সঙ্ঘশ্রী সিংহ। ছবি সৌজন্য: সুরশ্রী।
বিস্ময়ে তাকিয়ে, উন্মুক্ত বাহু, স্পষ্ট বিভাজিকা। দৈহিক গঠন নিয়ে কটাক্ষকে এক লহমায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন সঙ্ঘশ্রী সিংহ। সাদা-কালো সাহসী ছবি পোস্ট করলেন সমাজমাধ্যমে। প্রথা ভাঙতেই কি এই পদক্ষেপ? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নে অভিনেত্রীর জবাব, “যে কোনও চেহারায় আকর্ষণীয় ও লাস্যময়ী হয়ে ওঠা যায়। জানি হয়তো কেউ কেউ এই ছবি দেখে আমাকে খারাপ বলবে, তবে তাতে আমার কিচ্ছু আসে-যায় না!”
বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নামীদামি চিত্রগ্রাহকদের সঙ্গে অভিনেত্রীদের রসায়ন থাকে। সেই রসায়নের খাতিরেই চিত্রগ্রাহকেরা অভিনেত্রীদের ছবি তোলেন। কিন্তু বহু চিত্রগ্রাহকের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলেও ছবির জন্য ডাক পান না সঙ্ঘশ্রী। একসঙ্গে ওঠা-বসা, আড্ডা-গল্প দেদার চলে, কিন্তু ফোটোশুটের ডাক পান না কখনও। তন্বী অভিনেত্রীদের ছবি তুলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন চিত্রগ্রাহকেরা।
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় মেধার পাশাপাশি সৌন্দর্যের মাপকাঠিও জরুরি। সমর্থন করেন? প্রশ্ন শুনে অভিনেত্রীর সটান জবাব, “সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হলে মেধার প্রয়োজন ঠিকই, কিন্তু কত সাইজ়ের বুক, কোমর, নিতম্ব হতে হবে সেটাও বলা থাকে। ঐশ্বর্যা, প্রিয়ঙ্কা, সুস্মিতা মেধার জেরেই খ্যাতনামী হয়ে উঠেছেন। বাকি বিজয়ীরা কোথায়? তারা কোথায় হারিয়ে গেল!”
‘প্লাস সাইজ় বিউটি’র ধারণায় বিশ্বাসী নন অভিনেত্রী। এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “প্লাস সাইজ় বিউটি আবার কী! সৌন্দর্যের আবার প্লাস-মাইনাসের মাপকাঠি কিসের! নিজের মা, বন্ধু বা প্রেমিককে কি এই চোখে দেখি আমরা? তা হলে বাকিদের ক্ষেত্রেও এই একই দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে না কেন!”
তিনি আরও বললেন, “আগে হাত কাটা পোশাক পরতে ইতস্তত বোধ করতাম। আমি জানতাম না এখন আমাদের সাইজ়ের ডিজ়াইনার পোশাক পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখি, বড় বড় ব্র্যান্ড প্লাস সাইজ় বলে ৩৪ কোমরের পোশাক বিক্রি করে।”
তবে তিনি মনে করেন, বর্তমানে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে সমাজ, সেখানে মোটা-রোগা, লম্বা-বেঁটে এই প্রচলিত সৌন্দর্যের মাপকাঠি ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। “৩৯ বছর বয়সে আমি ভাল থাকতে চাই। কে কী বলছে তাতে কানই দেব না! এত বছর তো সকলকে সন্তুষ্ট করে চললাম, কী হল তাতে!” ট্রোলিংয়ের ভয় নেই একেবারেই। তাঁর মতে, সমাজমাধ্যমে যারা ট্রোল করে তারা সকলের নজরে পড়ে যায়। কিন্তু নিজের পাড়াতেও ট্রোলিংয়ের শিকার হতে হয়, তার খবর রাখে ক’জন? প্রশ্ন তুললেন সঙ্ঘশ্রী।