প্রয়াত মনোজ কুমার। —ফাইল চিত্র।
বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ কুমার প্রয়াত শুক্রবার সকালে। ৮৭ বছরের অভিনেতা মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে প্রয়াত হন। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। সিরোসিস অফ লিভার ছিল তাঁর, যা অভিনেতার স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটিয়েছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই হৃদ্রোগজনিত সমস্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মনোজ কুমারের প্রয়াণে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেশ আর দেশপ্রেম, তাঁর অভিনয়ের এই ছিল পরিচয়। ‘পুরব পশ্চিম’, ‘রোটি কাপড়া আউর মকান’, ‘ক্রান্তি’র মতো ছবি তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিল দেশের পরিচয়। তাই তিনি ‘ভারত কুমার’ উপাধিতে সম্মানিত। বর্ষীয়ান অভিনেতার প্রয়াণে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অফিশিয়াল এক্স (সাবেক টুইট) হ্যান্ডলে তিনি অভিনেতার সেই সব ছবির নাম উল্লেখ করেছেন যেখানে দেশভক্তির বিষয়টি প্রতিটি দৃশ্যে দেখানো হয়েছে। এও জানিয়েছেন, পর্দায় মনোজ কুমার যে ভাবে দেশের প্রতি ভালবাসা জানিয়েছেন, দেশ এবং দেশবাসী তা আজীবন মনে রাখবে। মনোজ কুমারের অভাব পূরণ করা শক্ত। তিনি সদ্যপ্রয়াত অভিনেতার পরিবারকেও সমবেদনা জানান। প্রসঙ্গত, মনোজ-পুত্র কুণাল গোস্বামীও অভিনয়ে এসেছিলেন। কিন্তু বাবার ছায়ায় ঢাকা পড়ে যান।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, “প্রবীণ অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা মনোজ কুমারের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। দেশাত্মবোধক চলচ্চিত্রের জন্য খ্যাত তিনি। তাই 'ভারত কুমার' বলে সম্বোধন করা হত তাঁকে। নিজের দেশের প্রতি ভালবাসা শেষ দিন পর্যন্ত ধরে রেখেছিলেন। তাঁর মৃত্যু আমাদের চলচ্চিত্র জগতের জন্য এক বিরাট ক্ষতি।”
পরিচালক অশোক পণ্ডিত জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন মনোজ। অশোক বলেন, ‘‘আমরা ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম। প্রাণোচ্ছল মানুষ ছিলেন। বলিউড ওঁর অভাব অনুভব করবে।’’
১৯৩৭ সালে মনোজের জন্ম পঞ্জাবি ব্রাহ্মণ পরিবারে। পিতৃদত্ত নাম হরিকৃষ্ণ গোস্বামী হলেও ছবির জগতে সে যুগের ধারা মেনে তিনি নিজেকে মনোজ কুমার বলে পরিচয় দিতেন। ১৯৫৭ সালে বলিউডে তাঁর পদার্পণ। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ একের পর এক ছবিতে ছবিতে কাজ করে তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। তাঁর ঠোঁটে ‘মেরি দেশ কি ধরতি’ আজও ভারতবাসীর রক্তে দোলা লাগায়।