স্টেলা ম্যাক্সওয়েল ও মাইলি সাইরাস।
সমকামী মেয়েদের নিয়ে বিজ্ঞাপনী ভিডিয়োর কথা এখন মুখেমুখে ফিরছে। সম্প্রতি আমেরিকায় সমকামীদের বিয়ের ব্যাপারটা আইনসিদ্ধ হল। এর সমর্থনে বদলে যাচ্ছে সবার ফেসবুকের প্রোফাইল ছবির রং-ও।
মাইলি সাইরাসের মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রী-গায়িকা থেকে শুরু করে ক্রিস্টিন স্টুয়ার্টের মতো অভিনেত্রী— সবাই এখন সমকামী সম্পর্কেই খুঁজে পাচ্ছেন মনের মানুষ।
পাঁচ জন জনপ্রিয় সেলিব্রিটিকে নিয়ে এই লেখা, যাঁরা কিনা সমকামী সম্পর্কেই খুঁজে পেয়েছেন প্রেম এবং সুখ।
হ্যানা মনটেনা নামে এক জনপ্রিয় চরিত্রে মেয়েদের রোল মডেল ছিলেন মাইলি সাইরাস। নিয়মিত নানা সামাজিক সমস্যা নিয়ে কথা বলতেন মাইলি। সেই মাইলি সাইরাসের সঙ্গে প্যাট্রিক শোয়ারজেনেগারের প্রেমটা এখন অতীত। বাইশ বছরের এই তারকা এখন ভিক্টোরিয়া সিক্রেট-এর মডেল চব্বিশ বছরের স্টেলা ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ডেট করছেন। সবার সামনে এখন এই সমকামী জুটির প্রেমকে প্রকাশ করতে কোনও দ্বিধাই নেই। তবে মাইলি বরাবরই নিজের দ্বৈত-যৌনতা নিয়ে কথা বলতে স্বচ্ছন্দ ছিলেন।
‘টোয়াইলাইট’য়ের অভিনেত্রী ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট চার বছর ধরে সহ অভিনেতা রবার্ট প্যাটিনসনের গার্লফ্রেন্ড ছিলেন। হঠাৎ পরিচালক রুপার্ট স্যান্ডার্সের সঙ্গে তাঁর চুম্বনের ছবি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
ফলে যা দাঁড়াল ক্রিস্টেনের সঙ্গে রবার্টের সম্পর্ক গেল ভেঙে। অনেক দিন ক্রিস্টেন অপেক্ষা করেছিলেন রবার্টের ফিরে আসার জন্য। কিন্তু রবার্ট এখন বিয়ে করতে চলেছেন ব্রিটিশ গায়িকা টুইগিকে। আর ক্রিস্টেনকে দেখা যাচ্ছে অ্যালিশা কারগেলের হাত ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে।
অবশ্য এটাও ঠিক যে ক্রিস্টেনের সঙ্গে যখন রবার্টের প্রেম চলছে তখন থেকেই শোনা যেত তিনি নাকি লেসবিয়ান। তবে তখনও ব্যাপারটা প্রকাশ্যে আসেনি। এই প্রথম ক্রিস্টেনের সমকামী প্রেম লোকসমক্ষে এল।
মডেল-অভিনেত্রী কারা ডেলাভিন একটি জনপ্রিয় ফ্যাশন ম্যাগাজিনের সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তাঁর এত খুশি থাকার কারণ তিনি বান্ধবীর প্রেমে পড়েছেন। আর এ কথা যে তিনি বলতে পারছেন মুখ ফুটে এটাও একটা অলৌকিক ব্যাপার। তবে মেয়েদের প্রতি তাঁর আকর্ষণের কথা কারা নিজেই একটা সময় বিশ্বাস করতে পারতেন না, এমনটাও বলেছিলেন সেই ইন্টারভিউয়ে। তিনি যে পুরুষদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন না তেমনটাও নয়। কিন্তু মেয়েরাই তাঁকে বেশি আনুপ্রাণিত করে।
এঁদের আগে অন্য যাঁরা লেসবিয়ান সম্পর্ক নিয়ে খোলামনে কথা বলেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এলেন ডিজেনেরেস। ২০১৪-র অস্কারের ‘হোস্ট’ ছিলেন তিনি। এই অস্কারে এলেনের তোলা সেলফি এত শেয়ার হয়েছিল যে অনেকের পক্ষে টুইটারে চোখ রাখাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল। টুইটার ক্র্যাশ করে গিয়েছিল সেই দিন। এলেন বরাবরই তাঁর যৌনতা সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলতে ভালবাসেন। ওঁর নিজস্ব একটা টক শো আছে। ২০০৮ সালে তিনি বান্ধবী পোর্শিয়া দি রোসিকে বিয়ে করেন।
‘সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি’ সিরিয়ালের মিরান্ডা হবসকে সবাই ভাল বন্ধু হিসেবেই জানেন। তিনি যে হঠাৎ লেসবিয়ান হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করবেন এটা কারও চিন্তাভাবনার মধ্যেই ছিল না। ২০০৯ সালে তিনি তাঁর পার্টনার খ্রিস্টিন মারিকে বিয়ে করেন একটা মিছিলে। সমকামী বিবাহের সমর্থনেই ছিল সেই মিছিল। ওঁদের এখন দু’টি সন্তান।
সমকামী মিছিলের মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে যে সম্পর্কের শুরু তা যেন সন্তানদের মাধ্যমে একটা বৃত্ত সম্পুর্ণ করল। আমেরিকায় সমকামী বিবাহ আইনানুগ হওয়াতে এই সব সম্পর্ক এখন আর নিষিদ্ধ নয়।