পরমব্রতকে নিয়ে রুদ্রনীলের মন্তব্য
মাস দুই আগের কথা। অগস্টে ইনস্টাগ্রামে নিজের সাদা-কালো ছবি পোস্ট করেছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ। কাঁচা-পাকা চুল-দাড়ি। চোখে-মুখে যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে রাগ! অনুরাগীদের দাবি, ছবিতে বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরের তৎকালীন প্রার্থী পুরোদস্তুর রামগোপাল বর্মার ‘সরকার’! অভিনেতা সেই সময়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, তাঁর পরের ছবির প্রস্তুতি চলছে। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে ফের একান্ত সাক্ষাৎকার। রুদ্রনীল সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুললেন শাসক দলের বিরুদ্ধে। নতুন ছবির বিশেষ ‘লুক’-এর কথা স্বীকার করেও বললেন, ‘‘শুধুই পরের ছবির প্রস্তুতির জন্য নয়। শাসকদলের চাপে দীর্ঘ দিন কাজ না পেয়ে পেয়ে গালে এই পাকা দাড়ি।’’ তাঁর কথায়, শাসকদল ইদানীং যে ভাবে উপকারের নামে রাজনীতির নাগপাশে বেঁধে ফেলছে অভিনেতা-কলাকুশলীদের, তাতে খুব তাড়াতাড়ি ‘সিনে দাস’থেকে 'দলদাস'-এ পরিণত হতে চলেছে টলিউড। ঠিক সেখানেই রুদ্রনীলের ভয়- এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে টলিউডেরই ক্ষতি।
অভিনেতার সপাটে দাবি, শাসক দলের চাপে কাজ হারানোর ভয় থেকেই অভিনয় জগতের বহু মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে ভয় পান। স্রেফ পেটের তাগিদেই সমস্ত বিরোধী দল ত্যাগ করে আবার তাঁরা ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন শাসক শিবিরেই। জোড়াফুলের ঝান্ডা কাঁধে তাঁদের পথে দেখা যাচ্ছে। অভিনেতার অনুযোগ, ‘‘প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ হত এবং কাজের জায়গায় এই হিংসা বা ভয় যদি শাসকদল না ছড়াত, তা হলে আমার গালে এই চাপদাড়ির জন্ম হতো না।’’ লাইভ সাক্ষাৎকারে বিরোধী শিবিরের নেতা স্পষ্ট করে দেন, বাংলা ছবির দুনিয়ায় শাসকদল কী ভাবে, কতখানি মেরুকরণ ঘটিয়েছে। রুদ্রনীলের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এই মুহূর্তে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে নিজেকে প্রমাণিত করেছে। তাই এই দলের নেতা-অভিনেতাদের উপর চাপ বেশি। সেই কারণেই এই মুহূর্তে দলবদলের হিড়িক। অথচ রাজনীতি টলিউডকে জন্ম দেয়নি!’’
অভিনয় দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা পেতে শুরুতে প্রচণ্ড লড়াই করতে হয়েছে হাওড়ার ছেলেকে। রুদ্রনীল তখন মঞ্চাভিনেতা। ধীরে ধীরে অভিনয় জগতের সমস্ত মাধ্যমেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। এমন অভিনেতার রাজনীতিতে আসা কোন তাগিদে? এই প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন রুদ্রনীল। বলেছেন, ‘‘অনেকেই ফেসবুকে জানতে চান, অভিনয় নিয়েই তো ভাল ছিলাম। সে সব ছেড়ে আবার কেন রাজনীতিতে এলাম? তাঁদের সবাইকে বলি- স্বাধীনতার আগে থেকে পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, বিভিন্ন সময়ে শিল্পের দুনিয়ার বহু ব্যক্তিত্ব রাজনীতিতে এসেছেন। তাঁদের অবদানে, উপস্থিতিতে বহু রাজনৈতিক আন্দোলনকে সমৃদ্ধ করেছেন।’’