Tiyasa Roy

Tiyasa Roy: মুখ্যমন্ত্রী এবং মদনদাকে ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করি, ওঁরা বিজেপি করলেও প্রচারে যেতাম: তিয়াসা

‘শ্যামা’ হয়ে পর্দায় আবির্ভাব তিয়াসা রায়ের। ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে। যাত্রা অব্যাহত। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২১ ১৩:১২
Share:

তিয়াসা রায়।

২০১৮ সাল। ‘শ্যামা’ হয়ে পর্দায় আবির্ভাব তিয়াসা রায়ের। ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে। যাত্রা অব্যাহত। সময় গড়িয়েছে, বেড়েছে জনপ্রিয়তা। টিআরপি তালিকাতেও আগাগোড়া প্রথম পাঁচে ঘোরাফেরা করে এই ধারাবাহিক। এ হেন অবস্থায় আচমকা ‘কৃষ্ণকলি’ শেষ হয়ে যাওয়ার গুঞ্জন। এ প্রসঙ্গে তিয়াসা বললেন, “এই সদ্য এক হাজার পর্ব পার করলাম আমরা। জানি না এ ধরনের গুঞ্জন কেন রটে। বিগত ২ বছর ধরে শুনছি কৃষ্ণকলি শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আদৌ তেমন কিছুই হচ্ছে না। এই ধারবাহিক এখনও চলবে।”

Advertisement

যদিও অন্যান্য ধারাবাহিকের মতোই কোনও এক সময়ে ‘কৃষ্ণকলি’-র গল্প ফুরবে। এ কথা তিয়াসা অস্বীকার করেন না। কিন্তু এখনও সেই সময় আসেনি বলে আশ্বস্ত করেছেন অভিনেত্রী।

আমার যেটা ইচ্ছা করবে না, সেটা আমি জোর করে করব না

Advertisement

পর্দায় টানা তিন বছর আটপৌরে ঘরোয়া সাজ। গল্প বদলেছে, চরিত্রের বয়স বেড়েছে। কিন্তু সাজ বদলায়নি একটুও। তিয়াসার কাছে এই সাজ শ্যামার পরিচয়। দর্শকও নাকি তাঁকে এ ভাবেই দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু একই ধরনের চরিত্রে আটকা পড়ে যাওয়ার ভয় নেই তাঁর। অভিনেত্রীর কথায়, “আমার মনে হয় না দর্শকের আমাকে অন্য কোনও চরিত্রে দেখতে অসুবিধা হবে। আপাতত ধারাবাহিকের কাজে ব্যস্ত। ভবিষ্যতে অন্যান্য কাজের প্রস্তাব এলে নিশ্চয়ই করব।” ওটিটির রমরমায় ছোটপর্দার বহু অভিনেত্রী কাজ করছেন ওয়েব সিরিজে। পরবর্তী সময়ে সহকর্মীদের অনুসরণ করে সেই পথে হাঁটতে পারেন তিয়াসা। তাঁর কথায়, “ভাল কাজ পেলে না করার কোনও কারণ নেই। সাহসী দৃশ্যেও আপত্তি নেই। তবে সব কিছুরই একটা সীমা আছে। আমার ক্ষেত্রেও তাই। আমার যে কাজটা করতে ইচ্ছা করবে না, সেই কাজটা আমি করব না।”

শ্যামার সাজে তিয়াসা।

এক সংসারে থাকতে গেলে ঠোকাঠুকি তো হবেই

বিচ্ছেদের মরসুমে টেলিপাড়ায় গুঞ্জন, স্বামী সুবান রায়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হবে তিয়াসার। স্ত্রীর অতিরিক্ত জনপ্রিয়তা নাকি মেনে নিতে পারছেন না সুবান। “একসঙ্গে থাকতে গেলে ঠোকাঠুকি তো হবেই। সেটাকে নিয়ে মানুষ যদি এ ধরনের গল্প বানায়, কী আর বলব। অভিনেতা হলে বোধ হয় এ সব সহ্য করতে হয়। প্রেম, বিচ্ছেদের গল্প ছড়াবে।এ সবের সঙ্গে ধাতস্থ হতে আরও একটু সময় লাগবে হয়তো”, কিছুটা শান্ত হয়ে বললেন অভিনেত্রী।

কিন্তু তিয়াসার অনেক আগে তাঁর স্বামী সুবান ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন। এখানকার রীতিনীতি এত দিনে রপ্ত করে ফেলেছেন তিনি। একই শিক্ষা দিচ্ছেন স্ত্রীকেও। তিয়াসার কথায়, “মাঝেমধ্যে মনে হয় যারা এ সব খবর রটায়, তাদের সামনে গিয়ে প্রতিবাদ করি। সুবানই তখন আমাকে শান্ত করে। ও বলে এ ধরনের কথা নিয়ে বেশি ভাবনা চিন্তা না করতে। আখেরে তাতে আমাদেরই ক্ষতি।” ভাল আছেন তাঁরা।একসঙ্গে আছেন, মন দিয়ে সংসার করছেন। কোনও রকম গুঞ্জন, ট্রোল-কটাক্ষ তাঁদের দাম্পত্যে প্রভাব ফেলে না। আরও একবার সে কথা স্পষ্ট করে তিয়াসা বললেন, “কে কী বলল, এ সব নিয়ে আর ভাবি না। আমাদের নিয়ে যে যা বলছে বলুক, আমরা জানি আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে না।”

স্বামী সুবানের সঙ্গে তিয়াসা।

দিতিপ্রিয়া চলে যাওয়ায় মন খারাপ হচ্ছে

কাজের জন্য ধারাবাহিক দেখার সময় পান না। কিন্তু অবসর পেলেই ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ চালিয়ে বসেন। তিয়াসার কথায়, “এই ধারাবাহিকটা থেকে অনেক কিছুর শেখার আছে। আর দিতিপ্রিয়াও অনবদ্য অভিনয় করেছে।” দিতিপ্রিয়া এবং তিয়াসা, দু’জনেই জি বাংলার দুই জনপ্রিয় ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র। ধারাবাহিকের গল্প আবর্তিত হয় তাঁদের ঘিরে । ফলত টিআরপি-র লড়াই আছে। আছে বন্ধুত্বও। ‘রানিমা’ চলে যাওয়ায় তাই মন ভার ‘কৃষ্ণকলি’-র। “সোনার সংসারের শ্যুটিংয়ের সময় দেখা হয়েছিল দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে। আমরাই বোধ হয় জি বাংলার সব চেয়ে বয়স্ক দুই চরিত্র। নিজেরা ভেবে নিজেরাই হাসছিলাম”, স্মৃতিমেদুর ‘শ্যামা’।

ট্রোলিং দেখে আনন্দ পাই

ধারাবাহিকের গল্পের মতোই কয়েক বছরে বদলেছে তিয়াসার জীবন। এসেছে নতুন সব অধ্যায়। ‘ট্রোলিং’ পর্ব সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। জবা, শ্রীময়ীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মিম স্রষ্টাদের বিষয়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে শ্যামা। তা নিয়ে যদিও আপত্তি নেই তিয়াসার। নিজের মিম দেখে আনন্দই পান তিনি। এ ভাবেই দর্শকদের আরও কাছে পৌঁছে যাওয়া যায় বলে অভিমত তাঁর। “ধারাবাহিকের নায়িকারা এত স্পটলাইট পায়, ট্রোল-মিমও যে তাদের নিয়েই বেশি হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক”, হেসে উঠলেন তিয়াসা।

মদন মিত্রের সঙ্গে তিয়াসা।

রং দেখে রাজনীতির ময়দানে যাইনি, গিয়েছি মানুষ দেখে

মদন মিত্রের প্রচার সঙ্গী তিনি। চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনের সময় একাধিক বার হালকা রঙা সালোয়ার এবং খোলা চুলে মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন তিয়াসা। তৃণমূলকে ভোট দিয়ে জয়ী করার জন্য অনুরোধ করেছেন বারবার। অথচ দলগত রাজনীতিতে নাকি তাঁর বিশ্বাস নেই! তা হলে? অভিনেত্রী জানিয়েছেন, কিছু মানুষের প্রতি ভাল লাগাই তাঁকে রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের রসদ জোগায়।

তিয়াসা বললেন, “দিদিকে আমি খুব সম্মান করি। তিনিও আমাকে খুব ভালবেসে ডাকেন। তাই আমি বারবার যাই। মদনদার ক্ষেত্রেও বিষয়টা তাই। উনি বলেন আমি গেলে মানুষ খুশি হবে।” তাঁর আরও সংযোজন, “এই মানুষগুলো যদি তৃণমূল না করে বিজেপি করতেন, আমি তখনও যেতাম। কারণ এঁদের প্রতি আমার অন্য রকম শ্রদ্ধা ও ভাল লাগা আছে।”

শ্রীময়ীর সঙ্গে যা হল, তা খুব অনুচিত

পর্দায় তাঁরা বিরোধী পক্ষ। শ্যামা এবং রাধারানী। কিন্তু রাধারানী অর্থাৎ শ্রীময়ী চট্টরাজের খারাপ সময়ে তাঁর পাশে ছিলেন তিয়াসা। তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে শ্রীময়ীর নাম জড়িয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, তা মেনে নিতে পারেননি অভিনেত্রী। “শ্রীময়ীর বয়স অনেক কম। সামনে অনেকটা পথ বাকি। তার মধ্যেই এ রকম একটা গুঞ্জন রটল ওকে নিয়ে। যেটা হল, সেটা খুবই অনুচিত”, তিয়াসার গলায় উদ্বেগ স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement