ঋত্বিকা সেন।
তিনি টলিউডের ‘পাশের বাড়ির মেয়ে’। ২০১৪ সালে রাজ চক্রবর্তীর ‘বরবাদ’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ঋত্বিকা সেন। মাত্র একটি ছবিতেই মুখ্য চরিত্র করে অপর্ণা সেনের ‘আরশি নগর’-এ দেবের বিপরীতে অভিনয়ের সুযোগ আসে। এর পর একাধিক বাণিজ্যিক ধারার ছবিতে কাজ করেছেন ঋত্বিকা। কিন্তু চলতি বছরে ‘মিস কল’ ছবির পর আর বিশেষ দেখা মেলেনি তাঁর। বরং দক্ষিণী ছবিতে মন দিয়েছেন বছর কুড়ির নায়িকা। তাঁর সমসাময়িকরা যেখানে চুটিয়ে বাংলা ছবি এবং ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন, ঋত্বিকা যেন সেখানে কিছুটা হিসেবি।
ইচ্ছা করেই কি স্রোতের বিপরীতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত? প্রশ্ন শুনেই হেসে উঠলেন ঋত্বিকা। বললেন, “আমি তো বাংলায় কাজ করতে চাই। মনের মতো কাজ পেলে নিশ্চয়ই করব। করোনার জন্য তো এখন সে ভাবে ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। আগে মানুষ বেঁচে উঠুক। কাজ পরে হবে।” ঋত্বিকার চারটি বাংলা ছবি আটকে গিয়েছে অতিমারির কারণে। এসেছে একাধিক ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের প্রস্তাব। কিন্তু ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে রাজি হননি ঋত্বিকা। তাঁর কথায়, “দর্শক আমাকে এখনও খুব একটা সাহসী চরিত্রে দেখেননি। আর এই সময়কার বেশির ভাগ সিরিজেই বেশ সাহসী, খোলামেলা দৃশ্য থাকে। আমি এখনও সে রকম কিছু করার কথা ভাবিনি।”
২০১০ সালে রবি কিনাগীর ‘ওয়ান্টেড’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঋত্বিকার। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তে ‘বৌ কথা কও’-এর ‘মিলি’ চরিত্রে জনপ্রিয়তা পান অভিনেত্রী। ইতিমধ্যেই দেব, জিৎ, অঙ্কুশ হাজরা, বনি সেনগুপ্তদের নায়িকার চরিত্রে অভিনয় সারা। ইন্ডাস্ট্রিতে এক দশকের বেশি সময় কাটিয়ে ফেললেও সেখানকার ঝাঁ চকচকে পেজ থ্রি পার্টিগুলিতে খুব বেশি দেখা মেলে না তাঁর। ইচ্ছে করেই কি ভিড় থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখেন ঋত্বিকা? অভিনেত্রীর উত্তর, “আসলে আমি পার্টি করতে খুব একটা পছন্দ করি না। পরিবারের মানুষজন, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতেই বেশি ভালবাসি।” ঋত্বিকা মনে করেন, এ সব না করেও শুধুমাত্র অভিনয় দক্ষতার জোরে কাজ পাওয়া সম্ভব। “বুম্বা আঙ্কল (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) আমাকে বলেছিলেন, শিল্পীদের সব সময় সব জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সেই কথাটাই আমি খুব মেনে চলি আর নিজের কাজটা করার চেষ্টা করি।” চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রচার করেছেন ঋত্বিকা। ছুটে গিয়েছেন রাজ্যের নানা প্রান্তে। কিন্তু প্রচারের আলো থেকে সরিয়ে রেখেছিলেন নিজেকে।
বাংলার পাশাপাশি একাধিক মালয়ালম, তামিল ছবিতে কাজ করছেন ঋত্বিকা। একই সঙ্গে বিবিএ পড়ছেন কলকাতার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে। প্রচারের আলোয় না থাকলেও ঋত্বিকা যে বেজায় ব্যস্ত, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।