৯৫তম অস্কারের মূল পর্বের অনুষ্ঠানে কোনও রকম তাল কাটতে দেখা গেল না। চোখে পড়ল না কোনও বিতর্ক। — ফাইল চিত্র।
না, চলতি বছরের অস্কারের গায়ে কোনও দাগ লাগল না। ২০২২ সালে অস্কারের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল একাধিক বিতর্ক। স্ত্রীকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে সঞ্চালক ক্রিস রককে অস্কার মঞ্চে চড় মেরেছিলেন অভিনেতা উইল স্মিথ। সেই তিক্ত অভি়জ্ঞতা এখনও অনুরাগীদের মনে টাটকা। পাশাপাশি ৮টি বিভাগের পুরস্কার বিতরণ প্রক্রিয়াকে মূল পর্ব থেকে বাদ দেওয়া নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল।
তবে ৯৫তম অস্কারের মূল পর্বের অনুষ্ঠানে কোনও রকম তাল কাটতে দেখা গেল না। চোখে পড়ল না কোনও বিতর্ক। গত বছরের ‘চড়কাণ্ড’-এর কথা মাথায় রেখেই সময় থাকতেই কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছিল অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষের তরফে। কোনও রকম বেসুরো পদক্ষেপের মোকাবিলায় প্রস্তুত ছিল বিশেষ টিম।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অস্কারে বিশিষ্টদের বক্তৃতা প্রতি বছরেই নজর কাড়ে। উঠে আসে বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু। অস্কার মঞ্চে এক সময় বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালে ‘দ্য রেভেন্যান্ট’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার অস্কার নিতে উঠে মঞ্চে লিওনার্দো ডি’ক্যাপ্রিয়োর নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের অস্কার মঞ্চে সেই ভাবে কোনও উল্লেখযোগ্য বক্তৃতা নজরে আসেনি।
এই বছর অস্কার সঞ্চালক হিসাবে হ্যাট্রিক করলেন জিমি কিমেল। পরিচিত ছন্দেই তিনি সঞ্চলনা শুরু করেন। তবে মজার ছলে তাঁর বক্তব্যের মধ্যেও উঠে এসেছে ‘চড়কাণ্ড’। কিমেল বলেন, ‘‘এই বছর ৫ জন আইরিশ অভিনেতা মনোনীত হয়েছেন। তাই মঞ্চে মারপিট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতেই পারে।’’ এখানেই থেমে না থেকে তিনি আরও বলেন, ‘‘এ বার আমাদের কঠোর নিয়ম। প্রেক্ষাগৃহে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটলে এই ব্যক্তিকে সেরা অভিনেতার অস্কার দেওয়া হবে এবং তার সঙ্গেই দেওয়া হবে ১৯ মিনিট বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ।’’
অন্য দিকে, এই বছর অস্কারে সেরা তথ্যচিত্রের পুরস্কার জেতে রাশিয়ার ‘নাভালনি’। কেন্দ্রে রয়েছেন রাশিয়ার সমাজকর্মী অ্যালেক্সেই নাভালনি। মূলত প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধি শিবিরের মুখ হিসেবে তিনি বিখ্যাত। মঞ্চে পুরস্কার নিতে উঠে ‘নাভালনি’র পরিচালক ড্যানিয়েল রোহের বলেন, ‘‘এই পুরস্কার আমি সারা বিশ্বের রাজনৈতিক বন্দিদের উৎসর্গ করলাম।’’
অবশ্য ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ তথ্যচিত্রের জন্য পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠে কার্তিকি বলেন, ‘‘আমার মাতৃভূমি ভারতকে ধন্যবাদ।’’ এই ছবির প্রযোজক গুনীত মোঙ্গা অস্কার জেতার পর টুইট করেন, ‘‘আজকের রাতটা ঐতিহাসিক। কারণ এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রযোজনা অস্কার জিতল।’’ এর আগে অন্য একটি টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘যাঁরা দেখছেন সেই মহিলাদের বলছি...ভবিষ্যৎ খুবই সাহসী হতে চলেছে এবং সেই ভবিষ্যৎ এখন উপস্থিত। পথ চলা শুরু হোক। জয় হিন্দ।’’