সঞ্জুর সেকেন্ড ইনিংস

জেল থেকে বেরিয়েই চলছে স্ক্রিপ্ট শোনা। কেমন হবে সঞ্জয় দত্ত-র নতুন কেরিয়ারের রোডম্যাপ। লিখছেন ভারতী দুবেপুণের ইয়েওয়াড়া জেলে ৪২ মাস কাটানোর পর অবশেষে ‘ফ্রি’ সঞ্জয় দত্ত-র কাছে প্রশ্ন ছিল, এ বার কী করবেন ‘সঞ্জুবাবা’? সঞ্জয় দু’টো কথা বলেছিলেন: এক, পরিবার, বিশেষ করে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাবেন। আর দুই, আবার কাজে ফিরবেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০০:১১
Share:

পুণের ইয়েওয়াড়া জেলে ৪২ মাস কাটানোর পর অবশেষে ‘ফ্রি’ সঞ্জয় দত্ত-র কাছে প্রশ্ন ছিল, এ বার কী করবেন ‘সঞ্জুবাবা’?

Advertisement

সঞ্জয় দু’টো কথা বলেছিলেন: এক, পরিবার, বিশেষ করে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাবেন। আর দুই, আবার কাজে ফিরবেন।

দু’টো কাজই শুরু করে দিয়েছেন তিনি। প্রথমে সিদ্ধার্থ আনন্দের একটা অ্যাকশন ছবি, তারপর নিজের প্রোডাকশনের উমেশ শুক্লর একটা ছবি, সঙ্গে রাজ কুমার হিরানির ‘মুন্নাভাই’ সিরিজের পরের ছবি, আর একটা ছবি বালাজি মোশন পিকচার্সের।

Advertisement

কর্ণ জোহরের ‘কপূর অ্যান্ড সন্স’‌য়ে গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্সও আছে সঞ্জয়ের। তার মানে ‘অগ্নিপথ’‌য়ের পর আবার ঋষি কপূর-সঞ্জয় দত্ত একসঙ্গে। টুইটও করেছেন ঋষি:
‘‘চলো আবার কিছু মনে রাখার মতো ছবি করি!’’

তবে বলিউড বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মুন্নাভাই দিয়েই সেকেন্ড ইনিংস শুরু করা উচিত সঞ্জয় দত্তের। ‘‘সঞ্জয়ের উচিত এমন রোল বাছা যেখানে উনি কোনও সাপোর্টিং রোলে আছেন। এত বড়
গ্যাপের পর অ্যাকশন ছবি বক্স অফিসে ভাল ব্যবসা নাও করতে পারে। ভুলে যাবেন না, অল্পবয়সিদের মধ্যে কিন্তু সঞ্জুর ফ্যান তেমন
নেই,’’ বলছিলেন ওরম্যাক্স মিডিয়ার শৈলেশ কপূর।

জয়া বচ্চন একবার বলেছিলেন, কেরিয়ার নিয়ে আর একটু সিরিয়াস হলে লেজেন্ড হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারত না ‘সঞ্জুবাবা’কে। দেরি হলেও অবশেষে সে পথে চলা শুরু করেছেন সঞ্জয়। লম্বা ছিপছিপি চেহারার সঞ্জু থেকে হয়েছিলেন ‘সুপার স্টাড সঞ্জয়’, ‘মুন্নাভাই’‌য়ের মতো অন্যধারার ছবির পর আরও একবার নিজেকে ভেঙেছেন তিনি।

সিনেমা বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সঞ্জয় দত্তের অ্যাকসেপ্টেন্স ফ্যাক্টরটা সব সময়ই বেশ বেশি। তরণ আদর্শ যেমন বলছিলেন, ‘‘লোকে বরাবর পছন্দ করেছে সঞ্জয় দত্তকে। জনসাধারণের ভালবাসা পেতে তাই কোনও দিন অসুবিধা হয়নি ওঁর। আর এখন সমালোচকদের প্রশংসাও মিলেছে বিস্তর। ‘অগ্নিপথ’‌য়ের ক্যারেকটার রোল সেটার বড় প্রমাণ। তাই ভাল ক্যারেকটার রোল পেলে সঞ্জয় যে সহ-অভিনেতাকে বেশ কয়েক গোল দিয়ে দিতে পারেন, এটা নিশ্চিত। আর ইন্ডাস্ট্রির সবারও ভীষণ প্রিয় পাত্র সঞ্জয়। জেল থেকে বেরোনোর পর দেখুন না, সবাই কেমন এগিয়ে এসেছে ওঁর সাহায্যে।’’

যেমন শত্রুঘ্ন সিংহ। সঞ্জয় দত্ত জেল থেকে ছাড়া পাওয়ায় খুব খুশি তিনি। টুইট করেছিলেন, ‘‘এ বার থেকে গাঁধীগিরি’’। সঞ্জয়ের ২০০৮য়ের ‘লাগে রহো মুন্নাভাই’‌য়ের রেফারেন্স।

অনেক বিষেশজ্ঞ সঞ্জয়ের অ্যাকশন ছবি করার সিদ্ধান্তকে ভুল বললেও, তরণ আদর্শ এটাকে ঠিক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন। বলছিলেন, ‘‘সঞ্জয় এটা ঠিকই করছেন। একটা সময় তো ওঁকে অ্যাকশন হিরো হিসেবেই ভাবা হত। তার পরে নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে অন্য রকম রোল করলেন। এ বারও যে কমফোর্ট জোন ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন... আমি নিশ্চিত এটাই উনি চেয়েছেন। এটাই ওঁর স্টাইল। আমার বিশ্বাস, এই নতুন ইনিংসটাও প্রথম ইনিংসের মতোই পারফেক্ট হবে।’’

জেলে বসে কিন্তু নিজেকে তৈরি করছিলেন সঞ্জয়। কবিতা লিখেছেন। স্ক্রিপ্ট লিখেছেন। জেলবন্দিদের নিয়ে একটা নাটক পরিচালনাও করেছেন। জেলে লেখা কবিতাগুলো তো আবার খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশিতও হবে। ট্যালেন্ট ম্যানেজার মধু মানতেনা বলছিলেন, ‘‘ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সঞ্জয়কে নিয়ে আগ্রহ সাঙ্ঘাতিক।’’

সঞ্জয়ের প্রাক্তন ম্যানেজার পঙ্কজ খারবান্দা বলছিলেন, ‘‘এটা ওর জীবনের সেরা সময়। এই প্রথম টেনশনমুক্ত সঞ্জুকে দেখলাম। এতদিনকার রুটিন তো ছিল, শ্যুটিং থেকে ফিরে কোর্টে হাজিরা দেওয়া। তেইশ বছরের এই স্ট্রেসটা আর ওকে নিতে হবে না। আমি শুধু বলব, এখন ও যেন একটা সময়ে একটা করেই কাজ হাতে নেয়।’’

সঞ্জয় দত্ত একবার বলেছিলেন, ‘‘আমি ছবি পরিচালনা করতে চাই। একটা অ্যাকশন ছবি।’’ তারপর মুখে স্কুলের ছেলেদের মতো হাসি নিয়ে যোগ করেছিলেন, ‘‘ক্লিন্ট ইস্টউডের মতো।’’ সেকেন্ড ইনিংসে তাই হয়তো অ্যাকশন ছবি করছেন সঞ্জয় দত্ত। ইন্ডাস্ট্রির সঞ্জুবাবা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement