পানিপত- দ্য গ্রেট বিট্রেয়াল-এর একটি দৃশ্য।
পানিপত- দ্য গ্রেট বিট্রেয়াল
পরিচালনা: আশুতোষ গোয়ারিকর
অভিনয়: অর্জুন, সঞ্জয়, কৃতী
৪.৫/১০
ছবির বিষয় তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ। আঠারো শতকের মরাঠি নেতা সদাশিবরাও ভাউ (অর্জুন কপূর) আর আফগান সুলতান আহমদ শাহ আবদালির (সঞ্জয় দত্ত) মধ্যে লড়াই দেখাতে পরিচালক আশুতোষ গোয়ারিকর নিলেন তিন ঘণ্টা! তিনি দীর্ঘ সময়ের ছবি বানিয়েই অভ্যস্ত। ‘মহেঞ্জো দারো’র তিন বছর পরে ফিরে এসেও ‘পানিপত’ তাঁকে টেনে তুলতে পারবে বলে মনে হয় না। কারণ এই দীর্ঘ সময় দর্শককে বসিয়ে রাখতে যে টানটান চিত্রনাট্য, গল্পের জোর এবং মুখ্য চরিত্রের অভিনয় ক্ষমতা থাকা দরকার, তার কোনওটাই পরিচালকের হাতে ছিল না।
ইতিহাসভিত্তিক ছবি এখন বলিউডে আকছার হচ্ছে। গত বছরের ‘পদ্মাবত’-এর সঙ্গে তুলনা তাই এ ছবির ভবিতব্য। তবে ‘সদাশিবের ঘোড়া ঘোড়া কাণ্ড’ মোটেই দাগ কাটতে পারেনি। ছবি জুড়ে পরাজিত মরাঠা নায়ককে বীরের আসনে বসানোর মহা বন্দোবস্ত চললেও আবেগহীন অভিনয়ের জন্যই মাঠে মারা গিয়েছে অর্জুন কপূরের প্রাণপণ চেষ্টা। তুলনায় আহমদ শাহ আবদালি হয়ে সঞ্জয় দত্ত তাঁর স্বকীয়তা বজায় রাখতে পেরেছেন। কারণ আলাউদ্দিন খিলজির চরিত্রে রণবীর সিংহ যে ইমেজ তৈরি করে গিয়েছেন, সেখানে নিষ্ঠুর বদমেজাজি নেতা হয়ে সঞ্জয়কে আলাদা কিছু করতেই হত। ছবির দ্বিতীয় পর্বে কিছুটা প্রাণসঞ্চার করতে পেরেছেন সঞ্জয়।
সদাশিবের স্ত্রী পার্বতীবাইয়ের চরিত্রে কৃতী শ্যানন স্বচ্ছন্দ। আফগান সেনার অভিযানের মুখে হঠাৎ আত্মরক্ষার জন্য তাকে তলোয়ার নিয়ে এগিয়ে যেতে দেখে ধাক্কা লাগলেও পরিচালক তাকে ম্যাজিক করে বিরাট বীর বানিয়ে দেননি। তা বাদে সদাশিব-পার্বতীর প্রেম, বিয়ে ছবির অনেকটা জুড়ে অকারণ সময় নিয়েছে। পরিচালকের সাধুবাদ প্রাপ্য শুধু একটি জায়গায়। গল্পে যতই গোলমাল থাক, যুদ্ধটা তিনি দেখিয়েছেন যত্ন করেই।
ইতিহাসকে এ ধরনের ছবিতে ঘেঁটে দেওয়াই হয়। তবে মরাঠা নেতার মৃত্যুর পরে আবদালি তার বীরত্বের প্রশংসায় চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন— এতটা না দেখালেও বোধহয় চলত!