জিয়াগঞ্জের জন্য নতুন উদ্যোগ অরিজিতের। ফাইল চিত্র।
তাঁর কণ্ঠের জাদুতে মজে থাকে সারা দেশ। তবে অরিজিৎ সিংহ আছেন অরিজিতেই। মায়ানগরী মুম্বইয়ের চাকচিক্য তাঁকে ছুঁতে পারেনি। এখনও তিনি মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জবাসীর কাছে ‘ঘরের ছেলে’। যাঁকে মাঝেমাঝেই দেখা যায় আটপৌরে হাফ প্যান্ট ও টি-শার্টে হেঁটে যেতে। কখনও কমদামি স্কুটিতে এলাকা চষে বেড়ান। গত মঙ্গলবার এ হেন অরিজিৎ হঠাৎ হাজির ছোটবেলার বন্ধু শঙ্কর মণ্ডলের নার্সিং কলেজে। তার পর জানা গেল তাঁর নতুন উদ্যোগের কথা।
শুধু সঙ্গীতের মাঝে নিজেকে আবদ্ধ না রেখে বৃহত্তর মানবসেবায় অংশ নিতে চান তিনি। বোঝেন শিক্ষার গুরুত্ব। তাই জন্মভূমি জিয়াগঞ্জকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অরিজিৎ খুলতে চান ইংরেজি শেখার জন্য কোচিং সেন্টার। যেখানে কোনও ফি লাগবে না। জিয়াগঞ্জে মোট আটটি বড় ঘরের প্রয়োজন গায়কের। এ জন্যই তাঁর ভরসা ছোটবেলার বন্ধু শঙ্করের উপর। জিয়াগঞ্জ থানার কাছেই রয়েছে একটি নার্সিং কলেজ। সেখানেই কোচিং সেন্টার খুলছেন অরিজিৎ।
অরিজিতের ওই কলেজে আসা নিয়ে শঙ্কর বলেন, ‘‘ভিডিয়ো মনিটরের সুবিধাযুক্ত বড় মাপের ঘর পছন্দ হয়েছে অরিজিতের। তাই ওখানেই কোচিং সেন্টার খুলতে চায় ও।” অন্য দিকে, মঙ্গলবার দুপুর একটা নাগাদ স্বভাবসিদ্ধ চালে অত্যন্ত সাদামাটা ভাবে নার্সিং কলেজে যান অরিজিৎ। কিন্তু গায়কের আগমনের খবর মুহূর্তের মধ্যে চাউর হয়ে যায়। তার পর হস্টেলে ভিড় জমতে শুরু করে।
অরিজিতের এই উদ্যোগ জানতে পেরে পরিচিত এবং এলাকাবাসীরা উচ্ছ্বসিত। তবে কেউ অবাক নন। তাঁরা তো অরিজিৎকে চেনেন এ ভাবেই। মাস তিনেক আগে নিজের ছোটবেলার স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন অরিজিৎ। তার পর থেকে স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নয়নে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অরিজিৎ স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর স্কুল যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। মাস খানেক আগে তো সবাইকে চমকে দিয়ে ইংরেজির দিদিমণির পায়ের কাছে বসে বাধ্য ছাত্রের মতো সময় কাটিয়েছেন অরিজিৎ। আসলে বলিউডের এত বড় একজন গায়ক হলেও অরিজিতের এই সাধারণত্ব ওঁকে ‘অসাধারণ’ করে তুলেছে।’’