সায়নী ঘোষ।
‘আমরা তো আর ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির সুরক্ষা পাব না। তাই নিজেদেরকেই এরকম কুৎসিত মানসিকতার মানুষদের থেকে নিরাপদ রাখতে হবে।’ কঙ্গনা রানাউতের নাম না করেই কটাক্ষ করলেন টলিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ।
বুধবার সকালে শ্যুটে বেরিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন সায়নী। নিজের একটি ছবি। ক্যাপশনে লেখা, ‘জাস্ট ঘুম থেকে উঠে কাজে যাচ্ছি। অনেক চাপ আজকে। একটু মোটিভেট করুন তো।’ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, তাঁর অনুরাগীদের সঙ্গে বাক্যালাপ করা। উদ্দেশ্য পূরণ হল না, তা নয়। কিন্তু সঙ্গে অনলাইন হেনস্থার শিকারও হলেন তিনি। সায়নীর শরীর নিয়ে কুৎসিত মন্তব্য করল এক নেটাগরিক। মুখের উপর জবাব দিতে ছাড়েননি অভিনেত্রী। সেই প্রসঙ্গেই আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন সায়নী।
‘এরকম কুমন্তব্য তো মাঝে মধ্যেই পাতে পড়ে। কী ভাবে উত্তর দেওয়াটা ঠিক বলে মনে হয়? আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা মনে হয়েছে?’
‘আমি একাধিক বার ভেবেছি যে উত্তরই দেব না। এত খারাপ খারাপ কথা যে মনে হয় উত্তর দিয়ে নিজের সময় নষ্ট করব না। কিন্তু আবার এটাও ভেবে দেখেছি, একটা উত্তর দেওয়া উচিত। না হলে এটা উত্তরোত্তর বেড়েই চলবে। আমার পেজে এসে নোংরামি করছে। তাতে আমার পেজই ময়লা হচ্ছে। হতে দেব না সেটা। তবে হ্যাঁ, কখনও ওই মানুষগুলোর স্তরে নামব না। তার আরেকটা বড় কারণ, আমার অনুরাগীরাই আমাকে ‘আমি’ বানিয়েছে। তাই কয়েকটা খারাপ লোকের মানসিকতা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চাই না। মাথা ঠাণ্ডা রেখে বিচার করব। আর আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে বলব, অতটা ভাবিনি কখনও। কিন্তু সে রকম প্রয়োজনে সেই পথ তো নিতেই হবে। আসলে কী বলুন তো, আমরা তো আর ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির সুরক্ষা পাব না। তাই নিজেদের কথা নিজেদেরই ভাবতে হবে।’
‘তারকারাই সবথেকে বেশি অনলাইন হেনস্থার শিকার হন কেন? কী উদ্দেশ্য এই মানুষগুলোর?’
‘সেটাই জানার চেষ্টা করি আমি। কী চলে এদের মাথার মধ্যে! প্রথমতো,এরা বিকৃত মনের মানুষ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমার কাছে এই সব ঘটনা শিক্ষা দেয়। আমাকে মানুষ বুঝতে সাহায্য করে। অভিনেতা অভিনেত্রীদের এরা কী চোখে দেখে, সেটা জানতে চাই আমি। একটা উদাহরণ দিই, এই পোস্টেই একজন লিখেছে, আপনি কি যুদ্ধে যান যে আপনাকে দেশের জন্য মোটিভেট করতে হবে? খুবই অদ্ভূত এই মন্তব্যটি। ধীরে ধীরে বুঝতে পারছি, আসলে এই মানুষগুলো চায় যে আমরা ঠিক সে ভাবেই থাকি, যে ভাবে আমাদের থাকতে বলা হবে। তার থেকে এ দিক-ও দিক হলেই অপছন্দ।’
আরও পড়ুন: ওর বিয়েতে ‘কন্যা সম্প্রদান’ হবে না, বার বার বলে দিয়েছে দেবলীনা
‘রাজনৈতিক পোস্ট হলে কি বিষয়টা বেশি হয়?’
‘একদমই। যেন মনে হয়, দেশের কোনও বিষয় নিয়ে লেখার কোনও অধিকার নেই অভিনেতা অভিনেত্রীদের। বক্তব্য রাখলে সহ্য করতে পারে না তারা। অভিনয় জগতে ঢুকলেই যেন আমার নাগরিক সত্তাটা উবে যাওয়া উচিত। কিন্তু তা বলে আমি রাজনৈতিক পোস্ট করা বন্ধ করব না। এবং আরেকটি মজার বিষয় হল, একদিন একটি রাজনৈতিক পোস্ট করলাম। খুব খারাপ খারাপ কথা লিখল কয়েক জন। পরের দিন একটি ন্যাকা পোস্ট দিলাম। সেখানে এসে প্রচুর ভালবাসা দেখিয়ে গেল। এগুলো ডি-কোড করতেই মজা লাগে আমার। তবে এটা মাথায় রাখতেই হবে যে এটা পাবলিক ফোরাম। তার থেকেও বড় কথা, এটা একটা গণতান্ত্রিক দেশ। দু’রকম জিনিসই আসবে। গ্রহণ করতে হবে। তার পর সামলে উত্তর দিতে হবে। আমার ডিজিটাল পরিবারে কয়েক জন খারাপ মানুষের বাস রয়েছেই। এটা মেনে নিয়ে চলব। কী আর করা যাবে।’
আরও পড়ুন: অমিতাভ থেকে অনুষ্কা, ফোর্বসের প্রভাবশালীদের তালিকায় ভারতীয়দের দখল