প্রতিবাদ: পদ্মাবতী মুক্তির বিরুদ্ধে রাজপুতদের বিক্ষোভ। মুম্বইয়ে সোমবার। ছবি: রয়টার্স।
বিতর্কিত অংশ বাদ না দিলে যে ছবির মুক্তি আটকে দেওয়া হবে, পদ্মাবতী নিয়ে এ জাতীয় তোপ দেগেছেন অনেকেই। এ বার সেই তালিকায় যোগ হল মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের নাম। আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি জানালেন, সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিলেও তাঁর রাজ্যে পদ্মাবতী মুক্তি পাবে না। সোমবার বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘যে ছবিতে এক রাজপুত রানির ইতিহাসকে বিকৃত করে দেখানো হয়েছে, তা মেনে নেওয়া হবে না।’’
চিতোরগড়ের বিজেপি সাংসদ সি পি জোশীও একই ক্ষোভ নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন। দাবি করেছেন, মেবারের রাজপরিবার এবং ইতিহাসবিদদের সম্মতি না নিয়ে যেন পদ্মাবতী মুক্তি না পায়।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে থেকে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার, গুজরাতে বিজেপি সরকার থেকে উমা ভারতীর মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী— করণী সেনার পদ্মাবতী-বিরোধী আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন একের পর বিজেপি নেতা। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহও সঞ্জয় লীলা ভংসালীর ২০০ কোটির টাকার ছবি নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন। তবে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।
পদ্মাবতীর বিতর্কিত অংশ বাদ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন এম এল শর্মা নামে এক আইনজীবী। সেই আর্জি খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ আজ বলেন, ‘‘এখনও এ নিয়ে কথা বলার মতো সময় হয়নি।’’ বেঞ্চের বক্তব্য, ‘‘এখনও ‘সেন্টাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন’ (সিবিএফসি)-র ছাড়পত্র পায়নি ছবিটি। এখন হস্তক্ষেপ করা মানে, আগেই বিচার করা। তা ছাড়া কোনও বিধিবদ্ধ সংস্থার কাজে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’’
সিবিএফসি-র প্রধান প্রসূন জোশী আজ গোয়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (আইএফএফআই)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘কোনও তর্কাতর্কিতে যেতে চাইছি না আমরা। বরং আলোচনার মাধ্যমে বিতর্ক মেটানোর চেষ্টা করছি।’’
গত কালই শাবানা আজমি প্রসূন জোশীকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, ‘‘৬৩ দিন পরে যখন ছবি দেখানো হবে, তত দিনে গুজরাত ভোট মিটে যাবে। কেন এত গণ্ডগোল পাকানো হচ্ছে, আমরা বুঝি না?’’ চলচ্চিত্র উৎসব বয়কটেরও ডাক দিয়েছিলেন তিনি। যদিও আজ নির্বিঘ্নেই উদ্বোধন হয়। পদ্মাবতীর ‘বাহিনী’ও হয়তো শান্তির পথেই হাঁটতে চাইছেন। তাই চলচ্চিত্র উৎসবের অতিথি-তালিকায় ছিলেন শাহিদ কপূরও। ছবিতে তিনি রাজা রতন সিংহের চরিত্রে। শাহিদ বলেন, ‘‘এ ধরনের ছবি নিয়ে অনেক সময় জটিলতা তৈরি হয়। কিন্তু আমি আশাবাদী। এখন মাথা গরম করার সময় নয়। অনেকেই সেটা করছেন।’’
তবে যে ভাবে সহ-অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের মাথার দাম ঘোষণা করা হচ্ছে, তার কড়া নিন্দা করেছেন শাহিদ। বলেছেন, ‘‘যে কোনও হিংসাত্মক কথাবার্তা অত্যন্ত কুরুচিকর।’’ গত কাল প্রকাশ্যে এক জনসভায় হরিয়ানা বিজেপির মুখ্য মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর সুরজপাল আমু বলেন, ‘‘দীপিকার মাথা কাটতে পারলে ১০ কোটি টাকা পুরস্কার।’’ তার আগে মেরঠের এক নেতা ৫ কোটি হেঁকেছিলেন। করণী সেনার এক সদস্য দীপিকার নাক কাটারও হুমকি দেন। সুরজের মন্তব্য নিয়ে আজ হরিয়ানা পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। হরিয়ানা বিজেপিও শো-কজ করেছেন সুরজকে। বিজেপির দাবি, ওই নেতার মন্তব্যের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই।