ত্বরিতা-সৌরভ। ছবি সৌজন্য: সুতীর্থ বসু।
শুক্রবার মন দিয়ে বরযাত্রীকে অতিথি আপ্যায়নের পর রবিবার ছিল পালা বদলের দিন। কনেযাত্রী হয়ে ত্বরিতার শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ষোলআনা মজা করে এসেছি।
ত্বরিতা আর সৌরভের আত্মীয়রা এখন আমারও আত্মীয়
আমি রিসেপশনে একটু দেরি করেই পৌঁছেছি। কিন্তু যাওয়ার পর আড্ডায় একটুও ঘাটতি পড়েনি। সবার সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছি। এতদিন ধরে সৌরভ আর ত্বরিতাকে চিনি তাই ওদের আত্মীয়রা এখন আমার আত্মীয় হয়ে গিয়েছে! আমার তো ত্বরিতার স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গেও বন্ধুত্ব আছে।
রিসেপশনে সাধারণত নাচগান হয়। তবে সে দিন আমরা সে সব কিছু করিনি। বরং গল্প করেই সময় কেটেছে। আসলে এতদিন ধরে এত মজা করে মনে হচ্ছিল এ বার উৎসব শেষের পালা। এর পর তো আবার যে যার কাজে ব্যস্ত!
ত্বরিতা এবং সন্দীপ্তা।
কী সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল চারদিক!
ত্বরিতা-সৌরভের বিয়ে হয়েছিল ‘উত্তীর্ণ’তে। রিসেপশনও সেখানে হল। আগের দিনের থেকে কিছুটা আলাদা করে সাজানো হয়েছিল জায়গাটা। কাঠের ফ্রেমে রং-বেরঙের মাদুর দিয়ে পিলার গুলোতে আটকানো হয়েছিল। এ ছাড়াও রং-বেরঙের ফুল আর আলো তো ছিলই। শুধু তাকিয়ে দেখতে ইচ্ছা করছিল সব কিছু।
এই তো গেল ডেকরেশনের কথা। নতুন বর-কনেকেও দেখেও কিন্তু মন ভরে যাচ্ছিল। বিয়ের দিন তো ভাল লাগছিলই। কিন্তু সে দিন যেন চোখ ফেরানো যাচ্ছিল না! ত্বরিতাকে সোনালি রঙের লেহেঙ্গা-শাড়িতে কী মিষ্টি দেখাচ্ছিল! বউয়ের সঙ্গে রং মিলিয়ে বন্ধ-গলাতে সৌরভও এক্কেবারে রাজপুত্তুর! কত্ত ছবি তুললাম সবাই একসঙ্গে অথচ আমার ফোনে একটাও নেই!
অতিথিরা আড্ডায় মাতলেন।
নলেন গুড়ের সুফলে মুখের মধ্যে পিয়ানো বাজাচ্ছিল
আমি তো আগেই বলেছি বিয়েবাড়িতে সাজগোজের চেয়ে খাবারটাই আমার বেশি প্রিয়। রিসেপশনের হাইলাইটও কিন্তু খাওয়াদাওয়া ছিল। চিকেন লেগপিস, বেবি নান, মাটন কিমা ছিল শুরুতেই। এরপর পিস পোলাওয়ের সাথে কষা মাটন দিয়ে ব্যাপারটা জাস্ট জমে গিয়েছিল! কিন্তু বেস্ট ছিল লাউ পাতা দিয়ে ভেটকি পাতুরি। আহা কী খেলাম, জন্ম-জন্মান্তরে ভুলিব না! কলা পাতায় পাতুরি খেয়েছি কিন্তু এ রকম টেস্ট আগে কোনওদিন পাইনি।
ডেসার্টের কথা আর কী বলব। নলেন গুড়ের সুফলে আর কড়াই থেকে গরম গরম মালপোয়ার থেকে ভাল কম্বিনেশন ভাবা যায়! মালপোয়াটা মুখে দিতেই গলে যাচ্ছিল। আর সুফলে যেন মুখের মধ্যে পিয়ানো বাজাচ্ছিল।
এগুলোর সঙ্গেই ছোট্ট ছোট্ট হাড়িতে নলেন গুড়ের আইসক্রিম দিচ্ছিল। কী কিউট লাগছিল দেখতে! পাশেই একটা লোক পান নিয়ে বসেছিল। যদিও আমি পান খাই না, কিন্তু ব্যাপারটা দেখতে বেশ লাগছিল।
নতুন জীবনে পা রাখলেন ত্বরিতা-সৌরভ।
বিয়ের মতো রিসেপশনেও মথুরবাবু উপস্থিত ছিলেন
রিসেপশনেও অনেক চেনা মানুষের সঙ্গে দেখা হল। গৌরব আর দেবলীনা তো ছিলই। পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী এবং মদন মিত্রও এসেছিলেন। এ ছাড়াও স্বাগতা দি (মুখোপাধ্যায়), ‘ভজো গোবিন্দ’-র রোহণও (ভট্টাচার্য) ছিল। ওদের সবার সঙ্গে দেখা হল, কথা হল। সব সময় তো আর আড্ডার সুযোগ হয়ে ওঠে না।
ওদের নতুন জীবন শুরু। একসঙ্গে ভালবাসায় ভাল থাকুক ওরা।
ছবি: সুতীর্থ বসু