Subhashree Ganguly

হারিয়ে যেতে যেতেও ফিনিক্সের মতো উড়লেন শুভশ্রী, কেমন করে?

কিন্তু শুভশ্রীর এই পুনর্জন্মের নেপথ্যে কি শুধুই পরিচালক রাজ চক্রবর্তী?

Advertisement

সায়নী ঘটক

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০৫
Share:

অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়।

এভাবেও যে ফিরে আসা যায়, কথাটা আরও এক বার সত্যি প্রমাণ করলেন তিনি। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির মানচিত্রে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় এখন রীতিমতো আলোচিত একটি নাম। যার পিছনে রয়েছে শুধু মাত্র তাঁর অভিনয় প্রতিভা, যে কোনও অভিনেতার জীবনেই যা বিরাট প্রাপ্তি।

Advertisement

অথচ বছর দুয়েক আগে ছবিটা কেমন ছিল? একবার রিওয়াইন্ড করা যাক। ইন্ডাস্ট্রি শুভশ্রীকে প্রায় ভুলতে বসেছিল। ‘দ্যাখ কেমন লাগে’, ‘হনিমুন’, ‘চালবাজ’... পরপর ফ্লপ। এর মাঝে মুক্তির আলো দেখল না কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ধূমকেতু’। শুভশ্রীকে নিয়ে যেটুকু আলোচনা, তা রাজ চক্রবর্তীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে। তার পরে একটা সময়ে পরিচালকের সঙ্গে বিয়ে এবং ‘পরিণীতা’। আক্ষরিক অর্থেই চমকে উঠল ইন্ডাস্ট্রি, দর্শক... প্রত্যেকে। এত স্বাভাবিক এবং অনবদ্য অভিনয় শুভশ্রীর যে, ঋত্বিক চক্রবর্তীর মতো পোড় খাওয়া অভিনেতাও পড়েছিলেন চ্যালেঞ্জের মুখে। রাজ ছবিমুক্তির আগে বলেছিলেন, এই ছবিতে শুভশ্রীর অভিনয় চমকে দেবে। তাঁর কথা অনেকেই তখন নব পরিণীতার প্রতি রাজের প্রশস্তিবাক্য হিসেবে ধরেছিলেন। কিন্তু রাজের কথা যে শুধুই প্রশংসা নয়, সেটা প্রমাণ করেছিলেন তাঁর অর্ধাঙ্গিনী।

কিন্তু শুভশ্রীর এই পুনর্জন্মের নেপথ্যে কি শুধুই পরিচালক রাজ চক্রবর্তী? না কি রয়েছে নায়িকার নিজের মধ্যে থাকা অভিনয়ের খিদে, নিজেকে নতুন ভাবে তৈরি করা?

Advertisement

কেরিয়ারের ‘ব্যাড ফেজ়’ চলাকালীনই রাজের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন শুভশ্রী। তার পরেও বিরতি ছিল কাজে। তাঁর নিজের কথায়, ‘‘কাজ ছাড়া ঘরে বসে থাকতে যে আমার খারাপ লাগে, তা নয়। বরং নিজের সঙ্গে সময় কাটাতে খুব পছন্দ করি।’’ কিন্তু মিমি চক্রবর্তী, নুসরত যখন ফ্রন্ট ফুটে, তখন স্বেচ্ছায় ময়দান ছেড়ে দিলেন? ‘‘এমন কোনও চরিত্র পাচ্ছিলাম না, যেটা আমাকে কিক দেয়,’’ জবাব শুভশ্রীর। আর হাত খালি থাকার সময়টাই ভরপুর কাজে লাগিয়েছিলেন তিনি। ভিতরে-বাইরে গ্রুম করেছেন নিজেকে। ওজন ঝরিয়ে এক দিকে ঝরঝরে হয়েছেন। অন্য দিকে অভিনয়ের তালিম নিয়েছেন সোহিনী সেনগুপ্তের কাছে। রাজের সঙ্গে ‘নান্দীকার’-এর শো দেখতে গিয়ে সোহিনীর সঙ্গে আলাপ। ‘পরিণীতা’র মেহুল এবং নতুন ছবি ‘ধর্মযুদ্ধ’য় মুন্নি হয়ে ওঠার প্রস্তুতি পর্বে শুভশ্রী দ্বারস্থ হয়েছিলেন সোহিনীরই।

‘ছাত্রী’র প্রশংসায় মুক্তকণ্ঠ ‘শিক্ষক’। ‘‘ও যেমন অসম্ভব গ্ল্যামারাস ভাবে নিজেকে ক্যারি করতে পারে, তেমনই পলকে পাশের বাড়ির মেয়েও হয়ে উঠতে পারে। সবচেয়ে বড় গুণ হল, নিজের ভুল-ত্রুটি, সমালোচনা শুনতে পারে নির্দ্বিধায় এবং তা থেকে শেখার ক্ষমতা রাখে,’’ বললেন সোহিনী। এই প্রস্তুতি পর্বের পরে শুভশ্রী এখন এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে, চরিত্র যত জটিলই হোক, তিনি তা ফুটিয়ে তুলতে তৈরি।

‘পরিণীতা’ যেন নতুন জীবন দিয়েছে শুভশ্রীকে। বদলে গিয়েছে তাঁর প্রতি সমালোচক ও দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি। ফল? টলিউডে যেখানে ছবিই তৈরি হচ্ছে খুব কম, বেশির ভাগ নায়িকার হাতে একটির বেশি ছবি নেই, শুভশ্রীর হাতে কিন্তু কয়েকটি ছবি। শুধু ছবিই নয়, এই মুহূর্তে চারটি জাতীয় স্তরের ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত নায়িকা। শুটিংয়ের চাপ এতটাই যে, শীতে এ বার কোনও শো পর্যন্ত করছেন না। ফিটনেস ফ্রিক নায়িকা আবার ফিরেছেন তাঁর পুরনো ছিপছিপে চেহারায়। শর্ট হেয়ারকাটে তিনি আরও গ্ল্যামারাস। সদ্য শুরু করেছেন বাবা যাদবের আগামী ছবির শুটিং। এর পরে তাঁকে দেখা যাবে ‘বিসমিল্লাহ’ ছবিতে ফতিমার চরিত্রে, যেখানে তাঁর বিপরীতে বয়সে বেশ ছোট ঋদ্ধি সেন। চলছে আরও একটি ছবির কথা।

শুভশ্রীর এই পরিবর্তনে রাজ চক্রবর্তীর ভূমিকা তো রয়েছেই। তবে রাজের কথায়, এত দিনের কাজের খিদেই শুভশ্রীকে দিয়ে ওই অভিনয়টা করিয়ে নিয়েছে। আর শুভশ্রী কী বলছেন? ‘‘রাজ একজন কাজপাগল মানুষ। যারা পাগলের মতো কাজ করে, তাদের খুব ভালবাসে ও। আমাকেও এখন সেই দলে ঢোকানোর চেষ্টা করছে,’’ মিষ্টি হেসে নায়িকার উত্তর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement