এ সবের মাঝেও সুযোগ এসেছে। তবে ধীর পায়ে। ২০১৬ সালে পরিচালক অরিন্দম শীলের ‘ধনঞ্জয়’ এবং ২০১৮ সালে হরনাথ চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘বাঘবন্দি খেলা’-এ অভিনয় করেছেন তন্ময়। আজও কৃতজ্ঞ দুই পরিচালকের কাছে। মিলে যায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতাও।
‘বাকি ইতিহাস’-এ তন্ময় মজুমদার
১২ বছর আগে বহরমপুরের গ্রাম থেকে কলকাতায়। নবীন শিল্পী হিসেবে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে চেনা। গ্রুপ থিয়েটারের দুনিয়ায় খানিক পরিচিতি তৈরি। তিন বছর আগে নায়ক হিসেবে প্রথম ছবিতে সই করেছিলেন তন্ময় মজুমদার। দেশবিদেশ থেকে ঘরে পুরস্কার এলেও বাংলার প্রেক্ষাগৃহে ‘বাকি ইতিহাস’-এর মুক্তির জন্য মাথার ঘাম পায়ে পড়েছে পরিচালক তুষার বল্লভের। শেষে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে মুক্তি পায় তন্ময়ের প্রথম বড় কাজ। প্রশংসাও মিলেছে খানিক। তবু থামেনি পায়ের তলায় জমি শক্ত করার লড়াই। কিংবা প্রযোজক-পরিচালকদের দরজায় কড়া নাড়া।
২০১২ সালের ছবি ‘চুপকথা’। একটি বাসের দৃশ্যে মুখ্য অভিনেতাদের পিছনে আবছা হয়ে ছিলেন তন্ময়। সেই তাঁর যাত্রা শুরু। কাজ শেষে হাতে আসে মাত্র ১০০ টাকা। পরবর্তী কিছু ঘটনা খুব সুখকর না হলেও সে সব তন্ময়কে শক্ত হতে শিখিয়েছে। নামী প্রযোজনা সংস্থায় ডাক পান। চরিত্রটিও বড়। চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে শ্যুটিংয়ের সেটে পৌঁছন তন্ময়। কাজ শুরুও হয়। তবে তাঁর দাবি, প্রযোজকের পছন্দ না হওয়ায় ছবি থেকেই বাদ দেওয়া হয় তন্ময়কে। অভিনেতার কথায়, ‘‘খুব কেঁদেছিলাম। ভেবেছিলাম, হয়তো সত্যিই কিছু হবে না আমার। তবু লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। যত বার বাদ দেওয়া হয়েছে, তত বেশি জেদ চেপেছে।’’ এর পরে ফের নতুন এক প্রযোজনা সংস্থায় কাজের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু অভিনয়ের বদলে তন্ময় এবং তাঁর এক বন্ধুকে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চা, জলখাবার বানানোর কাজ করানো হত বলে অভিযোগ তাঁর।
তন্ময়
এ সবের মাঝেও সুযোগ এসেছে। তবে ধীর পায়ে। ২০১৬ সালে পরিচালক অরিন্দম শীলের ‘ধনঞ্জয়’ এবং ২০১৮ সালে হরনাথ চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘বাঘবন্দি খেলা’-এ অভিনয় করেছেন তন্ময়। আজও কৃতজ্ঞ দুই পরিচালকের কাছে। মিলে যায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতাও।
এর পরে ২০১৯ সালে ‘বাকি ইতিহাস’- এর চিত্রনাট্য শোনার প্রস্তাব। সে দিনই ছবিতে সই করেন তন্ময়। শুরু হয় প্রস্তুতি পর্ব। গায়ের রং চাপার জন্য প্রতিদিন কড়া রোদে ছাদে বসে থাকতেন তিনি। গায়ে মাখতেন নুন মেশানো সর্ষের তেল। তন্ময় বলেন, ‘‘পাঁচ মাস আমি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, সব বন্ধ করে দিয়েছিলাম অভিনয়ের জন্য, নিজেকে তৈরি করার জন্য। তার পরে শুরু হয় শ্যুট।”
লড়াই এখনও জারি। আপাতত পরবর্তী কাজের সুযোগের অপেক্ষায় বসে বত্রিশের তরুণ। রুপোলি পর্দার হাতছানিতে অবশ্য মঞ্চকে ভোলেননি। নাটক চলছে সমান তালে। সঙ্গে অভিনয়ের প্রশিক্ষণ।