বিজ্ঞাপনের দুনিয়ায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এক পরিচিত মুখ। মিউজিক ভিডিয়োতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে ছোট পর্দায় সব জায়গায় তাঁর ইমেজটা ধারাবাহিক ভাবে একই রকম রয়ে গিয়েছে। চোখে চশমা, ঠোঁটে হাসি আর ফর্মাল পোশাক। কিন্তু এই প্রথম সেই ইমেজটা ভেঙে ফেললেন তিনি। লর্ড অব দ্য গ্রিন—অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার প্রথম প্রোমোশনাল ভিডিয়োতে সৌরভের ইমেজ একদম অন্য রকম। স্যুট-টাই ছেড়ে সৌরভ গলিয়ে নিয়েছেন একটা লাল হুডি! চশমা ছাড়া এমন রাগেড লুকে আগে তাঁকে কেউ দেখেনি বললেই চলে। বিজ্ঞাপনের বা মিউজিক ভিডিয়োর দুনিয়াতে তো নয়ই।
তার সঙ্গে একগাল খোঁচা খোঁচা দাড়ি। হয়তো এক সপ্তাহ না কামানোর ফল। ‘দাদাগিরি’ বা ধারাভাষ্যের বক্স-য়ে সৌরভের যে সফিস্টিকিটেড ভাবমূর্তি দেখে তাঁর ফ্যানেরা অভ্যস্ত, সেটা থেকে একদম বেরিয়ে এসে অন্য এক লুক-য়ে তিনি। অন্য মেজাজে দেখা যাচ্ছে তাঁকে এই ভিডিয়োতে।
কেন এমন একটা রদবদল করলেন সৌরভ?
প্রথমে এই ভাবনা ছিল না
ইন্ডিয়ান ফুটবল লিগের অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার জন্য এই ভিডিয়ো পরিচালনা করেছেন রিংগো। এর আগে সৌরভের সঙ্গে বিজ্ঞাপন করেছেন তিনি। কথায় কথায় রিংগো জানালেন প্রথমে এই ইমেজ পাল্টানোর কথা ভাবা হয়নি। “আমাকে বলা হয়েছিল যে এটা এমন একটা ভিডিয়ো যেখানে একটা প্যান্ডেলে সৌরভ আসবে ধুতি পাঞ্জাবি পরে। প্যান্ডেলে ফুটবলারদের সঙ্গে সৌরভের দেখা। তার পর ম্যাচ শুরু। আর এর মধ্যে সব্বার জামাগুলো চেঞ্জ হয়ে যাবে অ্যাটেলেটিকো ডি কলকাতার জার্সিতে,” বললেন রিংগো। প্রস্তাবটা ভাল হলেও পরিচালকের মনে হয় যে এই রকম একটা ভিডিয়োর সঙ্গে অন্য বিজ্ঞাপনের তফাত কী থাকবে? পুজো প্যান্ডেলে সৌরভ এই ইমেজারির মধ্যে নতুনত্ব তেমন নেই। ঠিক হয় অন্যান্য ভাবনা নিয়ে এগোবেন তিনি।
ভাবমূর্তি পাল্টাতে হবে
এই প্রথম ক্রিকেট ছেড়ে ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন সৌরভ। তাই ক্রিকেটার সৌরভের ইমেজ ভাঙার প্রয়োজনটা যেমন ছিল ঠিক ততটাই দরকার ফুটবল খেলার কথাটা মাথায় রেখে একটা নতুন লুক তৈরি করার। “জল, ঘাম, কাদা ফুটবল ভাবলেই এই সব মনে পড়ে। স্যুট-টাই বা ধুতি-পাঞ্জাবি পরে সৌরভকে দিয়ে ভিডিয়ো শু্যট করলে এই ইমপ্যাক্টটা আসত না। আমি ভিডিয়োতে মেহনতি মানুষের ইমেজারি ফোটাতে চেয়েছি,” জানান রিংগো।
গ্ল্যাডিয়েটর চাই
পুজো প্যান্ডেল ছেড়ে ফাঁকা স্টেডিয়াম। ধুতি-পাঞ্জাবি লুক ছেড়ে হুডি। “চেয়েছিলাম একটা গ্ল্যাডিয়েটর ইমেজ তৈরি করতে। পোশাক হিসেবে সৌরভকে বললাম একটা হুডি পরতে। শু্যটিংয়ের আগে শ্যাম্পু করতে মানা করে দিয়েছিলাম,” জানান পরিচালক। আর ওই একগাল দাড়ি? কী ভাবে রাজি করালেন সেটাতে? “আপত্তি করেনি। গ্ল্যাডিয়েটরের ইমেজটার জন্য ক্লিন শেভ লুকটা ভাল লাগত না,” বললেন পরিচালক।
শ্যুটিং শুরু
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শ্যুটিং। ২৫ সেপ্টেম্বর সারাদিন। “শ্যুটিংয়ের মাঝে কত পুরনো কথায় ফিরে যায় সৌরভ। হঠাৎ বলে কেন এই যুবভারতী ওর কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রেগ চ্যাপেল এপিসোডের পর এক দিন ও নাকি স্টেডিয়ামে এসে ২০ পাক দৌড়েছিল। কোনও বিশ্রাম না নিয়েই। শুধুমাত্র নিজের কাছে এটা প্রমাণ করার জন্য যে ফিটনেসটা ওর কাছে কোনও সমস্যাই নয়!” বলেন রিংগো।
আরও একটা ভিডিয়ো বাকি
তবে এই একটা ভিডিয়ো করেই থেমে থাকবেন না সৌরভ। কুড়ি অক্টোবরের পরে আরও একটা ভিডিয়ো শু্যট করার কথা। ওখানে অবশ্য হুডি লুকটা ব্যবহার করা হবে না। আরও এক বার কী ভাবে সৌরভের ইমেজ মেক ওভার করা হবে তা নিয়ে চলছে এখন জোর আলোচনা।