আয়ুষ্মান, ভিকি, রাজকুমার
একটা-দুটো ছবির বক্স অফিস ব্যর্থতা দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির তাবড় খানদের জনপ্রিয়তা পরখ করা ঠিক নয়। তবে একই বছরে যখন সলমন-আমির-শাহরুখের ছবি বক্স অফিসে ডাহা ফেল, তখন খানপ্রেমী ও অপ্রেমীদের মনে উঁকি মারে অনিশ্চয়তা। তবে কি খানদের দাপট অস্তাচলে? ছবি চালানোর জন্য তাঁদের নাম ও জৌলুসে ভাটা পড়েছে? চিন্তা আরও বাড়ে, যখন পাশ দিয়ে পর পর বলে ছক্কা হাঁকাচ্ছেন রাজকুমার রাও, ভিকি কৌশল ও আয়ুষ্মান খুরানা। যাঁদের কেরিয়ারের বয়স দশও পেরোয়নি!
সলমনের ‘রেস থ্রি’, আমিরের ‘ঠগস অব হিন্দোস্তান’, শাহরুখের ‘জ়িরো’... তিন খানের তিনটি ছবিই দর্শককে নিরাশ করেছে। তার মধ্যে আমির-শাহরুখের দুটি ছবিই ভরাডুবি! সলমনের নিজস্ব ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি থাকলেও, সেফ আলি খানের ‘রেস’-এ তাঁর অভিষেক সুখকর হয়নি। যদিও গত কয়েক বছরে সলমনের ট্র্যাক রেকর্ড বলছে, একটা ছবি না চললেই পরের ছবি দিয়ে কামব্যাক করেন ভাইজান।
তবে যাঁর ঘুরে দাঁড়ানোর অপেক্ষায় আপামর দেশবাসী দিন গুনছেন, তিনি দু’হাত ছড়িয়ে দাঁড়াচ্ছেন বটে, কিন্তু তাতে ম্যাজিক হচ্ছে না! শাহরুখের ‘জব হ্যারি মেট সেজল’-এর ব্যর্থতার পরে বুক বেঁধে রেখেছিলেন অনেকেই। কারণ এ বারে বাদশা জুটি বেঁধেছিলেন আনন্দ এল রাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না!
তারকাদের নামেই যে ছবি চলে না, হালে তার প্রমাণ বারবার মিলেছে। দর্শক টানতে নিজের নামের ব্র্যান্ডের সঙ্গে মেলাতে হবে যুগোপযোগী কনটেন্ট, যা হাতেনাতে করে দেখাচ্ছেন অক্ষয়কুমার। তাই খানদের তুলনায় তিনি অনেকটাই নিরাপদ। এই বছরে তাঁর
দুটি নিজস্ব রিলিজ় ‘প্যাডম্যান’ ও ‘গোল্ড’ বক্স অফিসে চলেছে। রজনীকান্তের সঙ্গে তাঁর ‘টু পয়েন্ট ও’র মতো মেগা বাজেটের ছবিও চুটিয়ে ব্যবসা করেছে।
ব্র্যান্ডের জোর ছাড়া শুধু কনটেন্ট আর অভিনয়কে বাজি করেই সফল হয়েছেন ভিকি, রাজকুমার ও আয়ুষ্মান। রাজকুমারের ‘স্ত্রী’, আয়ুষ্মানের ‘বধাই হো’ বক্স অফিসে অভাবনীয় অঙ্কের ব্যবসা করেছে। রণবীর কপূরের দাপুটে অভিনয়ের পাশাপাশি ‘সঞ্জু’তে নজর কেড়েছেন ভিকি। ‘রাজ়ি’ এবং ‘মনমর্জ়িয়া’তেও তিনি সপ্রতিভ।
এই তিন নায়কের সম্পদ, তাঁদের স্টারডম নয়। বরং যে কোনও চরিত্রের ছাঁচে যে ভাবে তাঁরা অনায়াসে প্রবিষ্ট হতে পারেন, সেটাই তাঁদের ইউএসপি। নায়কের লার্জার-দ্যান-লাইফ ইমেজের পরিবর্তে ঘরোয়া মধ্যবিত্তের সাদামাঠা, চেনাজানা রূপেই তাঁরা দর্শক টানছেন।
সেই লিগে খেলার চেষ্টা করেছেন বরুণ ধওয়নও। আগের বছরে দু’টি রিলিজ় ‘অক্টোবর’ ও ‘সুই ধাগা’য় তিনি আম আদমি। অন্য দিকে ব্যবসার নিরিখে বছরের সবচেয়ে সফল ছবিগুলোর মধ্যে দু’টি নিজেদের দখলে রেখেছেন দুই রণবীর। ‘সঞ্জু’ দিয়ে টাল খাওয়া কেরিয়ারে পাল উড়িয়েছেন রণবীর কপূর। অন্য দিকে ‘পদ্মাবত’-এ আলাউদ্দিন খিলজির চরিত্রে রণবীর সিংহের অভিনয় দারুণ প্রশংসিত। বাঁধাগতের ‘সিম্বা’ দিয়েও তাঁর জয়যাত্রা অব্যাহত রাখবেন বলেই ইন্ডাস্ট্রির মত।
খানদের গোল দিয়ে সাফল্যের নতুন সংজ্ঞা লিখেছেন নতুন প্রজন্মের অভিনেতারা। তাই আগামী দিনে তাঁদের মাত দিতে খানদেরও কোমর বেঁধে নামতে হবে। শুধু ফ্যান বেসকে ভরসা করে নয়, টানতে হবে নয়া প্রজন্মকেও।