শিকারা ছবির একটি দৃশ্য।
ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগে বিধু বিনোদ চোপড়া পরিচালিত ছবি ‘শিকারা: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব কাশ্মীরি পন্ডিতস’-এর বিরুদ্ধে জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। অবিলম্বে ওই ছবির মুক্তি স্থগিত করার আর্জি জানিয়ে মামলা করেছেন তিন ব্যক্তি।
কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জীবন নিয়ে ছবি ‘শিকারা’ মুক্তি পাওয়ার কথা শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তার আগেই বিতর্ক ও আইনি জটিলতার মুখে বিধু বিনোদের ছবি।মামলাকারীদের বক্তব্য, ছবির ট্রেলারে কাশ্মীরি মুসলিমদের নিষ্ঠুর এবং খল হিসেবে দেখানো হয়েছে। তাঁদের মতে, স্থানীয় মুসলিম এবং শিখ সম্প্রদায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কাশ্মীর ছেড়ে যাওয়ার ঘোর বিরোধী ছিল। তাঁরা অনুরোধ করেছিলেন কাশ্মীরি পন্ডিতেরা যেন কাশ্মীর ছেড়ে না যান। যাদের জন্য কাশ্মিরী পণ্ডিতেরা ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তারা সন্ত্রাসবাদী।
মামলাকারী মাজিদ হায়দারি, ইফতিকার মিসগার এবং ইরফান হাফিজের মতে, সন্ত্রাসবাদী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে গুলিয়ে ফেলেছেন পরিচালক। কাশ্মীরি পন্ডিতদের এই অবস্থার জন্য সমস্ত কাশ্মীরি মুসলমানকে দায়ী করা মোটেই উচিত নয়।
আরও পড়ুন: এক ভারতীয় পেসারে মজেছেন দিশা পাটানি!
পিটিশনেলেখা হয়েছে,ইচ্ছা করে এই সময়কেই ছবিটি মুক্তির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। এর পিছনে কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলেই আশঙ্কা মামলার আবেদনকারীদের। যাঁরা কোনওদিন কাশ্মীর যাননি, তাঁদের এই ছবির মাধ্যমে কাশ্মীরিদের সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ছবিটি নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই মঙ্গলবার টুইটারে একটি পোস্ট দেন পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া। তিনি লেখেন, “আমরা শুনেছি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ব্যাপারে আমার কাছে আর কোনও খবর নেই। যদিও প্রয়োজন হয় আমরা সেই মতো পদক্ষেপ করব।”এরই পাশাপাশি, সংবাদ মাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারেঅভিনেতা অনুপম খের বলেছেন, ‘‘১৯৯০-এর ১৯ জানুয়ারি কাশ্মীরের ইতিহাসে একটি কালো দিন।’’ ওই দিন প্রায় পাঁচ লক্ষ কাশ্মীরি পণ্ডিতকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ।
বিধুর টুইট
আরও পড়ুন- বিছানায় টেনে নিয়ে গিয়েছিল মাস্টারমশাই, ফের অভিযুক্ত গণেশ আচার্য
পরিচালকের পাশে দাঁড়িয়ে ‘শিকারা’র চিত্রনাট্যকার অভিজাত যোশী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এই ছবিটি তাঁর ফেলে আসা ঘরের প্রতি চোপড়ার শ্রদ্ধার্ঘ।” বিধু নিজেও কাশ্মীরি পন্ডিত।১৯৯০-এ কাশ্মীরের টালমাটাল পরিস্থিতিতে ঘর ছাড়তে হয়েছিল তাঁকেও।
আর সেই ঘটনাই উঠে এসেছে তাঁর ছবিতে, এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি। তবে, শুধুমাত্র কাশ্মীরি পন্ডিতদের দুঃখ-দুর্দশার কথাই ব্যক্ত করেননি বিধু। এক অনুষ্ঠানে বিধু বলেছিলেন, “কাশ্মীরি পন্ডিতরা এত কিছুর পরেও কী ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন সেই নিয়েই আমার ছবিটি।”