ভাবনার ছাপ পরিবেশনে নেই

সেই ‘সেক্স’ নিয়েই যত গোল বেদী পরিবারে। বাপ মরা মেয়ে বেবি বরাবরই তার মামার ন্যাওটা। মামা ইউনানি হাকিম, সেক্স ক্লিনিক চালায়।

Advertisement

দেবাশিস চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৫
Share:

সোনাক্ষী

এস, ই, এক্স— সেক্স। তিন অক্ষরের শব্দটি নিয়েই যত গোলমাল। এই শব্দ মানেই ‘নিষিদ্ধ’ গন্ধ। এবং যতই বজ্র আঁটুনির চেষ্টা, ততই সেক্সের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় ফস্কা গেরোর মতো। কিন্তু এ শব্দ তো প্রকাশ্যে উচ্চারণ করা যাবে না। বাচ্চাদের সামনে কদাচ নয়। গুরুজনের সামনে মুখ ফস্কে যদি বেরিয়েও যায়, সকলের মুখ ঘুরে যাবে অন্য দিকে!

Advertisement

সেই ‘সেক্স’ নিয়েই যত গোল বেদী পরিবারে। বাপ মরা মেয়ে বেবি বরাবরই তার মামার ন্যাওটা। মামা ইউনানি হাকিম, সেক্স ক্লিনিক চালায়। সেখানে মাঝেমধ্যেই ঢুকে পড়ে ছোট্ট ভাগ্নী। এক দিন সাইনবোর্ড লিখিয়ে সেক্সের ভুল বানান লিখে আনে। তাকে সকলের সামনে শুধরে দেয় বেবি। দেখে ফেটে পড়ে বেবির মা।

কিন্তু বিধি খণ্ডাবে কে? মারা যাওয়ার আগে মামা তার প্রিয় ভাগ্নীর নামে লিখে দিয়ে যায় সেই সেক্স ক্লিনিক, ‘খানদানি শফাখানা’। প্রথম থেকেই সেই ক্লিনিক নিয়ে আপত্তি ছিল বেবির মায়ের। তাকে না জানিয়েই ক্লিনিকে গিয়ে বসতে শুরু করে বেবি। সেক্স ক্লিনিক চালাবে একটি মেয়ে— ট্যাবুতে বাঁধা এই সমাজ সেটা মেনে নিতে অপারগ। ফলে ঘরে-বাইরে সংঘাতের মুখে পড়ে বেবি। শেষে ডাক্তারি বা হাকিমি পাশ না করেও ক্লিনিক চালানোয় তাকে জেলে যেতে হয়।

Advertisement

খানদানি শফাখানা
পরিচালনা: শিল্পী দাশগুপ্ত
অভিনয়: সোনাক্ষী, অন্নু, বাদশা
৪.৫/১০

সেক্স নিয়ে সমাজের গোঁড়া দৃষ্টিভঙ্গি কেই ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন পরিচালক শিল্পী দাশগুপ্ত। বিষয় নতুন নয়। এর আগে ‘ভিকি ডোনার’-এ এই ধরনের সমস্যা নিয়ে নাড়াচাড়া করা হয়েছে। ‘পিকে’-তে কন্ডোমের প্রসঙ্গ এসেছে। ‘খানদানি শফাখানা’র গল্পটি যে ভাবে ফেঁদেছিলেন পরিচালক, তাতে অবশ্যই নতুনত্ব আছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। নিজের সেরা অভিনয় দিয়েও সোনাক্ষী সিংহ উতরোতে পারেননি ছবিটিকে। বরুণ শর্মা, অন্নু কপূর, কুলভূষণ খারবান্দার মাপমতো অভিনয়ও তাই জলে যায়। র‌্যাপস্টার বাদশাকে এনে চমক দিতে চেয়েছেন পরিচালক। কিন্তু তা-ও দাগ কাটতে পারেনি। প্রিয়াংশু জোরার অভিনয় অবশ্য দুর্বল। তবে দুঃখ হয় বাংলার রাজেশ শর্মার জন্য। বিচারকের ভূমিকায় চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু চিত্রনাট্যে বিশেষ সুযোগ ছিল না।

ছবিটি এত গতিহীন এবং মাঝে মাঝে এতটাই বিক্ষিপ্ত যে মনে হয়, পুরো ‘সিচুয়েশন’ নিয়ে না ভেবেই কাজ শুরু করেছিলেন পরিচালক। ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, সেক্স নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করা যে খুব জরুরি, সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন তাঁরা। সিনেমায় সামাজিক বার্তা থাকতেই পারে, বিশেষ করে যৌনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে। কিন্তু সেটাই যদি একমাত্র উদ্দেশ্য হয়, তা হলে শত ‘সেক্স’ জুড়েও দর্শককে হলমুখো করা যাবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement