(বাঁ দিকে) ফ্রিডা কাহলো। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গ্রাফিক : সনৎ সিংহ।
এ বছরের পুজোটা অন্য বছরের তুলনায় আলাদা। হাতে আর এক মাসও নেই। অন্য বছর এই সময় শহরের মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। কোন পুজো কমিটি কী থিম করছেন, তার হিসাব কষা হয়ে যায় এত দিনে। এ বার শহরের চেহারা বদলে গিয়েছে। রাস্তায় নেমেছেন চিকিৎসকেরা। আন্দোলন ও মিছিলে জমজমাট তিলোত্তমা। যদিও মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর কাছে দিন কয়েক আগেই উৎসবে ফেরার আবেদন জানিয়েছিলেন। তার পর সমাজমধ্যমে রব উঠেছে, ‘উৎসবেও আছি, প্রতিবাদেও আছি’।
ঠিক একই সুর অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে কলকাতায় নাগরিক সমাজের প্রায় প্রতিটি মিছিলেই হেঁটেছেন তিনি। রাস্তায় রাত জেগেছেন। আবার বাড়ি ফিরে কাজেও গিয়েছেন। ঘুম নেই। কারণ, তিনি দুটোই করতে চেয়েছেন একসঙ্গে। এই সময়ে দাঁড়িয়ে পেশাগত দায়বদ্ধতা যেমন আছে তাঁর, তেমনই সামাজিক দায়বদ্ধতার তাগিদও অনুভব করছেন।
এ বছর পুজোর কেনাকাটায় বিশেষ মন নেই, বরং জানালেন স্লোগান লিখে রাখছেন স্বস্তিকা। অবশ্য এমন সময়ে ফ্রিডা কাহলোর মতো বিপ্লবী নারীকেই দরকার ফ্যাশনের জন্য সেটাও জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
পুজোর সাজগোজ নিয়ে এ বছর বিশেষ একটা মাথা ঘামাচ্ছেন না। তবে, প্রতি বছরের মতো এ বার সিমা আর্ট গ্যালারিতে আসতে ভোলেননি। প্রতি বারই সেখান থেকে বাড়ির জন্য কিছু না কিছু কিনেই থাকেন। অন্যথা হল না এ বারও। সবই করছেন, তবু প্রতি মুহূর্তে যেন একটা গানই গেয়ে চলেছেন সেটা অরিজিতের গাওয়া ‘আর কবে’।
সময়টা অস্থির, তবু নিজেদের কাজ থামালে চলবে না। আবার কাজের ফাঁকে ফাঁকে যে বিচারের দাবিতে লড়তে হবে সে কথাও জানালেন স্পষ্ট করে।
পোশাক নিয়ে কখনই তাঁর খুব বেশি ছুতমার্গ নেই। তবে ফুল তাঁর বড্ড প্রিয়। পুজোর ক'টা দিন ফুল দিয়ে সাজতে চান তিনি। তবে, সে ক্ষেত্রে ধরনটা হবে খানিকটা মেক্সিকান শিল্পী ফ্রিডা কাহলোর মতো। আসলে স্বস্তিকা নিজেই ফ্রিডার সঙ্গে বেশ কিছু মিল খুঁজে পান। যার মধ্যে অন্যতম হল সাজে ফুলের ব্যবহার। স্বস্তিকার কথায়, ‘‘আসলে ফ্রিডা এমন একজন নারী, যিনি ওই সময়ে দাঁড়িয়ে যেমনটা ভেবেছিলেন সেটা এই সময়ে মনে হয় আমাদের চলার পথে যেন আমাদেরই কথা। ফ্রিডা এমন এক বৈগ্রহিক ব্যক্তিত্ব যাঁকে অনুকরণ করতে ইচ্ছে হয়। নারী হিসেবে ওঁর লড়াই ও স্বতঃস্ফূর্ত চিন্তাভাবনা এই সময় অনেককে পথ দেখাচ্ছে।’’
এমন বিপ্লবের সময় তবে কি ফ্রিডাকেই দরকার ছিল? অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘আমার বিশ্বাস ফ্রিডা এমন সময় বেঁচে থাকলে ইনস্টাগ্রাম পৃথিবীতে সর্বাধিক অনুসরণকারী তাঁরই হত। তিনি কী ভাবে সাজগোজ করছেন সেই ছবি যদি দিতেন, আমি অবশ্যই নকল করতাম সেই সাজ।’’