ফাইল চিত্র।
সিকিমকে অশান্ত ও উপদ্রুত রাজ্য বলে মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন তিনি।
সিকিম থেকে তৈরি একটি ছবি, পাহুনা-র প্রযোজক প্রিয়ঙ্কা। ছবিটি টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হচ্ছে। সেই উপলক্ষেই কানাডার সংবাদমাধ্যমকে প্রিয়ঙ্কা বলে বসেন, ‘‘উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি ছোট্ট রাজ্য সিকিম। এর আগে সেখানে কখনও ছবি তৈরি হয়নি। কারণ জঙ্গি আন্দোলনের চাপে ওখানকার পরিস্থিতি খুবই অশান্ত।’’
বিষয়টা জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই শুরু হয়। ভারতের অন্যতম শান্ত রাজ্য সম্পর্কে কী করে প্রিয়ঙ্কা এমন মন্তব্য করলেন, তাই নিয়ে শুরু হয়ে যায় কাটাছেঁড়া। অনেকেই প্রিয়ঙ্কাকে উদ্দেশ করে বলতে থাকেন, ‘যা জানেন না, তা নিয়ে কথা বলবেন না।’ সিকিমের পর্যটনমন্ত্রী উগেন গ্যাৎসো বলেন, ‘‘এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। প্রিয়ঙ্কার মতো এক জন আন্তর্জাতিক তারকার থেকে এটা আশা করা যায় না।’’
‘পাহুনা’ ছবিতে অতিথিশিল্পী ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া। প্রিয়ঙ্কার কথায় আহত তিনিও। বলেছেন, প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য সিকিমবাসীদের আঘাত করেছে। সিকিম রাজ্য হিসেবে কতখানি শান্তিপূর্ণ তা বোঝাতে গিয়ে বাইচুং বলেন, ‘‘সিকিমের ভারতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে ভাবাবেগ থাকলেও সেটা কখনও কোনও অশান্তির জন্ম দেয়নি। এখন সিকিমের মানুষ নিজেদের ভারতবাসী বলেই মনে করেন।’’ উত্তর-পূর্বের কিছু রাজ্য অশান্ত ঠিকই। তার জন্য সামগ্রিক ভাবে উত্তর-পূর্বকেই অশান্ত বলে চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতা ওই অঞ্চল সম্পর্কে ভারতের মূল ভূখণ্ডের উদাসীনতার পরিচয় বলেই মনে করেন তিনি।
নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছেন প্রিয়ঙ্কাও। তিনি নিজে ই-মেল মারফত ক্ষমা চেয়েছেন সিকিম সরকারের কাছে। তাঁর মা মধু চোপড়া ফোন করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাহুনা-র পরিচালক পাখি টায়ারওয়ালাও ক্ষমা চেয়েছেন। পর্যটনমন্ত্রী নিজেই এ সব জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘সকলেই জানেন সিকিমের মানুষ শান্তিপ্রিয়। প্রিয়ঙ্কারা ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। আমার তা গ্রহণ করলাম। এর পরেও সিকিমে যাঁরা শ্যুটিং করতে আসবেন, একই রকম সমাদর পাবেন।’’
নেটিজেনরা এর আগে সিকিমে তৈরি অন্যান্য ছবির কথা তুলে ধরে ‘পাহুনা’কে প্রথম ছবি বলে প্রচার করার চেষ্টারও প্রতিবাদ করেছেন।