রূপম ইসলাম। —ফাইল চিত্র।
রূপম ইসলাম বড় না তাঁর গানের দল ‘ফসিলস’? অনুসন্ধিৎসার ইচ্ছে থেকে তর্ক জুড়লে উত্তর বহু দূর! তাই জবাব দেওয়ার দায় তুলে দেওয়া হয়েছিল রূপম ইসলামের হাতেই। বছরের প্রথম দিন আনন্দবাজার অনলাইনের ‘অ-জানাকথা’ লাইভ আড্ডায় আমন্ত্রিত বাংলার রকস্টার। নিজের পাশাপাশি নিজের সন্তানসম গানের দলকে নিয়ে কাঁটাছেড়া করতে বসে সাময়িক যেন থমকেছেন তিনিও। জানিয়েছেন, এ ভাবেও কেউ বড় বা ছোট হয় না! তার পরেই চলে গিয়েছেন বিস্তারিত আলোচনায়।
রূপমের দাবি, ‘ফসিলস’-এর উত্থান, অবদানকে এক কথায় বর্ণনা করা কঠিন। অনেকেই এসেছেন। চলেও গিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকেই ‘ফসিলস’কে সমৃদ্ধ করেছেন। উদাহরণ হিসেবে বলেছেন আদি দলের অন্যতম সদস্য অ্যালেনের কথা। যিনি চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন। স্টিফেন জড়িয়ে পড়েছিলেন মাদকের নেশায়। ফলে, রূপমকে নতুন দল গড়তে হয়েছিল। নতুন দলে পরে আবার যোগ দিয়েছিলেন পুরনোরা। ‘বাংলা রকার’-এর মতে, নতুন-পুরনোর সহবাসে গড়ে ওঠা এই ‘ফসিলস’ এতটাও জনপ্রিয় হত না যদি না সবাই তাঁদের ‘সেরা’টা দিতেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘ফসিলস’ দুই দেশের মধ্যে এক মাত্র বাংলা ব্যান্ড যে দল পুরোপুরি এক জন লেখক-গায়কের উপরে নির্ভরশীল!
এই প্রসঙ্গে উঠে আসে রূপমের ‘গুরু’স্থানীয় মাকসুদুল হকের কথাও। দর্শক-শ্রোতাদের তিনি জানান, মাকসুদুলও এমনই এক শিল্পী যাঁর ব্যান্ডে এক মাত্র তাঁর লেখা গানই গাওয়া হয়। রূপম মনে করিয়ে দেন, রক গানের পাশাপাশি বাউল বা লোকসঙ্গীত নিয়েও কাজ করেছেন তিনি। যেটা ‘ফসিলস’ করেনি। রূপমের দল শুধু তাঁর গানকেই আশ্রয় করে বেড়ে উঠেছে। এই প্রবণতা পাশ্চাত্যের হাতেগোনা কিছু ব্যান্ডের মধ্যে দেখা যায়। সেই অনুযায়ী দলে গায়ক-গীতিকার-সুরকার এবং জনসংযোগকারী এক জনই। অর্থাৎ, রূপম ইসলাম। ফলে, না চাইতেই কাজের নিরিখে ‘ফসিলস’-এর মধ্যমণি তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই দলের মধ্যে তাঁর গুরুত্ব বা প্রাধান্য বাকিদের থেকে একটু হলেও বেশি। তবে তিনি স্পষ্ট জানান, দলের জন্য তাঁর করা চারটে কাজের যে কোনও একটার সঙ্গে অন্য সদস্যের করা কাজের মধ্যে কোনও 'ছোট' বা 'বড়' বলে কিছু নেই।
শিল্পীর আরও বক্তব্য, রূপম ইসলাম মানে শুধুই ‘ফসিলস’ নয়। গানের দলের বাইরেও তিনি অনেক কিছু করেন। পত্রিকা সম্পাদনা, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার হয়ে কলম ধরা, উপন্যাস লেখা, বেতার-ছোট পর্দায় সঞ্চালনাও করেন। তার মধ্যেও বেশি প্রচারিত ‘ফসিলস’। তার ছায়ায় রূপমের বাকি পরিচয় যেন ম্লান। এই নিয়ে কোনও অভিমান? রক স্টারের মতে, ‘‘বাস্তবে আমরা একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী। কখনও আমি ‘ফসিলস’কে ছাপিয়ে গিয়েছি। কখনও আমায় ‘ফসিলস’। একই ভাবে, কখনও আমায় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। কখনও ২৫ ছুঁতে চলা আমার দলকে। ফলে, দিনের শেষে কোথাও গিয়ে অভিমান তো হয়ই।’’