চন্দন, জয়া, সৌকর্য
বঙ্গভঙ্গের উত্তাল সময়ের প্রেক্ষাপটে নতুন ছবির গল্প বুনেছেন পরিচালক সৌকর্য ঘোষাল। তাঁর পরিচালিত প্রত্যেকটি ছবিতেই দর্শককে ভিন্ন স্বাদের গল্প উপহার দিয়েছেন, সেটা ‘পেন্ডুলাম’ হোক ‘রেনবো জেলি’ বা ‘রক্তরহস্য’। তবে নতুন ছবি ‘কালান্তর - বঙ্গভঙ্গের বিপ্লবী যুগ’-এর বিষয় ইতিহাসনির্ভর বলে এবারের চ্যালেঞ্জটা বোধহয় সবচেয়ে কঠিন। এই প্রথম সৌকর্যর সঙ্গে ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন তাঁর স্ত্রী পূজা চট্টোপাধ্যায় ও প্রিয়ক মিত্র। গত দেড় বছর ধরে এর জন্য টানা পড়াশোনা করেছেন তাঁরা। ‘‘আমি ইতিহাসের ছাত্র, তাই চাইনি আমার ছবিতে ইতিহাসে কোনও ভুল থাকুক,’’ বললেন পরিচালক। অরবিন্দ ঘোষ বা বাঘাযতীনের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীর সঙ্গে ছবিতে উঠে আসবেন এমন বহু বিপ্লবী, যাঁদের নাম অনেকে জানেন না। ইতিহাসে তাঁরা উপেক্ষিত। ঐতিহাসিক চরিত্রের পাশাপাশি কাল্পনিক চরিত্র মিশিয়ে লেখা হয়েছে ‘কালান্তর...’-এর গল্প। ছবিটিতে অভিনয় করছেন জয়া আহসান, কৌশিক সেন, চন্দন রায় সান্যাল, ঋদ্ধি সেন, সুরাঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
ছবির গল্প প্রসঙ্গে সৌকর্য বললেন, ‘‘১৯০৫ সালে ইংরেজরা যখন বাংলা ভাগ করার পরিকল্পনা করছে, তখন বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর এর বিরোধিতা করে। বাংলায় সশস্ত্র বিপ্লব শুরু হয় মূলত অরবিন্দ ঘোষের নেতৃত্বে। সেই বিক্ষুব্ধ সময়টাকে ধরার চেষ্টা করব ছবিতে। তার বছর কয়েক আগে সিআইডি তৈরি হয়েছে। ইংরেজরা এই সংস্থার মাধ্যমে ভীষণ ভাবে স্পাইয়িং করত। বিপ্লবীরাও তখন পাল্টা গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করে। এই কাজে বহু আনসাং হিরো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং জীবন দেয়। চার্লস টেগার্ট ছিলেন তখন গোয়েন্দা প্রধান, একদিকে তিনি এবং অন্য দিকে বাঘাযতীন ও যুগান্তর দলের অরবিন্দ ঘোষ সহ অন্যান্য বিপ্লবীরা। তাঁদের এই ত্যাগ ও বীরত্বের কারণে শেষ পর্যন্ত বঙ্গভঙ্গ আটকে যায়। এর পরবর্তীতে ভাইসরয় বদলে যায়, দেশের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়।’’
বাঘাযতীন ও অরবিন্দের চরিত্রে নবাগত অভিনেতারা অভিনয় করবেন। ‘‘এই চরিত্রে অভিনেতা নির্বাচনে আমি মুখের সাদৃশ্যকে প্রাধান্য দিয়েছি,’’ বললেন তিনি। ছবিতে এক বিপ্লবীর চরিত্রে অভিনয় করছেন জয়া। এর আগে তিনি সৌকর্যর পরিচালনায় ‘ভূতপরী’ ও ‘ওসিডি’-তে অভিনয় করেছেন। চন্দন রয়েছেন এক পুলিশের চরিত্রে। ঋদ্ধিও অভিনয় করছেন এক বিপ্লবীর চরিত্রে। এবং সুরাঙ্গনা বিপ্লবীদের সহযোগীর ভূমিকায়, যে বিপ্লবী ডেরায় বিভিন্ন খবর পৌঁছে দেয়। ছবিটির জন্য সুরাঙ্গনাকে শাড়ি পরে সাইকেল চালানোও শিখতে হচ্ছে। ছবির শুটিং শুরু হবে এ মাসের ১৮ তারিখ থেকে। শুটিং হবে মূলত কলকাতায় এবং ঝাড়খণ্ডে।