মৌ সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত।
তিনি এখন প্রবাসী বাঙালি। থাকেন আয়ারল্যান্ডে। সঙ্গীতশিল্পী মৌ সুলতানা প্রায় ছ’বছর পর আবার বাংলায় গান গাইলেন। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুমুদিনী ভবন’ ওয়েব সিরিজ়ে তাঁর কণ্ঠে ‘এ পথে জীবন’ গানটি চর্চায় রয়েছে।
২০০৪ সালে কলকাতা থেকে পাকাপাকি ভাবে বিদেশে চলে যান মৌ। বাংলা ইন্ডাস্ট্রি থেকে এই দূরত্বের কারণ কী? আয়ারল্যান্ড থেকে শিল্পী ফোনে বলছিলেন, ‘‘অনেকগুলো কারণ ছিল। তখন কৈশোরকাল। ওই সময়ের সব কিছু মনেও থাকে না। তবে কিছু কারণ তো রয়েইছে। তার মধ্যে আবার সব বলতেও চাই না।’’ তবে বলার মতো কারণও খোলসা করলেন মৌ। বর্তমানে একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হিসাবে কাজ করছেন তিনি। বললেন, ‘‘এখন বুঝতে পারি। তখন চারপাশে প্রত্যেকেই বয়সে বড়। অসম্মান এবং হেনস্তার পার্থক্য বুঝতে পারিনি। অস্বস্তি হত। নিজেকে সুরক্ষিত মনে হয়নি।’’ কিন্তু কলকাতা ছাড়তে হয়েছে বলে মনে কোনও রকম ‘অভিমান’ পুষে রাখেননি মৌ। বললেন, ‘‘আমি এগোতে পারছিলাম না। নতুন কিছু শেখার তাগিদ থেকেও কলকাতা ছেড়েছি।’’
এর আগে নচিকেতা বা অঞ্জন দত্তের লেখা গান গেয়েছেন মৌ। এই সিরিজ়ের জন্য দীর্ঘ দিন পর অন্য কারও লেখা গান গাইলেন তিনি। অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘রোমাঞ্চকর গল্পকে মাথায় রেখে গানটা লেখা। পছন্দ হয়ে গিয়েছিল। এখানে আমার বাড়িতে স্টুডিয়োতে বসেই রেকর্ড করেছিলাম। আর অনলাইনে কলকাতা থেকে ওরা আমাকে নির্দেশ দিচ্ছিল। অন্য রকম অভিজ্ঞতা।’’
‘কুমুদিনী ভবন’ ওয়েব সিরিজ়ে অম্বরীশ ভট্টাচার্য এবং উষসী রায়। ছবি: সংগৃহীত।
এই মুহূর্তে রোগীদের চিকিৎসা করার পাশাপাশি নিজের মতো সঙ্গীত নিয়ে সময় কাটে মৌয়ের। গান লেখেন, সুর করেন। তবে অন্য কারও জন্য নয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত জগতের খুব বেশি খবরাখবর রাখতে পারেন না বলে একটু হলেও হতাশা কাজ করে শিল্পী মননে। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে তো বাংলা রেডিয়ো আসে না। মূলত ফেসবুকে খবর পেয়ে তার পর ইউটিউবে শুনি।’’ মৌয়ের গানের নিজস্ব স্টাইল সম্পর্কে শ্রোতারা অবগত। তবে বাংলায় নচিকেতার ভক্ত মৌ। বলছিলেন, ‘‘উনিই আমাকে প্রথম গানের সুযোগ দিয়েছিলেন। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে। তাই কলকাতায় ওঁর থেকে বড় অনুপ্রেরণা আমার নেই।’’
স্বামী, সন্তান নিয়ে ভরা সংসার মৌয়ের। বিদেশে থাকলেও বাংলা থেকে এখনও গানের প্রস্তাব আসতেই থাকে মৌ-এর কাছে। তাঁর কথায়, ‘‘তবে বেশির ভাগই না বলি। কারণ অন্য কারও লেখা গানে সচরাচর রাজি হতে চাই না। তার জন্য অনেকেই আমাকে নাক উঁচু মনে করেন।’’ কলকাতায় আসার এখনও কোনও পরিকল্পনা নেই মৌ-এর। হেসে বললেন, ‘‘হাসপাতাল, নিজের চেম্বার, কলেজের ক্লাসের পর সপ্তাহে সময়ই থাকে না। ইচ্ছে তো করেই। কিন্তু কবে ছুটি পাব, সেটাই জানি না।’’