তুমি কোথায় তাপস, এই জন্মদিনে?

কেমন আছো? গতকাল রাত ১২টায় আমি আর সোহিনী কেক কেটেছি তোমার জন্য। প্রতিবার যেমন হয় তেমনই। আজ সকাল থেকেই তোড়জোড়। দুপুরে ভাতের সঙ্গে ইলিশ বেগুনের ঝোল, চিংড়ি, দই মাছ, মাংস, মুড়োর ডাল— সব নিজে হাতে রেঁধেছি।

Advertisement

নন্দিনী পাল

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:২৪
Share:

হাসি মাখা সেই মুখ: তাপস পাল। ফাইল চিত্র।

হ্যাপি বার্থ ডে তাপস!

Advertisement

কেমন আছো? গতকাল রাত ১২টায় আমি আর সোহিনী কেক কেটেছি তোমার জন্য। প্রতিবার যেমন হয় তেমনই। আজ সকাল থেকেই তোড়জোড়। দুপুরে ভাতের সঙ্গে ইলিশ বেগুনের ঝোল, চিংড়ি, দই মাছ, মাংস, মুড়োর ডাল— সব নিজে হাতে রেঁধেছি। তুমি তো আমার হাতে ওই রান্নাগুলোই বার বার খেতে চাইতে। আর দোলন, তোমার মেয়ে আজ তার ‘বেস্ট বাবা’-র জন্য চাটনি রান্না করেছে।

আজ খুব মনে পড়ছে জানো, তোমার সঙ্গে দেখা হওয়ার প্রথম দিন! আমি তখন ক্লাস সেভেনে। ভাবছিলাম, তোমার সঙ্গে জীবনের যতটা সময় কাটিয়েছি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গেও অত সময় কাটাইনি। জীবনের সবখানে তুমি! সেই কারণেই তোমার সঙ্গে রাগারাগি, ঝগড়া, কান্নাকাটি, ভালবাসা আমার সব অনুভূতি ভাগ করে নিয়েছি।

Advertisement

একটু আগেই আমি আর দোলন বেরিয়েছিলাম। তুমি মাঝে মাঝেই যে বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে সময় কাটাতে ওখানে গিয়েছিলাম। তোমার জন্মদিন বলে কথা! তোমার প্রিয় মানুষদের নিজের হাতের রান্না দিয়ে এলাম। তুমি তো এগুলোই চাইতে। জানি, তোমার স্বপ্ন একটা বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করার। এই নিয়ে ঢাক পেটাওনি কোনও দিন। সে মানুষ তুমি ছিলে না। অথচ মানুষের পাশে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে যেতে।

হয়েছে আয়োজন, শুধু 'সে' নেই আজ

নিশ্চয় ভাবছ, তোমার সঙ্গে কথা বলতে বলতে তোমার প্রিয় দইয়ের লিস্টটা আমি এ বার বোধ হয় ভুলে গিয়েছি! নাহ, তাপস, আজ পয়োধি আনা হয়েছে। সরের দই এসেছে। বাড়িতে আটার পায়েস হয়েছে।তোমার জন্মদিনে সোহিনীর বন্ধুরা মজা করছে সারা বাড়ি জুড়ে। তুমি যদি আমার সামনে এসে দাঁড়াতে...

আমার একটা অভিযোগ আছে। তোমার দিক থেকে আজকাল কম চিঠি পাচ্ছি! কেন? তুমি তো জানো, আমরা আমাদের সব কথা চিঠিতে লিখতাম। এ কি আজকের অভ্যেস নাকি? সেই কবে থেকে চলছে। যা সামনে বলতে পারতাম না, চিঠিতে বলতাম। আমি কিন্তু আমার একাকিত্ব, মন খারাপ, ভাল লাগা সব জানাচ্ছি তোমায়। চিঠিটা চলুক তাপস আমাদের মধ্যে। ওখানে আমার নিজের সমস্ত আবেগ বলে রাখি। হাল্কা হই। আমি জানি, এক দিন ঠিক উত্তর আসবে।

স্মৃতির পাতায় ডুব: নন্দিনী-তাপস

জানো তাপস, আমার যা যা কাজ করে যেতেই হবে বলে মনে হয় তা খুব দ্রুত সারছি আজকাল। সব দায়িত্ব তাড়াতাড়ি মিটিয়ে এই অধ্যায় শেষ করে দিতে চাই। আসলে মেয়ে আটকে রেখেছে আমায়। আমাদের মেয়ে! ওর জন্য বেঁচে আছি তাপস। হয়তো স্বার্থপর ভাবছো আমায়, ভাব! তবুও বলব, এই অধ্যায় শেষ করতে চাই। তুমি তো জানো, আমি তোমায় ছাড়া কোনও দিন জীবন কাটাইনি। জানিই না কী করে একলা বাঁচতে হয়!

আজ তোমার জন্মদিনে সব হল তাপস! তুমি শুধু থাকলে না।আমাদের মধ্যেই আছো অথচ তোমায় ছুঁয়ে দেখতে পারি না আর।

এ কেমন জন্মদিন তাপস?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement