দেব। ছবি: সংগৃহীত।
প্রকাশ্যে দেবের বহুপ্রতীক্ষিত ছবি ‘টেক্কা’র প্রথম ঝলক। ছবিতে দেব, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও রুক্মিণী মৈত্রের লুক ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে। এ বার সমাজমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রে ছবির এই ঝলক। শুরুতেই দেখা যায়, এক স্কুলপড়ুয়াকে অপহরণ করে পালাচ্ছেন দেব। অপহরণকারীকে ধরতে ঝাঁপিয়ে পড়েন পুলিশের বেশে রুক্মিণী।
দেবের অনুরাগীরা মনে করছেন, ‘টেক্কা’ অভিনেতার কেরিয়ারে মাইলফলক ছবি হতে চলেছে। শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনকে দেব বলেন, “চরিত্রটাকে আগে আমাকে বিশ্বাস করতে হয়েছে। এই ধরনের ছেলেদের কষ্ট হলে এমনই হয় তাঁদের প্রতিক্রিয়া। ‘চাঁদের পাহাড়’-এর শঙ্করকে সিংহের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। ‘টেক্কা’র প্রথম লুকেই বোঝা গিয়েছিল, এমন চরিত্রে আমি আগে অভিনয় করিনি। ‘প্রধান’-এর চরিত্রের সঙ্গেও এর বহু ফারাক। ‘টেক্কা’র চরিত্রে বেশ কিছু গ্রে শেড রয়েছে।”
এই ছবিতে সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান দেব। তিনি বলেন, “ছবিতে সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ, অর্থাৎ সংবাদমাধ্যমেরও একটা ভূমিকা রয়েছে। রাজনীতিবিদেরা কী ভাবে একটি ঘটনাকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেন, তা-ও দেখানো হয়েছে। ছবিতে বিচার পাওয়ার লড়াইও দেখানো হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে আমরা ছবির প্রচার করতে চাই না। এই ছবি বহু আগে তৈরি হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে আমরা এই ছবির শুটিং শেষ করেছিলাম। এই ছবি দেখে ঘটনাচক্রে মনে হতে পারে, বর্তমান পরিস্থিতির বিষয় রয়েছে।”
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আর্টিস্ট ফোরামের আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন দেব। ‘টেক্কা’র ঝলক প্রকাশিত হওয়ার পরেও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। টলি তারকার কথায়, “আমরা কেউ চাই না, আমাদের রাজ্যে ও দেশে কখনও আরজি করের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। প্রত্যেক মহিলা যেন স্বাধীন ভাবে নিজের মনের মতো করে বাঁচতে পারেন, এটাই চাই।”
‘টেক্কা’ র প্রথম ঝলক অনুষ্ঠানে (বাঁ দিক থেকে) শ্রীজা দত্ত, আরিয়ান ভৌমিক, দেব, রুক্মিণী মৈত্র, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এবং সৃজিত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
ইতিমধ্যে আসন্ন দুর্গোৎসব ঘিরেও বিতর্ক চলছে। অনেকেই উৎসব পালন না করার ডাক দিয়েছেন। এর প্রভাব কি ছবির বক্স অফিসে পড়বে? ছবির প্রযোজকও দেব। তাঁর কথায়, “উৎসবটা কী? মানুষকে একত্রিত করে রাখার জন্যই উৎসব হয়। মানুষের মনে প্রতিবাদ থাকলে, তা-ও উৎসবের মাধ্যমেই পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যায়। উৎসব মানে এই নয় যে, কাউকে প্রতিবাদ করতে আটকানো হচ্ছে। কিন্তু আমাদেরও তো কাজ করতে হবে। সকলে তো রোজ চাকরিতে যাচ্ছেন। কত মানুষের রুজিরুটি জড়িয়ে। আমাদের কাছে পাঁচ দিনের খরচ মনে হলেও কিছু মানুষের সংসার চলে এই পাঁচ দিনের রোজগারে। আমরা সরকার-বিরোধী হতে পারি, কিন্তু বাংলার মানুষের বিরোধী তো হতে পারব না। সরকার আজ আছে। পরে হয়তো অন্য কেউ আসবে। কিন্তু মানুষের বিরুদ্ধে তো যেতে পারব না। একটা বিচার পাওয়ার জন্য বাংলার বাকি মানুষের সঙ্গে অবিচার তো করতে পারব না।”
সব শেষে অভিনেতা বলেন, “এই ঘটনার সমাধান একটা নবান্ন ঘেরাও করে হবে না। দেশের আইনে বদল আনতে হবে। মানুষ যাতে এমন ঘটনা ঘটাতে ভয় পায়, তেমন কিছু করতে হবে।”