সব্যসাচী চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত।
দীর্ঘ দিন বামাখ্যাপা ও রামপ্রসাদ সেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চৌধুরী। চরিত্রের খাতির বাস্তবের বহু সাধকের সঙ্গে মিশেছেন। তাঁদের জীবনযাপন দেখেছেন কাছ থেকে। তবে এখনও কোনও রীতিতে বিশ্বাসী নন অভিনেতা। বরং তিনি বিশ্বাস করেন মহাজাগতিক শক্তিতে। তবু, ক্যামেরার সামনে রক্তবস্ত্র পরার পরে তাঁর চোখে মা কালীই সব।
আনন্দবাজার অনলাইনকে সব্যসাচী বলেন, “আমি কোনও রীতিতে কোনও দিনই বিশ্বাস করি না। তবে দিনের শেষে আমি অভিনেতা। চরিত্রকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতেই হবে। তাই রক্তবস্ত্র পরার পরে বড়মাই সব। যদিও ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, অবশ্যই মহাজাগতিক শক্তির অস্তিত্ব রয়েছে।”
তবে এমন বহু ঘটনা রয়েছে, যেখানে মানুষ বাস্তবেই সব্যসাচীকে বামাখ্যাপা বা রামপ্রসাদ ভেবেছেন। অভিনেতার কথায়, “এখন সেই ভাবে কোথাও যাই না। তবে আগে যখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতাম, মানুষের মধ্যে অদ্ভুত এক উত্তেজনা দেখতে পেতাম। দেখেছিলাম, কিছু মানুষের মধ্যে সারল্য ও বিশ্বাস এখনও রয়েছে। বিশেষ করে প্রবীণ মানুষ এই ধারাবাহিক মন দিয়ে ধারাবাহিক দেখেছেন। তাঁরা সবটাই বিশ্বাস করেন। আমার সঙ্গে কথা বলে তাঁরা হয়তো মানসিক শান্তি খুঁজে পেয়েছেন। যে সম্মান মানুষের থেকে পেয়েছি, তা আসলে বামদেবের প্রাপ্য। আমার নয়।”
বামাখ্যাপা ভেবে সব্যসাচীকে বয়সে বড় ভক্তের সাষ্টাঙ্গে প্রণামও গ্রহণ করতে হয়েছে। সব্যসাচী বলেন, “তখন আমি বামদেবের চরিত্রে অভিনয় করছি। মেদিনীপুরের এক গ্রামে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। বহু মানুষ এসে দেখা করেছিলেন। অনেকে সাষ্টাঙ্গে শুয়ে পড়ে প্রণামও করেছিলেন। বিষয়টিতে বেশ অস্বস্তি লাগত।” মেদিনীপুরের সেই অনুষ্ঠানে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল সব্যসাচীর। স্মৃতি হাতড়ে অভিনেতা বলেন, “এক দরিদ্র ব্যক্তি এসে আমার হাতে পঞ্চাশ টাকা ধরিয়ে দেন। সেই টাকা কিন্তু প্রণামী হিসাবে দিয়েছিলেন তিনি। আমি খুবই হকচকিয়ে গিয়েছিলাম। আমি সেই টাকা একেবারেই নিতে চাইনি। কিন্তু তাঁর আকুতি আমি উপলব্ধি করেছিলাম। ওই প্রণামী আসলে আমার জন্য তো নয়। তিনি মনে করছেন, বামদেবকেই ওই প্রণামী দিচ্ছেন। ওঁর কল্পনাতে বামদেবই রয়েছেন।” এই ঘটনা আজও সব্যসাচীর স্মৃতিতে টাটকা। সেই ৫০ টাকার নোটও যত্ন সহকারে রেখে দিয়েছেন অভিনেতা।
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই ওটিটিতে একটি ওয়েব সিরিজ়ের কাজ করেছেন সব্যসাচী। তবে খুব শীঘ্রই আবার ছোট পর্দায় ফেরার পরিকল্পনা রয়েছে অভিনেতার।