রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ঋতুপর্ণ ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস নিয়ে ছবি তৈরি করেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। তাঁর ছবিতে রবীন্দ্রনাথের গানও ধরা দিয়েছে অন্য রূপে। কবিগুরুকে নিয়ে নিজের ভাবনাও ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। পরিচালক মনে করতেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের একাকিত্বের কথা রবীন্দ্রনাথের লেখায় যেন লুকিয়ে রয়েছে। এই বিষয়টিকে এ বার তুলে ধরতে বর্ণমালা রায় ও দ্যুতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগ ‘রবিবারে ঋতু’।
রবিবার টপক্যাট সিসিইউ-তে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তারা। ঋতুপর্ণ ঘোষের চোখে রবীন্দ্রনাথ কেমন ছিলেন, তা বিভিন্ন ভাবে পর্দায় তুলে ধরা হবে অনুষ্ঠানে। থাকবে রবীন্দ্রনাথের কবিতাপাঠ, গানও। এ ছাড়া সাত রকমের খাবারের মাধ্যমেও ঋতুপর্ণের ছবির আবেগ ও ভাবনার প্রদর্শন করা হবে।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা বর্ণমালা বলেন, “ঋতুপর্ণ পর্দায় রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস নিয়ে কাজ করেছেন বলেই এই অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অন্য পরিচালকেরাও কাজ করেছেন। কিন্তু ঋতুপর্ণ কোথাও আলাদা। তিনি একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ ও সত্যজিৎ রায় তাঁর কাজে বড় অনুপ্রেরণা। এ-ও বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথ ওঁর একাকিত্বের সঙ্গী ছিলেন যাঁর সঙ্গে তিনি ঝগড়াও করতে পারতেন।”
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ঋতুপর্ণের একটি লেখা পড়া হবে। বর্ণমালা বলেন, “এই লেখাতেই একাকিত্বের কথা বলেছিলেন ঋতুপর্ণ। তবে যে কোনও মানুষের একাকিত্বের কথা তিনি বলেননি। প্রথার বাইরে থাকা মানুষের একাকিত্বের কথা বলেছিলেন। নিজের যৌন চেতনার ইঙ্গিত করেছিলেন। এই প্রান্তিক মানুষের কথা বলতে গিয়েই তিনি রবীন্দ্রনাথকে সঙ্গী হিসাবে মনে করতেন।”
বর্ণমালা যোগ করেন, “হেটেরোনরম্যাটিভ বা বাইনারি সমাজের বাঙালিরা রবীন্দ্রনাথকে নিজেদের সম্পত্তি হিসাবে ধরে রেখেছেন। একই ভাবে রবীন্দ্রনাথকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ যে একই ভাবে প্রান্তিক মানুষদের কথাও সমান ভাবেই বলেছিলেন, সেটাই ঋতুপর্ণের কাজে প্রকাশ পায়। অন্য লিঙ্গের মানুষও যে রবীন্দ্রনাথকে একই ভাবে পেতে পারেন, সেটা তুলে ধরার জন্যই এই উদ্যোগ।”
ঋতুপর্ণ ঘোষের এই লেখা পড়বেন সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। শিল্পীদের মধ্যে থাকছেন দীপাঞ্জন পাল, সায়ন মিত্র, মধুরিমা গুহ নিয়োগী, শ্রমণ সেন, সমালী চক্রবর্তী।