—ফাইল চিত্র।
মাদকাসক্তের নেশার জন্য টাকা দেওয়ার অর্থ তাঁকে নেশা করায় উৎসাহ দেওয়া নয়।
মাদক চক্রের সক্রিয় সদস্য ছিলেন না রিয়া চক্রবর্তী। নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) অভিযোগ খারিজ করে জানিয়ে দিল বম্বে হাইকোর্ট। মাদক মামলায় বুধবার রিয়ার জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেছে আদালত। সেখানেই এনসিবির অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়।
I am unable to agree with the submission that giving money to another for consuming drug would mean encouraging such habit and would mean "financing" or "harbouring" as envisaged under Section 27A of the NDPS Act. (law on financing drugs, directly or indirectly).
মাদক মামলায় জামিন পেলেন রিয়া চক্রবর্তী। বুধবার সকালে বম্বে হাইকোর্টে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়েছে। তবে রিয়ার ভাই শৌভিকের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। গতকালই নিম্ন আদালত তাঁদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ ২০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল। তাই আপাতত হেফাজতেই থাকতে হবে শৌভিককে।
এ দিন ১ লক্ষ টাকার বন্ডে অভিনেত্রীর জামিন মঞ্জুর হয়। আদালত জানিয়েছে, আগামী ১০ দিন নিকটবর্তী থানায় হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। নিজের পাসপোর্টও জমা রাখতে হবে থানায়। পুলিশের অনুমতি ছাড়া গ্রেটার মুম্বইয়ের বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। বিদেশ যেতে গেলেও আদালতের অনুমতি নিতে হবে তাঁকে।
আদালতে রিয়ার জামিন মঞ্জুর হলে অভিনেত্রীর আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে বলেন, ‘‘আদালতের সিদ্ধান্তে খুশি আমরা। সত্যের জয় হয়েছে। প্রকৃত ঘটনাবলীকেই মেনে নিয়েছে আদালত। আইন মেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারপতি সারং ভি কোতোয়াল।’’
আরও পড়ুন: শুটের বাইরেও মিমি-অনির্বাণ দু’জনে দু’জনকে এতটা খেয়াল করলেন!
বিনা যুক্তিতে রিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন সতীশ মানশিন্ডে। তিনি বলেন, ‘‘আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে বিনা যুক্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল রিয়াকে। বিনা যুক্তিতে এত দিন হেফাজতে রাখা হয়েছিল তাঁকে। তিনটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-কে দিয়ে রিয়াকে হেনস্থা করা হয়েছে। এ বার তা শেষ হওয়া দরকার। আমরা সত্যটাকে বার করে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
রিয়ার পাশাপাশি এ দিন সুশান্তের দুই কর্মচারী দীপেশ সবন্ত এবং স্যামুয়েল মিরান্ডার জামিনও মঞ্জুর করেছে আদালত। ৫০ হাজার টাকা করে বন্ড দিতে হয়েছে তাঁদের। দু’জনের পাসপোর্টও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে সুশান্তকে মাদক সরবরাহ করার অভিযোগ যে আবদুল পরিহারের বিরুদ্ধে, তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়নি।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে মাদক যোগ সামনে আসার পর, গত ৮ সেপ্টেম্বর তাঁর বান্ধবী রিয়াকে গ্রেফতার করে এনসিবি। বলা হয়, রিয়াই সুশান্তের জন্য জোগাড় করতেন। মাদক চক্রের এক জন সক্রিয় সদস্য ছিলেন রিয়া। সুশান্তের জন্য কেনা মাদকের টাকাও মেটাতেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাড়ির অমতে বিয়ে বিবাহিত মহেশকে, অভিনেত্রী সোনি রাজদান রয়ে গেলেন স্বামী-মেয়ের খ্য়াতির আড়ালেই
কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়াই তাঁকে ও তাঁর ভাইকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিয়া। জামিনের আর্জিতে তিনি জানান, মাদক নেওয়ার অভ্যাস ছিল সুশান্তের। তার জন্য কাছের মানুষদের ব্যবহার করতেন তিনি। মাদকের নেশা থেকে সুশান্তকে বার করে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। সুশান্ত বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন, অবসাদগ্রস্ত ছিলেন বলেও দাবি করেন রিয়া। তিনি জানান, সেইসময় পরিবারের লোকজনও সুশান্তের পাশ থেকে সরে গিয়েছিলেন। লকডাউনে সুশান্তের অবস্থার আরও অবনতি হয়।
মাদকের পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিয়া। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মাদক চক্রে যুক্ত থাকা এবং অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও নস্যাৎ করে দেন অভিনেত্রী। কিন্তু রিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ একেবারেই হালকা ভাবে নিচ্ছে না এনসিবি। বরং তদন্তে নেমে বলিউডের মাদক যোগ খতিয়ে দেখতে দীপিকা পাড়ুকোন, শ্রদ্ধা কপূর, সারা আলি খান, রাকুলপ্রীত সিংহের মতো অভিনেত্রীদেরও জেরা করেছে তারা। সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তের দায়িত্ব রয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। রিয়ার বিরুদ্ধে যে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ এনেছে সুশান্তের পরিবার, তা খতিয়ে দেখছে ইডি।