মনে দুঃখ, দিলওয়ালের আস্থা তবু ভালবাসাতেই

এই সাংবাদিক বৈঠক যখন চলছে, ইস্টবেঙ্গল মাঠে তখন খোলা আকাশের নীচে উপচে যাচ্ছে ভিড়। এতটাই যে, রাত আটটার পরে পুলিশ আর কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। কারণ, ইতিমধ্যেই দশ জনের জায়গায় তিরিশ জন বসে। ‘‘এই পাগলামির নামই শাহরুখ খান। পাঁচ হাজার লোক ঠান্ডায় ফিরে গিয়েছে। তা-ও কুড়ি হাজার লোক বসে,’’ বললেন পুলিশের বড় কর্তা।

Advertisement

ইন্দ্রনীল রায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:০৪
Share:

মঞ্চে তখন শাহরুখ-কাজল জাদু। মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। —সুব্রতকুমার মণ্ডল

তিনি রসিক। ‘‘বাঙালি মেয়েরা সাজতে এত দেরি করে!’’ তিনি সিরিয়াস। ‘‘আমি যা বলেছিলাম তার ভুল মানে করা হল। সেটা ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হল।’’ তিনি রোম্যান্সের রাজা। ‘‘সব থেকে বড় দিলওয়ালে, এই
শহর, কলকাতা।’’

Advertisement

তিনি বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। তাঁর জন্য ববি হাকিমের হাত দিয়ে মাছভাজা পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সব জায়গায় দেরিতে পৌঁছন। মঙ্গলবারও সাংবাদিক সম্মেলনে ঢুকলেন পাক্কা দেড় ঘণ্টা দেরিতে। কিন্তু সবার উপরে তিনি শাহরুখ। শাহরুখ ‘দিলওয়ালে’ খান।

এক দিনের ঝটিকা সফরে কলকাতায় এসেছিলেন। সঙ্গে কাজল। ‘রং দে তু মোহে গেরুয়া...’র জুটি মাতিয়ে রাখলেন ২০ হাজার দর্শক ঠাসা ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের মাঠ। তার আগে শহরের পাঁচতারা হোটেলে ছিল সাংবাদিক বৈঠক। দেরি করে ঢুকেই হাসতে হাসতে শাহরুখ বললেন, ‘‘আমার জন্য কিন্তু দেরি হয়নি। বাঙালি মেয়েরা (কাজলের দিকে তাকিয়ে) সাজতে এত দেরি করে!’’ বলরুম তখন ঝলসে যাচ্ছে রাজ-সিমরনের রসায়নে। শাহরুখের কথা শুনে কাজলও হাসছেন। তার মধ্যেই শাহরুখ বলে উঠলেন ‘‘বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই কাজলকে বললাম, কলকাতায় নামলে আমাকে সবাই খানদাদা বলে ডাকে। সেই শুনে সে কী হাসি কাজলের!’’

Advertisement

এই সাংবাদিক বৈঠক যখন চলছে, ইস্টবেঙ্গল মাঠে তখন খোলা আকাশের নীচে উপচে যাচ্ছে ভিড়। এতটাই যে, রাত আটটার পরে পুলিশ আর কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। কারণ, ইতিমধ্যেই দশ জনের জায়গায় তিরিশ জন বসে। ‘‘এই পাগলামির নামই শাহরুখ খান। পাঁচ হাজার লোক ঠান্ডায় ফিরে গিয়েছে। তা-ও কুড়ি হাজার লোক বসে,’’ বললেন পুলিশের বড় কর্তা।

এত উন্মাদনার মধ্যেও অসহিষ্ণুতার প্রসঙ্গ কিন্তু পিছু ছাড়ল না। সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন ছুটে এল, অসহিষ্ণুতা বিতর্ক সত্ত্বেও লোকে দেখছে ‘দিলওয়ালে’। কেমন লাগছে আপনার? উত্তর দিলেন, ‘‘খুব ভাল লাগছে। কিন্তু জানেন, আমি মনে মনে খুব দুঃখিত। আই অ্যাম জেনুইনলি স্যাড।’’ কেন? ‘‘আমার আজও এটা ভেবে খারাপ লাগে যে, আমি যা বলেছিলাম তার ভুল মানে করা হল। ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করা হল,’’ এক নিঃশ্বাসে বলেন শাহরুখ। তার পর নিজেই যোগ করলেন, ‘‘দেখলাম টুইটার আর হোয়াটসঅ্যাপেও আমাকে আক্রমণ করা হচ্ছে। আমি তো সম্মানের সঙ্গে ২৫ বছর কাজ করছি এ দেশে। এ রকম ভাবে যে আমার কথার মানে করা হবে এটা ভেবে এবং দেখে আমি সত্যিই স্তম্ভিত। পাশাপাশি তাও যে মানুষ ছবিটাকে ভালবেসেছে, সেটাই আমার মধ্যে আশা জাগায়।’’ শাহরুখকে বেশ গম্ভীর দেখায় এ বার। নির্ভয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘‘আমি ছবির প্রচারে এসেছি। এ রকম একটা প্ল্যাটফর্মে অত সিরিয়াস আলোচনা করতে চাই না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement