি তো আর কোটি-কোটি টাকা ব্যবসার জন্য ছবি করি না। তবে ‘রে ঙ্গুন’–এ কঙ্গনা যে এত সাবলীল অভিনয় করবে, ভাবতে পারিনি।
প্র: কঙ্গনাকে কিন্তু অনেকে মেলোড্রামাটিকও বলেছেন...
উ: পরিচালক হিসেবে ওর সহজাত অভিনয় ক্ষমতার প্রশংসা করবই। ওই যে বললাম, বাজারি ছবির কথা ভেবে চরিত্র বাছি না আমি।
প্র: তা হলে যে আমির, শাহরুখ, সলমনকে নিয়ে ছবি করার কথা বলেন!
উ: তিন খানকে নিয়েই আলাদা করে ছবির ভাবনাচিন্তা চলছে। তিনজনেই জাত অভিনেতা। সেই কারণেই এমন ভেবেছি। আমিরের ‘দঙ্গল’ দেখে দারুণ লেগেছে। ওদের নিয়ে ছবি হবে। সিনেমায় ইঁদুর দৌড়ে আমি বিশ্বাসী নই।
প্র: শুধুই শেক্সপিয়র! বাংলা সাহিত্য নিয়ে কিছু ভাবছেন না?
উ: আমি বাঙালিদের ভক্ত। সত্যজিৎ রায়ের সব ছবি দেখেছি। ইচ্ছে আছে, সন্দীপ রায়ের সঙ্গে দেখা করার। প্রোফেসর শঙ্কু করতে প্রচণ্ড ইচ্ছে করে। দেখি কী হয়!
প্র: হঠাৎ সেবার শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন!
উ: ওঁর ছোট গল্প নিয়েও আমার ছবি করার ইচ্ছে আছে। ওঁর বাড়িতেও গিয়েছিলাম। খুব ভাল লেগেছে কথা বলে।
প্র: শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের গল্প নিয়ে বলিউডে ছবি?
উ: আমি নিজেকে বদলাতে চাই। মানুষের মন, দ্বন্দ্ব, আরও দ্বন্দ্ব, জটিলতা, নানা শেড নিয়ে ছবি করতে চাই। ওই জন্যই শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলাম। ওঁর গল্পে এরকম নানা প্রসঙ্গ ধরা আছে। দেখুন, মুম্বই ইন্ডাস্ট্রিতে কে কী ছবি করছেন, কার ছবিতে কোটি টাকা আসবে, সেটা দেখা আমার কাজ নয়। আরে! আমি তো মুম্বই ইন্ডাস্ট্রিতে সোশ্যাল ওয়ার্ক করতে আসিনি।
প্র: শুনেছি পার্টিতেও যান না…
উ: বলুন তো এত পার্টি করে, পেজ-থ্রিতে ছবি ছাপিয়ে, ইন্টারভিউ দিয়ে অ্যাওয়ার্ড ফাংশনে গিয়ে কী হয়? তাতে ছবির মেকিং কি ভাল হবে? ওই সময় বরং আমি বাড়িতে রেখার (ভরদ্বাজ) সঙ্গে সময় কাটাতে, গান নিয়ে ওর সঙ্গে আলোচনা করতে, ওর হাতের রান্না খেতে চাইব। আমার একটা বন্ধুদের দল আছে। তাঁদের সঙ্গেও বেড়াতে যাই। পার্টি করি।
প্র: কারা আপনার বন্ধু?
উ: আশিস বিদ্যার্থী আমার কলেজের ব্যাচমেট। মনোজ বাজপেয়ী, আমি, আশিস প্রায়ই রাতে হনসলের (মেটা) বাড়িতে আড্ডা দিই।
প্র: আচ্ছা, ১৯৮০ সালে যদি গুলজারের সঙ্গে দিল্লির এক মিষ্টির দোকানে আপনার দেখা না হত…
উ: উফ! সেই একটা মুহূর্ত আমার জীবনের ভোলটাই বদলে দিল! এমনকী আমার স্ত্রী রেখার জীবনটাও ওদিন থেকে বদলে গিয়েছে। সুর, শব্দ আর ছায়াছবির খেলাটা গুলজারসাবই যেন হাতে ধরে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। আজও যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ওঁর সঙ্গে কথা বলি...
প্র: শাহিদ কপূরের ‘গুলজার’ নাকি আপনি!
উ: কী যে বলেন! সেরকম কিছু না। শাহিদ দিন-দিন ম্যাচিওর হচ্ছে। ‘হায়দর’-এর পর তো আরওই। আসলে আমি দেখেছি, বিয়ে করলে অভিনেতারা আরও পরিণত হয়। দায়িত্ব নিতে শেখে। সেই কারণেই ‘রেঙ্গুন’-এ এক অন্য শাহিদকে পেলাম আমরা। ছবি দেখে লোকের ভাল না-ও লাগতে পারে। কিন্তু তার জন্য অভিনেতাদের নিয়ে বিতর্ক তৈরি করে কী হবে?
প্র: সে কী! আপনার ছবি মানেই তো বিতর্ক...
উ: এতদিন ছবি তৈরি করে বুঝেছি, সেন্সর বোর্ড ‘তালিবানি শাসন’ জারি করেছে। ‘ওমকারা’-র সময় ছবির সংলাপ নিয়ে আপত্তি, ‘হায়দর’-এর সময় জোর করে কাশ্মীর সমস্যা চাপিয়ে দেওয়া... এই তো ‘লিপস্টিক আন্ডার বুরখা’ নিয়ে যা নয় তাই চলছে। এ যেন থামার নয়... (প্রচণ্ড উত্তেজনার পর, হঠাৎ প্রসঙ্গ বদলে) আচ্ছা, রসগোল্লা আনেননি কেন আমার জন্য? বাঙালি মানেই কিন্তু রসগোল্লা। এখানে একটা কথা বলি...
প্র: বলুন না
উ: এখন রিজিওনাল ছবি, যেমন মালয়ালি, মরাঠি ছবি, আগেকার বাংলা ছবির মতো হচ্ছে। আমি অনীক দত্ত, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি দেখেছি। ভাল লেগেছে। কিন্তু আরও বাঙালি পরিচালককে এগিয়ে আসতে হবে। আর শুনুন, নেক্সট টাইম কিন্তু রসগোল্লা আমার চাই-ই চাই। নইলে নো ইন্টারভিউ!