(বাঁ দিক থেকে) শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য, তূর্ণা দাশ, সঞ্জিতা মুখোপাধ্যায়, পৌলমী চট্টোপাধ্যায়, সীমা মুখোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রাতের দখল নিয়েছিলেন মেয়েরা। তার ঠিক ক’দিন পরেই মহিলাদের সুরক্ষার্থে রাজ্য সরকার কয়েকটি ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করেছিল। তার মধ্যে একটি— রাতের কাজে মহিলাদের যথাসম্ভব বাদ রাখতে হবে। এই নিয়ে নতুন করে শুরু হয় বিতর্ক। এই ব্যবস্থা মেয়েদের কর্মসংস্থানে প্রভাব ফেলবে বলে দাবি করেন অনেকে। প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি রাতে মেয়েরা কাজ করতে পারবে না? এই বিতর্কের জবাব দিতেই মঞ্চে সারা রাত কাটাতে চলেছেন বাংলার নাট্যকর্মীরা।
সীমা মুখোপাধ্যায়, বিলু দত্ত, বিমল চক্রবর্তী ও সৌরভ পালোধীর উদ্যোগে রাতের কলকাতায় চলবে শুধু মেয়েদের নাটক। ‘সারারাত মেয়েদের থিয়েটার’ নিয়ে নাট্যনির্দেশক সীমা মুখোপাধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে শোক জ্ঞাপন করা হয়েছিল। সে দিন আমরা কয়েক জন মিলে ঠিক করি, প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া গেলে, সারা রাত ধরে মেয়েদের নাটকের আয়োজন করা যাবে। আমরা নিজেদের কাজের মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে চেয়েছিলাম।”
সৌরভ পালোধী বলেন, “প্রশাসন রাতে মহিলাদের কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা বসাতে চলেছে। মূলত সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই মূলত আমাদের এই উদ্যোগ। মহিলা-পুরুষ, যে কোনও লিঙ্গের মানুষই যেন যে কোনও সময়ে স্বেচ্ছায় কাজ করতে পারেন। শুধু মঞ্চে নয়। পর্দার পিছনে মঞ্চসজ্জা, আলোকসজ্জা ইত্যাদির সঙ্গেও প্রচুর মহিলা যুক্ত থাকেন। এর আগেও রাতে থিয়েটার হয়েছে। এ বার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে এই আয়োজন করা হয়েছে।”
অ্যাকাডেমির প্রেক্ষাগৃহের বাইরেও মেয়েদের নাচ, গান, মূকাভিনয় চলবে। নাট্যশিল্পী পৌলমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সারা রাত ধরে মেয়েদের প্রতিবাদ চলবে। এর থেকে ভাল প্রতিবাদ আর কী হতে পারে! এর মাধ্যমেই আমরা বিচার চাইছি। কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের নিরাপত্তা চাইছি। তাই কর্মক্ষেত্র থেকেই মেয়েরা আজ রাতে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আমরা প্রতিবাদ করেই যাব, যত ক্ষণ না সুবিচার পাচ্ছি।”
শনিবার রাতে সীমা মুখোপাধ্যায়, তূর্ণা দাশ, সঞ্জিতা মুখোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য, পৌলমী চট্টোপাধ্যায়, ন্যান্সি ও প্রান্তিক চৌধুরীর নির্দেশনায় ছ’টি নাটক মঞ্চস্থ হবে। রাত ১ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত চলবে অনুষ্ঠান।