মিমি এবং সুস্মিতা।
বৃষ্টি ভেজা কলকাতার সকাল। হলুদ কুর্তি, সাদা চুড়িদার, চুল টেনে বাঁধা। মিমি চক্রবর্তী সকাল সকাল শপিং মলে হাজির। কুর্তির হলুদ আর তাঁর গায়ের রঙের আভা মিলে মিশে একাকার। মিমির এমন রূপটানহীন মুখ সচরাচর চোখে পড়ে না। আনন্দবাজার অনলাইনেকে মিমি বললেন, “সকালে উঠে গালে শুধু ক্রিম মেখে শ্যুটে চলে এসেছি। আমার চরিত্রের কথা ভেবে গালে হাল্কা কাটা দাগ আর চোখের নীচে কালির রং ওরাই তৈরি করে দিয়েছে”।
অরিন্দম শীলের নতুন ছবি ‘খেলা যখন’-এর শ্যুট শুরু হল মঙ্গলবার। শ্যুটিং ফ্লোরে মুখোমুখি মিমি আর সুস্মিতা (চট্টোপাধ্যায়)। মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রথম সিনেমায় কাজ, প্রশ্নটা শুনেই সুস্মিতা বললেন, “মিমিদি সব সময় আমার প্রিয়। আগে আমরা একসঙ্গে বিজ্ঞাপনের কাজ করেছি। এখন ছবিতে কাজ করছি। অভিজ্ঞ অভিনেত্রী হিসেবে মিমিদি আমায় অনেক সাহায্য করছে।“
পরিচালকের সঙ্গে মিমি।
পরিচালক অরিন্দম শীলও শিখিয়ে পড়িয়ে নিচ্ছেন সুস্মিতাকে। ছবির দৃশ্যে কোনও এক দুষ্কৃতীকে ধরার জন্য কেমন করে ছুটবেন, তা-ও দেখিয়ে দিচ্ছেন পরিচালক। সদ্য শ্যুট শুরু। অরিন্দমের চোখে মুখে চিন্তার ছাপ।
সুস্মিতা গেলেন শটে। শপিং মলের চেয়ারে মিমি আর সুস্মিতা পাশাপাশি। তাঁর আগের ছবি ‘প্রেম টেম’-এর মতো এই ছবিতেও তাঁর চুলের নতুন সাজ। ফ্রিঞ্জ কাট, গোলাকৃতি চশমা, প্যাস্টেল শেডের পোশাকে তিনি তারুণ্যে উজ্জ্বল।
শট শুরুর আগেই মিমি থামিয়ে দিলেন তাঁকে। সুস্মিতার চুল অবিন্যস্ত। কেশসজ্জার শিল্পীকে ডেকে চুল ঠিক করালেন মিমি। তার পর শুরু হল শ্যুট। মিমিকে কী যেন এক দুর্ঘটনার ইঙ্গিত দিয়ে কার যেন পিছনে ধাওয়া করলেন সুস্মিতা।
বলা যাবে না। কিচ্ছু বলা যাবে না। “ এই ছবিতে কাজ করতে গিয়ে এত গভীরে ঢুকে যাচ্ছি যে, আমার সকালে খাওয়া হয়নি সেটাও ভুলে গিয়েছি।“ বললেন ‘ধনঞ্জয়’ ছবির নায়িকা কাব্য সিংহ। শোনা যাচ্ছে, ‘খেলা যখন’-এ মিমির ‘চেহারা’-ও নাকি পরিবর্তিত হবে। সে সব যা হবার বারিপদার রাজার বাড়ি, ওড়িশায় হবে।
শ্যুটের মাঝেই খাবারের ব্রেক। কাছে এগিয়ে এলেন মিমি। শপিং মল থেকেই কেনা খাবার খেতে খেতে চাইলেন চিনি ছাড়া কালো চা। ভাল চিত্রনাট্য আর মনের মতো চরিত্র পেয়ে খোশমেজাজে কাজের ফাঁকে থেকে থেকে গান গেয়ে উঠলেন মিমি, ‘আপকি নাজরোঁ নে সামঝা প্যার কে কাবিল মুঝে’।
মিমির সুরেলা কণ্ঠে প্রেমের গান শুনতে পাওয়া সত্যিই দুর্লভ। প্রেমে কি মন ভিজেছে তাঁর? না। এ সব প্রশ্ন শ্যুটিং ফ্লোরে অবান্তর। সেই গানের ছন্দে মেতে উঠতে না উঠতেই হঠাৎ চোখে পড়ে যায় তাঁর ডান হাতের পোড়া দাগ।
কী হল মিমির! এই দাগ কোথা থেকে এল? পুড়ে গেলেন নায়িকা?
এ সবই খেলার ধারা…
খেলা হচ্ছে।