গোয়া চলচ্চিত্র উৎসবে এক ঝাঁক তারকা। নিজস্ব চিত্র।
৫৩তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অফ ইন্ডিয়া (ইফি) বা ভারতীয় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে গোয়ায়। সেখানে হাজির কলকাতা এবং বাংলাদেশের এক ঝাঁক বাঙালি চলচ্চিত্র তারকা। হাজির অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী, অরিন্দম শীল, বিক্রম ঘোষ, গার্গী রায়চৌধুরী। অন্য দিকে হাজির বাংলাদেশের চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, গিয়াসুদ্দিন সেলিম, নুসরত ফারিয়া। ছিলেন আন্তর্জাতিক অভিনেত্রী বঙ্গতনয়া তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়ও। সবার একই কথা। দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা!
এই বাঙালিদের কেমন সময় কাটছে গোয়ায়? উৎসবে সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে বিশেষ একটি বিভাগ তৈরি হয়েছে। সেখানে দেখানো হয়েছে অনন্ত মহাদেবনের পরিচালনায় ছবি ‘স্টোরিটেলার’। সত্যজিতের তারিণীখুড়োর গল্পের উপর ভিত্তি তৈরি এই ছবি। অভিনয় করেছেন তন্নিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায়, পরেশ রাওয়াল, আদিল হোসেন এবং রেবতী। ছবিটি ভারতীয় প্যানোরামায় প্রতিযোগিতা বিভাগে অংশ নিয়েছে। তন্নিষ্ঠা বলছেন, ‘‘গত দু’বছর অতিমারীর কারণে সবই ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল। আমি গত বছর ইফি-তে এসে দেখেছিলাম, খুবই ভয়-ভয় ভাব কাজ করছিল মানুষের মধ্যে। এ বছর সে সব নেই। সবাই হাসিখুশি, আনন্দে ঘুরছেন। কোনও বাধা-নিষেধ নেই। তা ছাড়া, আমাদের ছবিটি খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছে। মানুষ হলের বাইরে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছেন। আমরা নিজেরাই হলের সিঁড়িতে বসে দেখেছি।’’ ‘স্টোরিটেলার’ ছাড়াও তন্নিষ্ঠার আরেকটি ছবি ‘জোরাম’ প্রদর্শিত হয়েছে ফিল্ম বাজার-এ।
নিজস্ব চিত্র।
অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী হাজির ছিলেন তাঁর হিন্দি ছবি ‘লস্ট’ নিয়ে। এই ছবির অনেকখানি শুটিং কলকাতায় হয়েছিল। অনিরুদ্ধর সঙ্গে হাজির ছিলেন ছবির নায়িকা ইয়ামি গৌতম এবং অভিনেতা পঙ্কজ কাপুর। এই নিয়ে অনিরুদ্ধ তৃতীয় বার ইফি-তে গেলেন তাঁর ছবি নিয়ে। অনিরুদ্ধ বললেন, ‘‘ইফি-তে আমার ছবির প্রিমিয়ারে ভিতরে জায়গার অভাবে বহু দর্শক হলের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ভিতরেও বহু দর্শক দাঁড়িয়ে ছবিটা দেখেছেন।’’
ভারতে কবে মুক্তি পাবে ‘লস্ট’? অনিরুদ্ধ জানাচ্ছেন আগামী বছরের প্রথমার্ধে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে ‘লস্ট’।
অরিন্দম শীল তাঁর ছবি ‘মহানন্দা’ নিয়ে হাজির ছিলেন ইফি-তে। ছবিটি ভারতীয় প্যানোরামায় বাছাই হয়েছিল। অরিন্দমের সঙ্গে ছিলেন ছবির প্রধান অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরী, ছবির সঙ্গীত পরিচালক বিক্রম ঘোষ এবং প্রযোজক ফিরদৌসুল হাসান। অরিন্দমের কথায়, ‘‘উৎসবটা এতটাই পেশাদারিত্বে মোড়া যে, মেজাজই অন্য রকম হয়ে যায়। উৎসবের প্রজেকশন এবং সাউন্ডের গুণমান সাংঘাতিক রকমের ভাল। আমাদের সেটা শিক্ষণীয়। কলকাতার ৬০ শতাংশ হলের এই গুণমান খুব খারাপ। সেটা কী করে ভাল করা যায় আমাদের দেখতে হবে।’’
বাংলাদেশের সুপারস্টার চঞ্চল চৌধুরী ইফি-তে হাজির গিয়াসুদ্দিন সেলিমের পরিচালনায় ছবি ‘পাপ-পুণ্য’ নিয়ে। প্রসঙ্গত, সেলিমের ‘মনপুরা’ বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল। চঞ্চল জানালেন, তাঁরা রেড কার্পেটে হেঁটে উচ্ছসিত। ‘‘আমার খুবই ভাল লাগছে গোয়ায় এসে। সারা দিন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় আর নানা রকমের ছবি দেখে কেটে যাচ্ছে,’’ বলছেন তিনি।
গোয়া মানেই খাওয়া-দাওয়ার স্বর্গ। অনিরুদ্ধ ভোজনরসিক। কী খেলেন জিজ্ঞেস করাতে হাসতে হাসতে বলছেন পরিচালক, ‘‘বহু রকমের মাছ খেয়েছি। আর জি স্টুডিয়ো থেকে একটা পার্টি ছিল। সেখানে এশিয়ান কুইজিন ট্রাই করেছি।’’ তন্নিষ্ঠা প্রাণভরে খেয়েছেন গোয়ার সি-ফুড। ‘‘বিশেষ করে নানা রকমের মাছ,’’ হেসে বলছেন তিনিও।