‘কুলের আচার’-এর কাছেই কি পরাজিত স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়?
নিজের ছবি ‘শ্রীমতী’ নিয়ে লড়াই শেষ। ‘ছবি দেখতে আসুন। আমার মুখ দেখতে আসুন। সেলফি তুলতে আসুন। এলেই তো হল’—প্রচারের স্বার্থে এ ভাবেই নেটমাধ্যমে ঝড় তুলেছিলেন তিনি। তার পরেও মাত্র তৃতীয় সপ্তাহেই বাংলার সমস্ত হল থেকে উঠে গেল ছবিটি। এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থার ‘কুলের আচার’-এর কাছেই কি পরাজিত স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়?
কারও নাম নেননি অভিনেত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে ছবির শেষ শোয়ের পরে শুধু ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ‘ভেবেছিলাম, শুধু নন্দনে আজ আমাদের শেষ শো। তা নয়। পুরো পশ্চিম বাংলাতেই আজ আমাদের ছবির শেষ প্রদর্শন।’ পাশাপাশি, স্বস্তিকা দর্শকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন ‘শ্রীমতী’কে ভালবাসার জন্য। তাঁকেও ভালবাসার জন্য। কারণ, ছবির পাশাপাশি নায়িকার আকর্ষণেও বহু দর্শক প্রেক্ষাগৃহে এসেছেন। সেই সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, ‘আরও ভাল কাজ করার চেষ্টা করব। তবে সেই কাজ আপনাদের অবধি পৌঁছতে কত কাঠখড় পোড়াতে হবে, বা আমি কতটা পারব জানি না।’
অতিমারির কারণে দু’বছরের প্রতীক্ষা। ৮ জুলাই রাজ্য জুড়ে মুক্তি পেয়েছিল অর্জুন দত্ত পরিচালিত ‘শ্রীমতী’। ছবিতে এক ঝাঁক তারকা। তালিকায় সোহম চক্রবর্তী, খেয়া চট্টোপাধ্যায়, তৃণা সাহা, উদয়প্রতাপ সিংহ, বরখা সেনগুপ্ত বিস্ত প্রমুখ। স্বস্তিকাকে ঘিরেই ছবির গল্প। কোনও মেয়ের শুধুই সংসারী হয়ে থাকতে চাওয়াটাও যে অন্যায় নয়, সে কথা বলেছে ‘শ্রীমতী’। প্রথম সপ্তাহ থেকেই দর্শক-প্রশংসিত ছবিটি।
গোলমাল বাধল দ্বিতীয় সপ্তাহে। এসভিএফ-এর ছবি ‘কুলের আচার’ মুক্তি পেতেই সপাট স্বস্তিকা। তাঁর দাবি, ‘শ্রীমতী’ গুণমানে, অভিনয়ে এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও প্রেক্ষাগৃহ পাচ্ছে না। ভাল শো-টাইমও পাচ্ছে না। প্রথম সপ্তাহে ছবিটি দেখানো হয় ১৭টি প্রেক্ষাগৃহ। দ্বিতীয় সপ্তাহে সেই সংখ্যা কমে মাত্র চার! সমস্ত শো-টাইম দুপুরে। স্বস্তিকার দাবি ছিল, শুধুমাত্র নামী প্রযোজনা সংস্থার ছত্রছায়ায় থাকায় অনায়াসে সেই জায়গা দখল করে নিচ্ছে দ্বিতীয় ছবিটি। অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দেয় এসভিএফ।
প্রথম দিন থেকে ভাল ফলাফল। তার পরেও তৃতীয় সপ্তাহে ‘শ্রীমতী’ কোনও হল পেল না। পরিচালক অর্জুনের অভিযোগ কার বিরুদ্ধে? প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁর কথায়, ‘‘কারওর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। ছোট ইন্ডাস্ট্রি। এর মধ্যে ক্ষোভ পুষে রাখলে কাজ করব কী করে! আমার দ্বিতীয় ছবিটিকে দর্শকেরা তিন সপ্তাহ ধরে ভালবেসেছেন। আমি কৃতজ্ঞ।’’ এই ঘটনায় ভাল ছবি বানানোর ইচ্ছে কি সামান্য হলেও টাল খেল? পরিচালকের দাবি, একটুও না। বরং ইচ্ছে বা জেদ কিংবা লড়াইয়ের মানসিকতা আরও বেড়ে গেল। যাঁরা সমর্থন জানিয়েছেন ‘শ্রীমতী’কে, তাঁদের প্রতি দায়বদ্ধ অর্জুন। তাই খুব শীঘ্রই আবার ভিন্ন স্বাদের ছবি তিনি উপহার দেবেন দর্শকদের, এমনটাই আশ্বাস পরিচালকের।