এক অনুরাগীর আকস্মিক মৃত্যু হতাশ করেছিল রূপমকে।
সেই কবে থেকেই গানের মাধ্যমে মানুষকে বেঁচে থাকার রসদ জুগিয়েছে ‘ফসিলস’ । এই বাংলা রক ব্যান্ডের অনুরাগী সংখ্যা যে ঈর্ষণীয়, তা সহজেই অনুমান করা যায়। রূপম ইসলাম এবং তাঁর সঙ্গীদের চাক্ষুষ করতে মুখিয়ে থাকেন শ্রোতারা। এমনকি অনেকেই আত্মহত্যার হুমকি দেন ব্যান্ডের লাইভ অনুষ্ঠানের টিকিট পেতে।
অনুরাগীদের এই উন্মাদনা আনন্দ দেয়, না বিচলিত করে? আনন্দবাজার অনলাইনের ‘অ-জানাকথা’য় প্রশ্নের মুখোমুখি রূপম। তাঁর উত্তর, “কেউ সত্যি সত্যি আত্মহত্যা করবেন বলে আমার মনে হয় না। এটুকু বাস্তববুদ্ধি তাঁর থাকবে। কারণ আত্মহত্যা করলে তো পুরোটা শেষ হয়ে গেল।” রূপমের আরও ব্যখ্যা, “আমরা তো মৃত্যুর গান গেয়েছি। আমি বলি, আমরা মৃত মানুষ। যাঁরা ‘ফসিলস’-এর গান পছন্দ করেন, সেই গানের সঙ্গে আত্মীয়তা অনুভব করেন, তাঁরা সবাই জানেন আমরা মৃত মানুষ। মৃত মানুষের আবার কী ভাবে মৃত্যু হবে? বরং সেই পরিস্থিতির সঙ্গে কী ভাবে যুঝতে হবে, কী ভাবে জীবন্ত হয়ে উঠতে হবে— লড়াইটা সেখানেই। কাজেই বলব, কেউ আত্মহত্যা করবেন না। তা হলে তো আর কোনও কনসার্টে আসার তাঁর সম্ভাবনা রইল না।”
আত্মহত্যা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অতীতের একটি ঘটনা মনে পড়ে গিয়েছে রূপমের। এক অনুরাগীর আকস্মিক মৃত্যু হতাশ করেছিল তাঁকে। রূপম বললেন, “একটি ছেলে এসে আমার পায়ে পড়েছিল। বলেছিল, ‘গুরু আমার সঙ্গে তোমার দেখা হয়ে গেল। আর আমার কিছু চাই না। এখন আমি মরে গেলেও সন্তুষ্ট। আমি খুশি।’ পর দিনই আমি খবর পাই সে আত্মহত্যা করেছিল।”
সেই অনুরাগী কেন আত্মহত্যা করেছিলেন, রূপম তা জানেন না। কিন্তু সেই প্রশ্ন আজও তাড়া করে তাঁকে। ভাবায়, বিব্রত করে। এই ধরনের মানসিক অসহায়তাকে নিজের গানে তুলে ধরেন রূপম। তাঁর বিশ্বাস, শ্রোতারাও আত্মীয়তা স্থাপন করেন তাঁর সৃষ্টির সঙ্গে। গানের মাধ্যমে এ ভাবেই তাঁদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার মধ্যে আনন্দ পান রূপম। খুঁজে নেন তৃপ্তির স্বাদ।