কেন দর্শকের মধ্যে বয়কট প্রবণতা বাড়ছে, তা নিয়ে গভীর ও সৎ অনুসন্ধানের প্রয়োজন আছে বলেও পরিচালক মনে করেন। —ফাইল চিত্র
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে যুগের চাহিদা। দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গিও পাল্টেছে অনেকটাই। যা নিয়ে মুখ খুললেন ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’- এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। শনিবার একটি অনুষ্ঠানে তাঁর ছবি ঘিরে তৈরি হওয়া নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন বিবেক। বলিউড সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও খোলা মনে আলোচনা করলেন। পরিচালকের মতে, ভারতীয় ছবিতে ২০০০ সালের আগের ও পরের সময়কালের মধ্যে স্পষ্ট দু’টি বিভাজন রয়েছে।
কেন দর্শক মুহুর্মুহু সিনেমা বয়কট করছেন? প্রশ্নের উত্তরে বিবেক বললেন, “পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই আমরা সিনেমা দেখি না কেন, আমাদের সিনেমায় কোনও জমাট গল্প ছাড়াই দেশীয় বৈচিত্র্র থাকে।” তিনি আরও বলেন, “সমান্তরাল সিনেমার যে আন্দোলন শ্যাম বেনেগাল, গোবিন্দ নিহালনি শুরু করেছিলেন, সে ধারা এখন মৃত। সেই জায়গা নিয়েছে কর্ণ জোহর ঘরানার ছবি।” বিবেকের স্পষ্ট মত, বলিউডে মধ্য মেধার ছবি তৈরি হচ্ছে।
বিবেকের মতে, ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ের ভারতীয় ছবি প্রবাসী কিংবা পশ্চিমের মানুষদের কথা মাথায় রেখে তৈরি হচ্ছে। ভারতীয় দর্শককে নিয়ে পরিচালকরা ভাবছেন না আর। পরিচালকের কথায়, ‘‘প্রবাসী দর্শকরা এ দেশের সত্য সম্পর্কে জানতে চান না। ভারতের আর্থ-সামাজিক বিষয়ে তাঁদের মাথাব্যথা নেই। তাঁদের কথা হল, ‘বচ্চনকে দেখিয়ে দাও।’ এর মধ্যে দিয়েই তাঁরা ভারতের উৎসব ইত্যাদিকে দেখেন।’’
বিবেক আরও জানান, ‘কভি খুশি কভি গম’- এর মতো ছবি একেবারেই প্রবাসী ভারতীয়দের জন্য তৈরি। আমেরিকার মতো দেশ পরিবারকেন্দ্রিক নয়। সে কারণেই এই প্রবণতা বাড়ছে। বিবেকের দাবি, ভারতে দর্শককে মূর্খ ভাবা হয়। ধরে নেওয়া হয়, গল্প বোঝার ক্ষমতা তাঁদের নেই।
কেন দর্শকের মধ্যে বয়কট প্রবণতা বাড়ছে, তা নিয়ে গভীর ও সৎ অনুসন্ধানের প্রয়োজন আছে বলেও পরিচালক মনে করেন। বিবেকের কথায়, ‘‘কোভিডের সময়ে মানুষ আধ্যাত্মিকতার কাছে ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের প্রিয়জনের জন্য উদ্বেগ বেড়েছে। জীবন-মরণের প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। সেই সময়ই তাঁরা দেখছেন, বলিউড অভিনেতা নাচছে, গাইছে, উল্লাস করছে! এর মধ্যেই ঘটেছে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু। ফলে বলিউডকে দর্শক আতশকাচের নীচে রেখে দেখছেন। তাঁরা বুঝেছেন, টাকার অঙ্কে সব কিছু মাপা যায় না।’’
বলিউডের বয়কট প্রবণতা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, তিনি বয়কট পছন্দ করেন না। কিন্তু এর ইতিবাচক দিক এই যে, বয়কট বলিউডকে নাড়া দিয়েছে, সতর্ক হওয়ার বার্তা পাঠিয়েছে।