ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর সহকর্মীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় সুনীল শেট্টি। শুধু এক জনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কাঁটার মতো তীক্ষ্ণ ছিল দীর্ঘ দিন। তিনি ইমরান হাশমি। যিনি জানিয়ে দিয়েছিলোন, কোনও দিন আর সুনীল শেট্টির সঙ্গে কাজ করবেন না।
কিন্তু কেরিয়ারের এই পর্বে ইমরান নিজেই তাঁর এই প্রতিজ্ঞা ভেঙেছিলেন। কাজ করছেন সুনীল শেট্টির সঙ্গে।
ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পরে খুব অল্প সময়ে জনপ্রিয় হন ইমরান। প্রথম থেকেই তাঁর ছবি ছিল ছক ভাঙা ধরনের। ছবির বিষয়বস্তু যা-ই হোক না কেন, তা চর্চার শীর্ষে থাকত।
‘মার্ডার’, ‘আশিক বনায়া আপনে’-এর মতো ছবি জনপ্রিয় হওয়ার সময়েই ইমরানের কাছে ‘চকোলেট’ ছবির অফার আসে। ছবিতে একাধিক নায়ক থাকলেও ইমারন রাজি হয়েছিলেন অভিনয়ে। কারণ তাঁর মনে হয়েছিল ছবির চিত্রনাট্য ভাল এবং তাঁর চরিত্রটি যথেষ্ট গুরুত্ব পাবে।
২০০৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘চকোলেট’ ছবির নায়িকা ছিলেন তনুশ্রী দত্ত। এ ছাড়া ছিলেন সুনীল শেট্টি, অনিল কপূর এবং আরশাদ ওয়ারসি। পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর প্রথম ছবি ছিল ‘চকোলেট’।
কিন্তু ছবির শুটিং শুরু হতেই দেখা দিল বিপত্তি। শুটিং যত এগোয়, ইমরান হাসমির মনে হতে থাকে তিনি এই ছবিতে আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নন। ছবির ফোকাস কেড়ে নিয়েছেন অনিল কপূর ও সুনীল শেট্টি।
ছবির ফাইনাল কাট দেখে আরও ক্ষুব্ধ হন ইমরান। তাঁর বক্তব্য ছিল, সুনীল শেট্টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য তাঁর ভূমিকা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে ‘চকোলেট’ ছবিতে।
এমনকি, তিনি এও বলেন, কেরিয়ারের শীর্ষে থাকার সময়ে ‘চকোলেট’-এ অভিনয় করা সবথেকে বড় ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর। যেখানে তিনি ছিলেন অন্য ছবির লিড নায়ক, সেখানে এই ছবিতে তাঁর ভূমিকায় কাঁচি পড়েছিল সুনীল শেট্টির জন্য। এর পরই তিনি বলেন, সুনীলের সঙ্গে আর কোনও ছবিতে কাজ করবেন না।
কিন্তু দেড় দশকে পাল্টে গেল ছবিটা। তখন ইমরান হাসমির জনপ্রিয়তা আগের থেকে বিস্মৃত অনেকটাই। অতীতের ‘সিরিয়াল কিসার’ হারিয়েছেন তাঁর গ্রহণযোগ্যতা। এই পরিস্থিতিতে ইমরান হাসমি নিজেই সুনীল শেট্টির সঙ্গে অভিনয়ে রাজি হয়েছেন।
ছবির নাম ‘মুম্বই সাগা’। এই ছবিতে ‘চকোলেট’-এর থেকেও বেশি অভিনেতা রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন সুনীল শেট্টি। তার পরেও ইমরান হাশমি রাজি হয়েছেন অভিনয়ে।
সঞ্জয় গুপ্তের পরিচালনায় এই ছবিতে সুনীল শেট্টি ও ইমরান হাশমি ছাড়াও অভিনয় করছেন জন আব্রাহাম, জ্যাকি শ্রফ, প্রতীক বব্বর, রোহিত রয়, সমীর সোনি, গুলশন গ্রোভার এবং অমল গুপ্ত।
‘মুম্বই সাগা’ মুক্তি পাওয়ার কথা চলতি বছর জুন মাসে। দীর্ঘ দেড় দশক পরে এই ছবিতে আবার একসঙ্গে দেখা যাবে সুনীল শেট্টি-ইমরান হাশমিকে। পড়ন্ত কেরিয়ারে নিজের পুরনো প্রতিজ্ঞা ভাঙতে বাধ্য হলেন এক সময়ের ‘সিরিয়াল কিসার’।