প্রয়াত উত্তম মহান্তি। ছবি: সংগৃহীত।
প্রয়াত উত্তম মহান্তি। ওড়িশি বিনোদন দুনিয়ার জনপ্রিয় অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। খবর, বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির গুরুগ্রামের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। দীর্ঘ দিন ধরেই নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি সিরোসিস অফ লিভার ধরা পড়েছিল প্রবীণ অভিনেতার। দিল্লিতে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। বর্যীয়াণ অভিনেতার প্রয়াণে সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। তিনি লিখেছেন, “ওড়িশার বিখ্যাত অভিনেতার প্রয়াণে শোকাহত। উত্তম মহান্তির প্রয়াণে ওড়িয়া শিল্প জগতে এক বিশাল শূন্যতা তৈরি হল। যদিও দর্শকমনে তাঁর স্থান চিরকালীন। আমি তাঁর আত্মার চির শান্তি কামনা করি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা।”
খবর, একই সঙ্গে নিউমোনিয়া এবং সিরোসিস অফ লিভারে ভুগছিলেন তিনি। চলতি মাসের শুরুতে প্রথমে ভুবনেশ্বরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। সেখানে ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। অবস্থার আরও অবনতি ঘটায় তাঁকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। সেই সময় সংবাদমাধ্যমকে এ খবর জানিয়েছিলেন সদ্যপ্রয়াত অভিনেতার পুত্র বাবুসান।
বাবার অসুস্থতা সম্পর্কে অভিনেতা-পুত্র আরও জানিয়েছিলেন, ভুবনেশ্বরের একটি প্রথম সারির হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়েছিল উত্তম মহান্তিকে। পরে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়। অবস্থার কোনও উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকেরা বর্ষীয়ান অভিনেতাকে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ মেনে রাজধানীতে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কারণ, অভিনেতাকে অঙ্গ সহায়তার (অর্গান সাপোর্ট) মাধ্যমে সচল রাখা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ভুবনেশ্বর হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের প্রধান বাবুসানকে এই পরামর্শ দিয়েছিলেন।
১৯৫৮ সালে বারিপদায় জন্ম বহু সফল ছবির নায়ক উত্তমের। ১৯৭৭ সালে সাধু মেহের পরিচালিত ‘অভিমান’ ছবি দিয়ে ওড়িয়া বিনোদন দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ তাঁর। প্রথম ছবিতেই দর্শকের নজর কাড়ায় আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ‘চকোলেট বয়’ ইমেজ দর্শককে মুগ্ধ করেছিল। অভিনেতার ঝুলিতে রয়েছে ‘নিঝুম রাতিরা সাথী’, ‘চিনহা অচিন’, ‘রামায়ণ’, ‘তপস্যা’, ‘রাম বলরাম’, ‘পালটক’, ‘অভিলাষা’, ‘দন্ড বালুঙ্গা’, ‘পূজা ফুল’, ‘জাগা হাতরে পাগা’, ‘সাহারী বাঘাগে’, ‘মুতালাগা’, ‘সাহারি বাঘাগে’, রাহেনা, ‘চাকা ভাউনারী’, ‘জোর জাহারা মুলক তাহারা’, ‘তুন্ডা বাইদা’, ‘সুনা চাদেই’, ‘পুয়া মোরা কালা ঠাকুর’, ‘কন্যাদান’, ‘চাকা আঁখি সব দেখেছি’, ‘রজনীগন্ধা’র মতো সফল ছবি। তাঁর সঙ্গে টলি অভিনেত্রী ও সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এক সময় জুটি বেঁধে একাধিক জনপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, অভিনেত্রী স্ত্রী অপরাজিতার সঙ্গেও উত্তমের জুটি দর্শকের প্রিয় ছিল।